টরন্টো, ২৫ মার্চ- আজ সোমবার (২৫ মার্চ) কানাডায় অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নুর চৌধুরীর বর্তমান স্টেটাস সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ফেডারেল আদালতে দায়ের করা একটি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিচারপতি ওরেলির এজলাসে সকাল সাড়ে নটায় শুনানিটি অনুষ্ঠিত হয় এবং চলে প্রায় দুপুর ১টা পর্যন্ত। এ সময়ে তিন পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তি তর্ক শেষে বিচারপতি ওরেলি জানান, তিনি তার সিদ্ধান্ত পরে জানাবেন। বাংলাদেশ সরকার বনাম নূর চৌধুরী ও অ্যাটর্নী জেনারেল অব কানাডা এ মামলায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জন টেরি এবং সহযোগিতায় ছিলেন রায়ান লাক্স ও জনাথন সিলভার। অপরদিকে নূর চৌধুরীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন বারবারা জ্যাকম্যান এবং অ্যাটর্নী জেনারেল অব কানাডার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জেমস টড ও ভেরোনিকা চাম। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অটোয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্টদূত মিজানুর রহমান, কাউন্সিলর মাইনুল কবির মিয়া, ফার্ষ্ট সেক্রেটারি অপর্ণা রানী পাল, কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগ কানাডার সিনিওর সভাপতি সৈয়দ আব্দুল গফফার, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্স, অন্টারিও আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হাসানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকসহ বেশ কজন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। জানা যায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নুর চৌধুরী কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে একটি প্রি-রিমোভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট দরখাস্ত করে জানান, তাকে যদি বাংলাদেশে পাঠানো হয় তবে তার ফাঁসি হবে এবং সে কারণে তাকে কানাডায় থাকতে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু গত ১০ বছরে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস। ২০১৮ সালের জুন মাসে কানাডার ফেডারেল কোর্টে বাংলাদেশ এই বিষয়ে একটি রিট অব ম্যানডামাস দাখিল করে এবং কোর্টের কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট একটি সিদ্ধান্ত চায়। বাংলাদেশ চায় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস নুর চৌধুরীর দরখাস্ত গ্রহণ বা প্রত্যাখান যেকোনো একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক। যদি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস তার প্রি রিমোভাল অ্যাসেসমেন্ট রিস্ক আবেদন খারিজ করে দেয়, তাহলে তার ফেরত পাঠানোর পথে কোনো বাধা থাকবে না। অন্যদিকে যদি তার আবেদন গ্রহণ করে তাকে কানাডায় স্ট্যাটাস দেওয়া হয় তখন একজন মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, এই কারণ দেখিয়ে তাকে (নুর চৌধুরী) ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ আবার মামলা করতে পারবে। ১৯৯৯ সালে কানাডার একটি কোর্ট নুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী রাশিদা খানমের শরণার্থী সংক্রান্ত একটি আবেদন খারিজ করে তাকে বহিষ্কারের আদেশ দেয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে, ২০০৭ সালে নিম্ন আদালতের এই আদেশ বহাল রাখে উচ্চ আদালত এবং তাকে আবারো বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বিচার কার্য শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়। উচ্চ আদালত ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল মোট ১২ জনকে। দণ্ড কার্যকর হওয়া পাঁচ জন বাদে বাকিদের মধ্যে আজিজ পাশা মারা গেছেন বিদেশে; যদিও তার মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক আছে। আর আবদুর রশিদ, মোসলেম উদ্দিন, শরীফুল হক ডালিম, রাশেদ চৌধুরী, নুর চৌধুরী এবং আবদুল মাজেদ পলাতক। গত বছরের ১০ জুন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নূর চৌধুরী একজন আত্মস্বীকৃত খুনি, বাংলাদেশের আদালতে তিনি সাজাপ্রাপ্ত। একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে কানাডার উচিত একজন খুনির আদালতের সাজা কার্যকর করতে সহায়তা করা। জবাবে ট্রুডো শেখ হাসিনাকে বলেন, এ বিষয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছেন কানাডা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HDQEbv
March 26, 2019 at 11:03AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন