মাদারিহাট, ১০ মার্চঃ বন ও সেচ দপ্তরের কোন্দলে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছেন আদিম টোটো জনজাতির মানুষ। টোটোপাড়ার ত্রাস হাউরি নদী। প্রতি বছর ভাঙনে প্রচুর কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যায। ছমাস আগে আলিপুরদুযার সেচ দপ্তর থেকে এই নদীর পাড়বাঁধ করার জন্য টেন্ডার করা হয়। প্রায় তিন কোটি টাকায় এক কিলোমিটার বাঁধ তৈরি করার কথা।
দপ্তরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার নীরজ সিং বলেন, বন দপ্তরের কাছে রয়্যালটির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তারা তা দিচ্ছে না। তিনি জানান, হাউরি রিভার বেড থেকে পাথর তুলে বাঁধ করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু, বন দপ্তর তাঁদের কোনো নদী বা জমি থেকে পাথর তোলার অনুমতি দেবে না বলে জানিয়েছে। ফলে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছেন না।
বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন। টোটোপাড়া, বল্লালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আশা বোমজানও এ ব্যাপারে বন দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হাউরি নদী যেভাবে প্রতি বছর বর্ষায় পাড় ভেঙে ধেয়ে আসছে তাতে টোটোপাড়ার অস্তিত্ব থাকবে কিনা সেবিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। বহু আন্দোলনের পর পাড়বাঁধের জন্য সেচ দপ্তর থেকে কাজের অনুমোদন পাওযা গিয়েছিল। কিন্তু বন দপ্তরের বাধায় ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছেন না।
টোটো কল্যাণ সমিতির সভাপতি অশোক টোটো এবং সম্পাদক বকুল টোটোর দাবি, বন দপ্তর নিজেদের খেযাল খুশিমতো এই নদী এলাকাকে তাদের বলে দাবি করছে। অথচ ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, নদীর এপারে দয়ামারা পর্যন্ত টোটোদের বসবাস ছিল। আর ওই জমি যে টোটোদের ছিল তার প্রমাণও রয়েছে। অথচ, বন দপ্তর একে নিজেদের এলাকা বলছে। ভৌগোলিক কারণে অন্য জায়গা থেকে পাথর এনেও কাজ করা সম্ভব নয়। এছাড়া, বন দপ্তর ট্রলি লাইনে রাস্তার কাজে বাধা দিয়েছে। এইজন্য প্রায় কোটি টাকার অনুমোদন পাওয়া কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।
টোটোদের পৃথিবীর অন্যতম আদিম জনজাতি বলা হয়ে থাকে। অথচ তাঁদের অস্তিত্ব রক্ষায সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তাঁরা। বর্ষার আগে বাঁধের কাজ না হলে টোটোপাড়ার হাসপাতাল লাইন, আয়রুংপা লাইন, কুনডি লাইন নদীগর্ভে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।
জলদাপাড়ার জাতীয় উদ্যানের বনাধিকারিক কুমার বিমল বলেন, বন দপ্তরের অনুমতি না নিয়ে সেচ দপ্তর টেন্ডার করতে পারে না। একটি রয়্যালটির অনুমোদন নিয়ে কত ট্রাক মাল পাচার করা হচ্ছে তার হিসেব নেই। সেচ দপ্তর অন্য জায়গা থেকে কেন পাথর এনে কাজ করাচ্ছে না সেবিষযে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2Hs7PvJ
March 10, 2019 at 04:29PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.