অস্ত্র বিক্রির টাকায় ফুর্তি মাফিয়াদের

রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি, ২৫ মার্চঃ হোটেলে ফুর্তির টাকা জোগাচ্ছে বিহারের আগ্নেযাস্ত্র। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছেন গোয়েন্দরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র এনে এখানে বিক্রি করে সেই টাকা ডান্সিং এবং সিংগিং বারে ওড়াচ্ছে বিহারের মাফিয়ারা। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে এই মাফিয়াদের আশ্রয় দিচ্ছেন কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। শিলিগুড়ি হয়ে এই আগ্নেয়াস্ত্র চলে যাচ্ছে ডুয়ার্স, সিকিম এবং দার্জিলিং পাহাড়েও।

বিহার, ঝাড়খণ্ড এলাকা থেকে শিলিগুড়ি শহরে প্রচুর গাড়ি প্রতিদিনই আসে। সবচেয়ে বেশি গাড়ি শহরে ঢোকে শনিবার বিকেলের পরে। সূত্রের খবর, এই গাড়িতে করেই বিহারের মাফিয়াদের একাংশ শহরে এসে আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার করছে। এই কারবারে শিলিগুড়িরও একটি চক্র জড়িত রয়েছে। বাংলা-বিহারের এই মিলিত চক্রই এখানে ঢালাও আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করছে। শহরের প্রধাননগর, গুরুংবস্তি, জংশন, মাল্লাগুড়ি, সুপার মার্কেট, নিয়ন্ত্রিত বাজারের পিছনের দিকের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে এই চক্রের লোকজন।

সন্ধ্যার পরে শহরের বেশ কিছু হোটেলে এই কারবারিদের আনাগোনা শুরু হয়। সেখানেই আসে বিহারের মাফিয়ারাও। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিহারের মুঙ্গের, বেগুসরাই, রাজমহল এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র শিলিগুড়িতে আসছে। কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বেশি? সূত্রের খবর, ছঘড়া, পাইপগান, কার্বাইন, নাইন এমএম পিস্তলই এখানে বেশি বিক্রি হয়।

এরই সঙ্গে চাহিদা রয়েছে গুলির ম্যাগাজিনেরও। আগ্নেযাস্ত্রগুলি ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর ম্যাগাজিনের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা। পুলিশ এবং গোয়েন্দদের সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিহারে মদ বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সেখানকার ব্যবসায়ীদের একটা বড়ো অংশ আমোদপ্রমোদের জন্য শিলিগুড়িতে আসা শুরু করেছেন। এঁদের মধ্যে অস্ত্রকারবারিও রয়েছেন। প্রতিদিনই বিহার এবং ঝাড়খণ্ড নম্বরের গাড়িতে চেপে ওই রাজ্যের লোকজন এখানে আসছেন।

তবে, শনিবার সবচেয়ে বেশি ভিড় করে মাফিয়ারা। এই মাফিয়ারা হোটেলে নাচ, গান আর মদের নেশায় ফুর্তি করার ফাঁকে সেখানেই আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারও করছে। ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত শিলিগুড়ির কারবারিদের কাছে অস্ত্রের ক্যাটালগ থাকছে। সেই ক্যাটালগ দেখিয়ে প্রথমে গ্রাহকদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়। এর পর সামনাসামনি বা ফোনে ফোনেই অস্ত্রের বুকিংও হয়ে যায়। বুকিং হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ে অস্ত্র জায়গামতো গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এই মাফিয়ারা অস্ত্র বিক্রি করে সেই টাকাতেই ফুর্তি করছে বলেও খবর রয়েছে। আবার এখানে এসে কোনো সমস্যায় পড়লে বা পুলিশের ধরপাকড়ের আভাস পেলেই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে চলে যায় মাফিয়ারা। আবার শিলিগুড়ি বা সংলগ্ন এলাকায় কোনো অপরাধমূলক কাজ করে বিহারে গিয়ে ওই মাফিয়াদের কাছেই আশ্রয় নেয় এই এলাকার দুষ্কৃতীরা।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2HRH2Jw

March 25, 2019 at 03:06PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top