কলকাতা, ০৬ মার্চ- কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের পাশে থাকবেন, তবে নরেন্দ্র মোদির পক্ষে থাকবেন না। মঙ্গলবার নবান্নয় দেয়া বক্তৃতায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী এসব কথা বলেন। এদিন দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেরও সমালোচনা করেন পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় সমালোচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কয়েকটি জাতীয় সংবাদমাধ্যম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আচরণ সমর্থন করছে। আমার মনে হয় তারা পরিস্থিতির শিকার। গণমাধ্যমের ভূমিকায় দেশের মানুষ সঠিক সংবাদ জানতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ সত্য ঘটনা জানতে পারছেন না। এটি খুবই দুঃখজনক। সত্যকে সাধারণ মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। আমি মানুষের কথা বলবই তাতে কেউ আমায় শাস্তি দিলেও আমার কিছু যায় আসে না। মানুষের জন্য কথা বলার অধিকার আছে, আর আমি সেই কাজটিই করে যাব। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জওয়ান নিহত হন। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। পুলওয়ামার ঘটনায় জওয়ানদের মৃত্যু নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি রাজনীতি করছে মন্তব্য করে মমতা বলেন, মোদি ও তার দল বিজেপি জওয়ানদের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। আমরা দেশের সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে। আমরা শান্তির পক্ষে। কিন্তু আমরা মোদি আর বিজেপির বিপক্ষে। মোদি দেশের জন্য লজ্জার । পুলওয়ামার ঘটনা কাজে লাগিয়ে কাউকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার সুযোগ দেয়া হবে না মন্তব্য করে মমতা বলেন, শহীদ জওয়ানদের মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে কাউকে নির্বাচনে জিততে দেয়া হবে না। সেনাদের আত্মত্যাগ দেশের জন্য। সেনাবাহিনী রাজনীতিতে আগ্রহ দেখায় না। যারা ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে, আমি তাদের আচরণের প্রতিবাদ করছি। প্রসঙ্গত এর আগেও মমতা জঙ্গি হামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এ ধরনের হামলা হলো কেন সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেসও এ হামলার পেছনে নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী রাজনীতিকে দুষছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েন বলেছেন, আমরা সবাই সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বাস করি। তাদের জন্য আমাদের গর্বও হয়। কিন্তু মোদি সরকারকে বিশেষ করে জুমলা জড়ি (মোদি ও অমিত শাহ) আমরা বিশ্বাস করি না। আপনারা কি আগাম পরিকল্পনা না করেই সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন? নাকি নির্বাচনে জেতাটাই আপনাদের একমাত্র লক্ষ্য। সে কারণেই কি নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের হামলায় নিহত জওয়ানদের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন- প্রশ্ন ডেরেকের। প্রসঙ্গত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হন। এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। ভারত এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে বলে দাবি করে আসছে। এ হামলার জেরে গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। হামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জঙ্গি নিহত হন বলে দাবি করেছে দেশটি। এখানেই থেমে নেই, গত বুধবার পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় দুই যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করেন পাকিস্তানি সেনারা। জবাবে ভারত পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করে। ঘটনাপ্রবাহে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দি হন দেশটির এক পাইলট। আর পাকিস্তান হারায় একটি যুদ্ধবিমান। ইসলামাবাদে আটক হয় ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন। পরে নানা নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার তাকে মুক্তি দেয় ইমরান খানের পাকিস্তান। তথ্যসূত্র: যুগান্তর আরএস/ ০৬ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2EGMKed
March 06, 2019 at 06:31PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন