বাঁদরামি ঠেকাতে লাটাগুড়িতে নেটবন্দি মানুষ

শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি, ১২ মার্চঃ ঠিক যেন উলটপুরাণ! বুনোরা লোকালয়ে ঢুকে পড়লে তাদেরকে খাঁচাবন্দি করার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু বুনোদের ভয়ে খোদ মানুষই যদি নিজেদের খাঁচাবন্দি করে ফেলে? তা রীতিমতো চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতোই। লাটাগুড়িতে এমনই ঘটনা ঘটছে। এলাকায় বাঁদরের উৎপাত এতটাই বেড়ে গিয়েছে য়ে বাসিন্দাদের অনেকেই নিজেদের ঘরবাড়ির ফাঁকা অংশ নেটের জাল দিয়ে মুড়ে নিয়েছেন। যে হারে বাঁদর বাঁদরামি চালানো শুরু করেছে তাতে অনেকেই রাতের দিকে দরজা-জানালা পুরোপুরি বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এখনও কিছুটা ঠান্ডার রেশ রয়েছে। তারপর গরম পড়লে এভাবে দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমালে পরিস্থিতি রীতিমতো অসহনীয় হয়ে দাঁড়াবে বলে বাসিন্দারাই জানান। তাঁদের অভিযোগ, এ নিয়ে বহুবার বন দপ্তরের দ্বারস্থ হয়ে কোনো কাজের কাজই হয়নি। বন দপ্তরের গরুমারা সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জার অয়ন চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বেগে রয়েছি। তবে বিষয়টি বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জের অন্তর্গত বলে জানিয়ে অয়নবাবু বলেন, তাঁরা এ বিষয়ে উদ্যোগী হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।

গত কয়েক বছর ধরেই জঙ্গল লাগোযা লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েছের পূর্ব লাটাগুড়ি, স্টেশনপাড়া, বাজারপাড়া, নতুনপাড়ায় বাঁদরের বাঁদরামি বাড়ছে। চলতি বছরে তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁদরের পালের অত্যাচার বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁচেছে যে বেশিরভাগ দিনই বাসিন্দারা রান্না করা খাবারটুকু মুখে পর্যন্ত তুলতে পারছেন না। লাটাগুড়ির বাসিন্দা তথা মাল পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি মহুয়া গোপ জানান, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই বাঁদরের পাল দলে দলে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে আসছে। তারপর বাসিন্দাদের রান্নাঘরে হানাদারি চালাচ্ছে।

বাঁদরের আক্রমণে সম্প্রতি বেশ কয়েজন জখমও হয়েছেন। দিনকয়ে আগে লাটাগুড়ি স্টেশনপাড়ার বাসিন্দা শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে চার বছরের সন্তানকে নিয়ে শিখাদেবীর ছোটো মেয়ে এসেছিলেন। খেলতে খেলতে শিশুটি বাড়ির বাইরে বের হলে বাঁদরের পাল তার উপর চড়াও হয়। জখম শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। স্টেশনপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা কণিকা দাস, রিনা বিশ্বাস, অসিত দে প্রমুখ জানান, বাঁদরের অত্যাচারে তাঁদেরকে দিনভর বাড়িঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখত হচ্ছে। সামান্য সুযোগ পেলেই বাঁদরের দল ঘরে ঢুকে ঘরের খাবারদাবার সবই সাবাড় করে দিচ্ছে। অনেক সময় আসবাবপত্রও ভাঙচুর করছে। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে য়ে বাসিন্দাদের অনেকে বাড়িঘরের ফাঁকা অংশ নেট দিয়ে মুড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পোস্ট অফিসপাড়ার বাসিন্দা তথা লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি বরুণ সরকারের কথায়, বাঁদরের অত্যাচার এতটাই বেড়েছে যে এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

 

 



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2O2VLST

March 13, 2019 at 01:09PM
13 Mar 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top