অটোয়া, ২১ মার্চ- বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল কানাডার রাজধানী অটোয়া সফর করেছে। ছয় সদস্যের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি। ১৬ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত সফরকালে উপমন্ত্রী ১৮ মার্চ কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক দূত প্যাট্রিসিয়া ফুলারের (Ms Patricia Fuller) সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদল এবং কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাকালে বেগম হাবিবুন নাহার বাংলাদেশের অর্জিত আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন। বৈশ্বিক পরিবেশ পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের বিভিন্ন দিক ও বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বর্ণনা করে তিনি এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সহায়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্যাট্রিসিয়া ফুলার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কানাডা সরকার কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগ যেমন ২০১৫-২০২০ সময়কালে ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেন। তিনি কানাডার কুইবেক শহরে ২০১৮ সালের জুনে অনুষ্ঠিত জি-৭ আউটরিচ লিডারস সামিটে (G7 Outreach Leaders Summit) কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ এবং এই সম্মেলনে সমুদ্র, সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও সমুদ্র উপকূলে বসবাসকারী জনগণের সহায়তাসম্পর্কিত আলোচনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপসমূহ যেমন ক্লাইমেট অ্যান্ড ক্লিন এয়ার কোয়ালিশন-সিসিএসি-এ (Climate and Clean Air Coalition) যোগদান ও সরকারের উদ্যোগে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন ইত্যাদির প্রশংসা করেন। বৈঠক শেষে প্যাট্রিসিয়া ফুলার ও বেগম হাবিবুন নাহার স্মারক উপহার বিনিময় করেনবৈঠক শেষে প্যাট্রিসিয়া ফুলার ও বেগম হাবিবুন নাহার স্মারক উপহার বিনিময় করেনআলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল প্রযুক্তি হস্তান্তর ও অন্য সেক্টরের পাশাপাশি বাংলাদেশে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ও সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলায় এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (SDGs) অর্জনে কানাডা সরকারের সহযোগিতা কামনা করে। প্যাট্রিসিয়া ফুলার এ বিষয়ে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরবর্তী সময়ে কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সহকারী উপমন্ত্রী Ms. Isabelle Berard-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এক্সপার্ট সেশনে বায়ুদূষণ, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস, কানাডা সরকারের Carbon Pricing নীতি, জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল, সমুদ্র ও প্লাস্টিক, পলিথিনদূষণ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় দুই পক্ষ পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবিলায় প্যারিস সম্মেলনে গৃহীত সুপারিশ বাস্তবায়নে এবং এ ক্ষেত্রে বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। এদিন সন্ধ্যায় উপমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্যোগে মন্ট্রিয়ল শহরে আয়োজিত এক সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯ মার্চ বিকেলে উপমন্ত্রীসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের অটোয়ায় Operation Centre of Canada পরিদর্শন এবং সেখানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে উভয় দেশের অভিজ্ঞতা ও কর্মপন্থার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় হাইকমিশনের কাউন্সেলর মিয়া মো. মাইনুল কবির উপস্থিত ছিলেন। এদিন সন্ধ্যায় হাইকমিশনার তাঁর বাসভবনে উপমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজের আয়োজন করেন। নৈশভোজে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরাসহ কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের সাংসদ, পররাষ্ট্র ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যোগ দেন। এ ছাড়া উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার গত রোববার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে হাইকমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ২০ মার্চ উপমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গে আগত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা টরন্টোর উদ্দেশে অটোয়া ত্যাগ করেন। আর/০৮:১৪/২৩ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2CCZD8J
March 23, 2019 at 04:57PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন