শিলিগুড়ি, ২ মার্চঃ নকশালবাড়িতে শুধু সুনীল ঘোষই নয, তৃণমূল কংগ্রেসের আরও একাধিক নেতার বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠছে। সরকারি এবং ব্যক্তিগত জমির পাশাপাশি মেচি নদীর চর বিক্রি করেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিযে নিয়েছেন দলের ব্লক কমিটির প্রথমসারির নেতারা। অভিযোগ, এক ব্যক্তির কাছে মেচির চরে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি দেওয়ার কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে আর জমি দেননি ব্লকের এক তৃণমূল নেতা। বিষয়টি নিয়ে এবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। প্রশ্ন উঠেছে, দলের জেলা নেতৃত্ব সবকিছুই জানেন। তবুও শুধুমাত্র একজন নেতাকে দলের পদ থেকে সরানো হলেও বাকিরা বহাল তবিযতেই কাজ করে যাচ্ছেন। লোকসভা ভোটের আগে দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে জমি মাফিযাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওযার দাবি উঠেছে। তণমূলের মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র পাল জানিয়েছেন, দলীয় স্তরে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিযোগ পেলে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নকশালবাড়ির জমি মাফিযাদের দাপট নতুন কোনো ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্লকে তণমূল আশ্রিত কিছু জমির দালাল সরকারি জমি দখল করে সেগুলি প্লট হিসাবে লক্ষ লক্ষ টাকায বিক্রি শুরু করে। পরবর্তীতে শাসকদলের প্রথমসারির একাধিক নেতাও এই কারবারে শামিল হন। মণিরাম, হাতিঘিসা, নকশালবাড়ির মতো এলাকাগুলিতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য রাখা একরের পর একর জমি দখল করে সেখানে কাঠা হিসাবে প্লট তৈরি করে সেগুলি বিক্রি করছেন শাসকদলের নেতারা। বেশিরভাগ জমিই কিনছেন মণিপুর এবং অসম থেকে আসা লোকজন। সরকারি জমির পাশাপাশি ইদানীং মেচি নদীর চর বিক্রি শুরু হয়েছে। নকশালবাড়ি ব্লকের এক প্রান্ত দিযে যাওযা মেচি নদীর চর ব্লকের এক বড়ো মাপের নেতার দখলে রয়েছে। তিনিই ওই চর দফায় দফায় বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের দলীয় সূত্রেরই খবর, কযে মাস আগে ওই নেতা মণিপুরের এক ব্যবসাযীর কাছে মেচি নদীর চরে আট বিঘা জমি বিক্রির চুক্তি করেন। সেই মতো ওই ব্যক্তির কাছে ২৪ লক্ষ টাকাও নেওয়া হয়। কিন্তু আগাম পুরো টাকা নিয়ে নিলেও জমির দখল কিছুতেই পাচ্ছিলেন না ওই ব্যবসায়ী। বাধ্য হয়ে তিনি দলের অপর এক গোষ্ঠীকে বিষযটি জানান। সেই গোষ্ঠীর চাপে পড়ে অভিযুক্ত তণমূল নেতা পাঁচ বিঘা জমি ব্যবসাযীকে দিয়েছেন। কিন্তু পাশে আর জমি ফাঁকা না থাকায বাকি তিন বিঘা এখনও দখল পাননি ওই ব্যবসায়ী। পুরো ঘটনা নিযে তিনি নকশালবাড়ি থানা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে, দলের সমস্ত পদ থেকে সরিযে দেওযার পর থেকেই কার্যত ঘরে ঢুকে গিয়েছেন নকশালবাড়ির তৃণমূল নেতা সুনীল ঘোষ। জমি কেলেঙ্কারি সহ বেশ কিছু অভিযোগে এই নেতাকে গত বৃহস্পতিবার সমস্ত পদ থেকে সরিযে দেওযা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সরকারি জমি বিক্রি, জমি সংক্রান্ত বিষযে মানুষকে হুমকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাওযা সহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে ওই নেতার বিরুদ্ধে।
প্রতীকী ছবি
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2BVULeD
March 03, 2019 at 01:49PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন