ঢাকা, ০৮ মার্চ- নারী যত দিন থাকবে, নারী দিবসও তত দিন থাকবে। নারীরা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। খেলাধুলা, রাজনীতিসহ প্রায় সবক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে আছে। সুতরাং শুধু নারী দিবসেই নারীদের সম্মান করতে হবে এমনটা হতে পারে না। আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে এভাবেই বললেন বর্ষিয়ান অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসি মজুমদার। তিনি আরো বলেন, নারী-পুরুষ সবাই আমরা একই সমাজের বাসিন্দা। আমরা সবাই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কাজ করছি। চোখ মেলে তাকালেই দেখা যায় রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীরা দায়িত্ব পালন করছেন। এই সময়ে নারীদের আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। এখন নারী পুরুষ প্রায় সমান হয়ে গেছে। এভাবেই নারীরা আরো এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। একটা সময় আমাদের দেশে নারীদের অনেক কঠিন অনুশাসনের মধ্য দিয়ে চলতে হতো। এখনো নানা রকম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে যুদ্ধ করতে হয়। এই ক্ষেত্রে ফেরদৌসি মজুমদার একজন সফল নারী। এই সময়ের অনেকেই তাকে আদর্শ ভাবেন। তার এই সাফল্যের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এতদূর আসার গল্প আমি সব সময় বলে আসছি। সবাই জানেন কি পরিবেশ থেকে আমি এসেছি। আমার এতদূর আসার কথা নয়। তবুও অনেকের কারণে আসতে পেরেছি। সেখানে আমাকে অনেকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশ ছিল আমার। সেখান থেকে আমি বের হয়ে এসেছি। বড় মজার বিষয় হলো বিয়ের পর আমার সব কিছু অনুকূলে চলে আসে। বিয়ের প্রসঙ্গ ধরে সেই সময় শশুর বাড়ির পরিবেশ নিয়েও কথা বলেন তিনি। তার ভাষ্য, বিয়ের পর আমার স্বামী ও শশুর বাড়ির সবাই আমাকে সাপোর্ট দেওয়া শুরু করেন। ফলে আমাকে আর কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। এই পর্যায়ে আসার জন্য কার অবদান বেশি মনে করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার বড় ভাই শহীদ মুনির চৌধুরী আমাকে এই পথে নিয়ে আসেন। পরবর্তিতে আবদুল্লাহ আল মামুন আমাকে গড়ে তুলেছেন। টেলিভিশনে-মঞ্চে তিনি আমাকে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম নাটকে আমি অভিনয় করি। মঞ্চে এখনো নিয়মিত কাজ করছি। নতুন প্রজন্মের নারীদের উদ্দ্যেশে তার পরামর্শ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নারীদের নিয়ে আমার কোনো পরামর্শ নেই। আমি শুধু বিশ্বাস করি সফল হওয়ার জন্য ক্যারিয়ারে অবশ্যই সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। একদিনে কেউ কিছুই হতে পারে না। কেউ যদি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে সৎ থাকে। তাহলে সে অবশ্যই সফল হবে। অল্পতে অনেকে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান। এখানে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলায় এই অভিনেত্রীর মুক্তি শিরোনামের একটি নাটক মঞ্চায়ন হবে বলে জানান তিনি। এই সময়ে মঞ্চ নাটকের সার্বিক অবস্থা কেমন? ফেরদৌসি মজুমদার বলেন, মঞ্চ নাটকের নির্দিষ্ট কিছু দর্শক থাকে সব সময়। তবে এ মাধ্যমটিতে পৃষ্টপোষকতার প্রয়োজন। মঞ্চ নাটকের জন্য স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলো মঞ্চ নাটকের দিকে কম আগ্রহী। এই প্রবণতা তাদের দূর করতে হবে। আপনাদের সময় মঞ্চের প্রতি যে একনিষ্ঠতা ছিল, এখন নতুনদের মধ্যে কি তেমনটা দেখা যায়? উত্তরে ফেরদৌসি মজুমদার বলেন, নতুনদের দোষ নেই তো। পৃথিবীটা আগের মতো নেই। আমাদের সময় আমরা আনন্দের সঙ্গে কাজ করেছি। এখন একজন চাকরিবাকরি করে, তারপর আসে। আসলে সম্ভব হয় না। অভিনয়ে মহড়ার কোনো বিকল্প নেই। সেটা না হলে অভিনয়টা সেই মানের হয় না। আমরা টেলিভিশনের নাটকও করেছি এক মাসের মহড়া করে। এখন সবাই এটা হাস্যকর ভাববে। এখনো যদি আমি কিছু করি, চেষ্টা করি দু-চারবার মহড়া করে নিতে। এখনকার যারা, তারা চাইলেও সময় দিতে পারে না। এখন আমরা রাস্তাতেই থাকি চার ঘণ্টা। তাই সামাজিক জীবনও চলে গেছে আমাদের। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি, কারণ আমি ওই সময়ে কাজ করেছি যখন জীবনটা এত কঠিন ছিল না। এমএ/ ০৪:৫৫/ ০৮ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2UvmoTa
March 08, 2019 at 10:58PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top