অসিত কর, আলিপুরদুয়ার, ১৭ মার্চঃ আলিপুরদুয়ার শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে কালজানি নদীর উপর বিকল্প সেতুর দাবি দীর্ঘদিনেও পূরণ না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিষয়টি আসন্ন লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের এই সমস্যা মেটানো হবে বলে আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বহু আশ্বাস দিলেও ভোট পেরিয়ে যাওয়ার পর তা কেউই মনে রাখেনি। সেতু না থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকাটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের আকারে অবস্থান করছে।
দ্বীপচর এলাকার পাশেই কোচবিহার জেলা রয়েছে। সেতু না থাকায় মানুষ অন্য পাড় থেকে ১০ কিমি রাস্তা ঘুরে খোল্টা ও বীরপাড়া হযে আলিপুরদুয়ার শহরে আসে। কালজানি নদীর উপর ট্রেন চলাচলের জন্য রেলের একটি লোহার সেতু রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুটির উপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে ইতিমধ্যেই জখম হয়েছেন। বেশকিছু প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। নদী পারাপারে আলিপুরদুয়ার পুরসভার তরফে একটি নৌকার ব্যবস্থা করা হলেও বর্ষার সময় চার মাস এখানে এই পরিসেবা বন্ধ থাকে। সেতু ছাড়াও এলাকায় রাস্তা, নিকাশি, শৌচালয়, ঘর বিলি নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কানু দাস জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই সমস্ত সমস্যা মেটাতে বহু আশ্বাস দিলেও আখেরে কোনো কাজই হয়নি। কানুবাবু বলেন, এবারে ভোটের প্রচারে এলে রাজনৈতিক দলের নেতাদের এ নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা মণিমালা সূত্রধর জানান, সেতু না থাকায় তিনি ছোটো মেয়েকে রোজ স্কুলে পাঠাতে পারেন না। তিনি বলেন, মেয়ে কেন স্কুলে যায় না তা জানতে কর্তৃপক্ষ নোটিশ পাঠিয়েছে। কিছুতেই তাদেরকে কারণ বুঝিয়ে পারছি না। আলিপুরদুয়ার গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী রত্না বর্মনের কথায়, প্রতিদিন নৌকায় করে স্কুলে যাই। বর্ষাকালে নদীতে জল বাড়লে, ঘুরপথে স্কুলে যেতে হয়।
দ্বীপচর জিএসএফপি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দিবাকর দাস জানান, প্রতিদিন শহর থেকে ১০ কিমি ঘুরপথে এখানে স্কুলে আসতে হয়। বিকল্প সেতুটি তৈরি হলে কোচবিহারের সঙ্গে যোগাযোগে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এলাকাবাসী হাবলু দাস, প্রসেনজিৎ মণ্ডলদের কথায়, বহু আশ্বাসেও আখেরে কোনো কাজ না হওযায় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। লোকসভা ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে তাঁরা জানান।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বামেদের পর বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আছে। কালজানি নদীর উপর বিকল্প সেতু নিয়ে যাবতীয় জবাবদিহি এই দুটি দলকেই করতে হবে। সিপিএম নেতা অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী সেতুর দাবি থাকলেও সমস্যা মেটাতে বাম আমলে কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হযনি। তৃণমূলকেই এর জবাবদিহি করতে হবে। তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, মানুষ বিরোধীদের বিশ্বাস করে না। পুরসভার তরফে বহু আগেই কালজানি নদীর উপর বিকল্প সেতুর দাবি নিয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাসিন্দারা আমাদের সঙ্গেই আছেন।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2TJAeow
March 17, 2019 at 02:28PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন