ঢাকা, ৩১ মার্চ- মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল কাল দেশে ফিরেছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৯ মার্চ তাঁর মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার হলেও এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। মোশাররফের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আপাতত মস্তিষ্কের টিউমার অপসারণ করায় এখন বেশ ভালো আছেন। তাঁর স্ত্রী চৈতী ফারহানা এ প্রতিবেদককে বললেন, এখন অবস্থা বেশ ভালো। হাঁটাচলা করতে পারছে। কিন্তু কথা এখনো ঠিকঠাক বলতে পারছে না। একটু বেধে বেধে যাচ্ছে। সেলাই কাটা হয়েছে। তবে আশঙ্কামুক্ত কি না, এখনো বলার সময় হয়নি। চৈতীর কাছেই জানা গেল, আরেকটু হলেই বিরাট সর্বনাশ হয়ে যেত বাংলাদেশের হয়ে পাঁচ ওয়ানডে খেলা মোশাররফের। ১১২ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা ৩৭ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার গত বিপিএল থেকে মস্তিষ্কে নানা ধরনের সমস্যা অনুভব করছিলেন। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারছিলেন না, তাঁর আসলে কী হয়েছে। তিন-চার মাস বাংলাদেশের বেশ কয়েকজনের চিকিৎসকের কাছে ঘুরে ৭ মার্চ জানতে পারলেন, তাঁর মস্তিষ্কে টিউমার হয়েছে। চৈতী বললেন, এটা জানতে যদি আর দুই থেকে তিন দিন দেরি হতো, বড় সর্বনাশই হয়ে যেত মোশাররফের, সিঙ্গাপুরে এসে বায়োপসি রিপোর্টে আমরা জেনেছি, ওর টিউমারটা ক্যানসার আকার ধারণ করেনি। তবে যে টিউমার ধরা পড়েছে, সেটি খুব দ্রুত ছড়াচ্ছিল। এটা এতটাই দ্রুত ছড়াচ্ছিল, ৭ মার্চ আমরা জানলাম, টিউমারটা লো গ্রেডে আছে। ১৯ মার্চ অস্ত্রোপচার হলো। ১২ দিনের মধ্যে টিউমারটা গ্রেড এক থেকে গ্রেড তিনে চলে গেছে। আরেকটু দেরি হলেই বড় সর্বনাশ হয়ে যেত! গ্রেড চার হলে তো ক্যানসারেই রূপ নিত। শুরুতে বুঝিনি। বায়োপসি রিপোর্ট দেখে জেনেছি। আমাদের সৌভাগ্য, ১২ দিনের মধ্যে অস্ত্রোপচার করাতে পেরেছি। অস্ত্রোপচার শেষে কাল দেশে ফিরলেও মোশাররফকে আবারও সিঙ্গাপুর যেতে হবে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই। টিউমারের জীবাণু নির্মূল করতে তাঁকে নিতে হবে রেডিও আর কেমোথেরাপি। থেরাপি না নিলে টিউমার আবার ফিরে আসার আশঙ্কা আছে। চৈতী বললেন, অস্ত্রোপচার করে সরিয়ে ফেলা হয়েছে টিউমারটা। তবে যেটা বললাম, আগে যে টিউমারটা ছিল, ওটা খুব দ্রুত বাড়ছিল। রেডিওথেরাপি আর কেমোথেরাপির মধ্য দিয়ে যেতেই হবে। না হলে ওটা আবার ফিরে আসতে পারে। টিউমারটা এমনই, রেডিওথেরাপি-কেমোথেরাপি না দিলে ফিরে আসবে। আশা করি, ১৬ এপ্রিল থেকে আমরা থেরাপি শুরু করতে পারব। সিঙ্গাপুরেই করাব। যে রেডিওথেরাপিটা দেওয়া হবে, সেটা সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথেই আছে। কেমোথেরাপিটাও এখানে অনেক উন্নত। টানা দেড় মাস করতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন করে করতে হবে। এরপর তিন সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার শুরু করতে হবে। এভাবে ছয় মাস চলবে। জীবাণু একেবারে ধ্বংস করে দিতে হবে। আশা করি, ছয় মাসে থেরাপি দিলে সেটি হয়ে যাবে। টিউমারের অস্ত্রোপচারেই প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে মোশাররফের। অত্যাধুনিক ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল থেরাপিতে লাগবে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত, এ খবর শুনেই মোশাররফের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিসিবিসহ সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। অস্ত্রোপচারের পর সিঙ্গাপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেখা করেছেন মোশাররফের সঙ্গে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দীন চৌধুরী, বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান থেকে শুরু করে মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালসবাই নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন, নানাভাবে সহায়তা করছেন। এখনো আশঙ্কামুক্ত না হলেও সবার এ সমর্থন মোশাররফ ও তাঁর পরিবারকে আশাবাদী করছে। আর/০৮:১৪/৩১ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2JSCNQC
March 31, 2019 at 04:33PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন