লন্ডন, ২৭ মার্চ- বিগত প্রায় ১০০ বছর ধরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের বড় অংশটি বসবাস করে আসছে টাওয়ার হ্যামলেটসসহ পূর্ব লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায়। কোনও কোনও পরিবার সেখানে রয়েছে তিন প্রজন্ম ধরে। সরকারের রাইট টু বাই স্কিমের আওতায় কয়েক হাজার প্রবাসী বাঙালি বাড়িঘরও কিনেছিলেন। এমন অনেক সড়ক ছিল যেটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই পরিবারের কয়েক প্রজন্মের মানুষের আবাস। তবে বিগত এক দশক থেকে পাল্টাতে শুরু করেছে পরিস্থিতি। বসবাসের বিশাল ব্যয়ভার, পরিবারে সদস্য বৃদ্ধির কারণে বাড়িতে স্থান সংকুলান না হওয়া, আর ব্রিকি করতে গিয়ে বাড়ির বেশি দাম পাওয়ার কারণে পূর্ব লন্ডন ছাড়ছে সেখানকার বাংলাদেশিরা। এমন অবস্থায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, শতাব্দীকাল ধরে যুক্তরাজ্যে থাকা বাংলাদেশিদের শেকড় পূর্ব লন্ডন তাদের আদি ঠিকানায় রূপান্তরিত হস্তে আস্তে আস্তে। আশির দশকের মুক্তবাজারের উত্থানযুগে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি আবাসনে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের জন্য স্বপ্লমূল্যে বাড়ি ক্রয়ের সুযোগ তৈরি করে দেয় ব্রিটিশ সরকার। লন্ডনের অন্য বারাগুলোর টাওয়ার হ্যামলেটসের মতো বাংলাদেশি-অধ্যূষিত বারাগুলোতে মানুষকে বেশি সংখ্যক বাড়ি কিনতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত চালু থাকা স্কিমটির আওতায় বিপুল সংখ্যক মানুষ বাড়ি-ঘরের মালিক হয়েছেন। তবে বিগত এক দশক থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। বিভিন্ন কারণে পূর্ব লন্ডনকে আর বসবাসের জন্য সুবিধাজনক বিবেচনা করছে না বাংলাদেশিরা। যারা বিক্রি করছে না, তারা তাদের বাড়ি ভাড়া দিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। লন্ডনের ভূমি নিবন্ধন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কেবল টাওয়ার হ্যামলেটস-এ রাইট টু বাই স্কিমের আওতায় কেনা ২৯৩১ টি বাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলের কাছে কেনা ওইসব বাড়ি বিক্রির সময় গিয়ে গড়ে প্রতিটিতে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫২৯ পাউন্ড মুনাফা পেয়েছেন বিক্রেতারা। টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলছেন, তার বারায় ( সিটি কর্পোরেশন) রাইট টু বাই স্কিমের আওতায় বহু মানুষ বাড়িঘরের মালিক হয়েছিলেন। তবে এগুলো এখন সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এতে করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে লন্ডনে বসবাসকারীদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সেখানে কোনও বাড়িঘর থাকছে না। কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব ও লেখক ড. রেনু লুৎফা বুধবার বলেন, এই জনপদে একটা সময় অনেকটা জঙ্গল কেটে বসতি গড়ার মত করে বাংলাদেশিরা তাদের ভীত গড়েছিলেন। টাওয়ার হ্যামলেটস তাই বিলেতে বাংলাদেশিদের শেকড়-তূল্য। এখানে তাদের চেয়ে আর কেউ বেশি বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রাম করেনি। আলতাব আলী পার্ক, কবি নজরুল সেন্টারসহ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের প্রায় সমস্ত স্থাপনাও এখানে। তবে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো কোনও এক সময় বলবে, বিলেতে বাংলাদেশিদের আদি ঠিকানার নাম টাওয়ার হ্যামলেটস। ড. রেনু লুৎফা জানান, ঘটাওয়ার হ্যামলেটস সব সময়ই অভিবাসী সম্প্রদায়ের আশ্রয়স্থল। তবে বাঙালিরা সেখান থেকে চলে যাওয়া শুরু করার পর নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ ইহুদিরা সেখানে বাড়িঘর কিনছে। প্রবীন কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী বলেন, বিলেতে বাংলাদেশীদের শেকড় এই টাওয়ার হ্যামলেটস। গত কয়েক বছরে এখান থেকে বহু বাংলাদেশি অন্যত্র চলে গেছেন। এইচ/২১:১১/২৭ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2utCIIx
March 28, 2019 at 03:11AM
27 Mar 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top