দ্যা গ্লোবালনিউজ২৪ ডটকম :: সিলেট ২ ( বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের জাতীয়পার্টির সাবেক এমপি ইয়াহিয়া চৌধুরী এহিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের চাচাদের ভূমি আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। রোববার চাচা যুক্তরাজ্য প্রবাসী এ জে ড এম দিলোয়ার হোসেন চৌধুরী সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস গ্রামের বাসিন্দা এ জেড এম দিলোয়ার হোসেন চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ক্ষমতায় থাকাকালে ৬ চাচার ২০ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করে মৎস খামার গড়ে তুলেছেন। এহিয়ার আপন ভাই জেলা পরিষদের সদস্য সহল আল রাজির সন্ত্রাসী কর্মকা-ে পরিবার লজ্জায় পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রবাসী দিলোয়ার হোসেনকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকিতে আছেন বলে জানান। এছাড়া এহিয়া সংসদ সদস্য হওয়ার কারণে বিশেষ সুবিধা নিয়ে দখলকৃত জমি প্রদর্শন করে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকার ঋণ নিয়েছেন। এখন ব্যাংক ঠকানোর চিন্তায় আছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি প্রভাবশালী এহিয়া-রাজীর কবল থেকে আমাদের জমি উদ্ধারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপও কামনা করে তিনি বলেন, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী এহিয়া ও তার ভাই সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য সহল আল রাজী আমার সম্পর্কে ভাতিজা হন। এহিয়া সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাদের ক্ষমতার দৌরাত্ব্য দেখানো শুরু করে। এর অংশ হিসেবে তারা আমার ও আমার ৬ চাচার নামের প্রায় ২০ বিঘা জমি দখল করে নিয়ে সেখানে মৎস খামার গড়ে তুলেছে। অথচ এ জমির মধ্যে আট ভাগের একভাগের অর্ধেক অংশের মালিক তারা। আমরা প্রবাসে থাকায় আমাদের কোন অনুমতিও নেয়নি তারা। একপর্যায়ে খবর পেয়ে আমি দেশে ফিরে তাদের কাছে কৈফিয়ত চাইলে তারা আমার কথা আমলে না নিয়ে উল্টো নানাভাবে আমাকে হয়রানি করে আসছিল। এমতাবস্থায় আমরা তাদের কাছে জমির ধানের ক্ষতিপূরণ চাইলেও তারা তা উড়িয়ে দেয়। এভাবেই প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হয়েছে; কিন্তু আমরা তাদের কবল থেকে আমাদের জমি উদ্ধার করতে পারিনি। শুধু তাই নয়; দুগ্ধ খামার করার নাম করে এহিয়া ও তার ভাই আমার নামীয় আরও আড়াই বিঘা জমি দখল করে রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন ও সুনাম বৃদ্ধিতে আমরা প্রবাসীরা নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে গেলেও দেশের মাটিতে নানাপদে হয়রানির শিকার হচ্ছি। এহিয়া সংসদ সদস্য পদে শপথ নেওয়ার আগেই বাড়ির রাস্তা বড় করার নামে আমাদের অনুমতি ছাড়া কিছু জমি দখল করে নেয়। এর কিছুদিন পর সে মৎস খামারের নামে বাড়ির পাশের ওই জমিটুকুতে পুকুর খনন করলে আমি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসি। বিভিন্ন সময়ে তাদের সাথে এ ব্যাপারে দেন-দরবারও হয়েছে; যার সাক্ষী রয়েছেন স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু তারা জমি ছাড়া দূরের কথা উপরোন্ত আমাদের নানা ভাবে হুমকি ধমকিও দিয়ে এসেছে। আমি এ ব্যাপারে গত ফেব্র“য়ারিতে বিশ্বনাথ থানায় গেলে পুলিশ কর্মকর্তারা কাগজপত্র নিয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন; কিন্তু আমার পরিবারের মানসম্মানের কথা বিবেচনায় আমি অভিযোগ করিনি।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১৫ মার্চ ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা আমাদের অবজ্ঞা করে জমি ছাড়েনি। এমনকি জমি কখনও ছাড়বে না বলেও প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে। এমতাবস্থায় গত ২৩ মার্চ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার মৎস্য খামারের পুকুরের একপাশের বাঁধ কেটে দেয়; আর এর জন্য তারা আমাদের দোষারূপ করছেন। এমনকি আমাকে ফোন দিয়ে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও করছেন। অন্যথায় আমার বাড়িঘর এবং যানবাহন পুড়িয়ে ফেলার হুমকিও দিচ্ছন। বিষয়টির মধ্যস্থতার জন্য বিশ্বনাথ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম এবং দয়ামীরের জাপা নেতা সিদ্দিক আলী চেষ্টা করলেও তারা তাদের কথা মানেনি। এর জেরে ওইদিন বিকেলে এহিয়ার ভাই রাজীর নেতৃত্বে নগরীর টিভি গেইটের জাহেদসহ আটজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আমার খোঁজ করে। কিন্তু আমি শহরে থাকায় তারা সেখান থেকে ফিরে এসে শহরেও সম্ভাব্য একাধিক স্থানে আমার খোঁজ করেছে। তারা আমাকে হত্যা করে বস্তাবন্দি করা, গ্রামের বাড়ি তালা দিতে এবং গাড়ি পুড়াতেই সেখানে গিয়েছিল বলে আমি জানতে পেরেছি। এরপর থেকে আমি প্রাণনাশের শঙ্কায় রয়েছি। এ ব্যাপারে তিনি আইনী ব্যবস্থায় যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2JWmUsj
March 31, 2019 at 10:37PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন