জলপাইগুড়ি, ৫ মার্চ ঃ জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্বিতীয় দফাতেও বাতিল হল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও নভেম্বরের আগে এই নির্মাণকাজে হাত দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন জলপাইগুড়ি শহরকে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছে। মঙ্গলবার থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা থেকে উড়ানে বাগডোগরায় এসে সড়কপথে জলপাইগুড়ি পেঁছাবেন। শহরকে ধুলোমুক্ত করতে পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূর্ত দপ্তরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত হাইত বলেন, সার্কিট বেঞ্চের স্থাযী পরিকাঠামো তৈরির কাজটি নিঃসন্দেহে খুবই বড়ো প্রকল্প। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সবকিছু খতিযে দেখে তবেই একাজে হাত দেওয়া হবে। কাজটি নিখুঁতভাবে করতেই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। সামনেই চলতি অর্থবর্ষ শেষ হচ্ছে। এরপর লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষিত হলে আদর্শ নির্বাচনবিধি লাগু হবে। এসব মিটে যাওয়ার পরই সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজ নিযে এগোনো হবে বলে সুব্রতবাবু জানান।
পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরিতে রাজ্য সরকার পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চাযে সংলগ্ন কম্পোজিট কমপ্লেক্সে ৪৫ একর অধিগৃহীত জমিতে ৩৫২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। প্রথম দফায় স্থাযী পরিকাঠামোর বিভিন্ন কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে পৃথক ঠিকাদারদের দিয়ে করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু পূর্ত দপ্তর পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে। পরবর্তীতে এই পরিকাঠামোর পূর্ণাঙ্গ কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজনকেই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতো তিনটি বড়ো ঠিকাদারি সংস্থা টেন্ডারে অংশ নেয়। দপ্তর পরবর্তীতে এই টেন্ডার প্রক্রিয়াও বাতিল করেছে। পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, পূর্ত দপ্তর ইতিমধ্যেই ডিপিআর তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। কাজটি শেষ হলে ফের টেন্ডার ডাকা হবে। স্থাযী পরিকাঠামোয় কোর্টরুম, প্রধান বিচারপতি সহ ১৪ জন বিচারপতির বাংলো তৈরির পাশাপাশি লাইব্রেরি, সভাকক্ষ, বার অ্যাসোসিয়েশনের কক্ষ তৈরি হবে। এই স্থায়ী পরিকাঠামো নিয়ে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ সময়মতো চালু নিয়ে বিভিন্ন সময় সমস্যা হয়েছে। স্থায়ী পরিকাঠামো না হলে বিভিন্ন সমস্যা হবে বলে জানিয়ে বিচারপতিরা এখানে আসতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরবর্তীতে জেলাপরিষদের ডাকবাংলোয় অস্থাযী পরিকাঠামোর মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলে। আপাতত এখানেই সার্কিট বেঞ্চের কাজ চলবে।
সূত্রের খবর, রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিনই বাগডোগরা থেকে সড়কপথে জলপাইগুড়ি পৌঁছাবেন। সার্কিট হাউসে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। আপাতত ঠিক আছে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ৮ মার্চ বাগডোগরা হয়ে সড়কপথে জলপাইগুড়ি পৌঁছাবেন। তা না হলে তিনি অনুষ্ঠানের দিনই আসবেন। তিনি জুবিলি পার্ক সংলগ্ন প্রধান বিচারপতির নির্দিষ্ট বাংলোয় উঠবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগের দিন ৫টা বেজে ৪০ মিনিটে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে জলপাইগুড়ি পৌঁছাবেন। কিং সাহেবের ঘাট সংলগ্ন পূর্ত দপ্তরের ইনস্পেকশন বাংলোয় তাঁর রাতে থাকার কথা রয়েছে। পরদিন তিনি ১৮ কিলোমিটার মর্নিংওয়াক করবেন। এজন্য জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও ৮ মার্চ জলপাইগুড়ি পেঁছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমস্ত প্রস্তুতিপর্ব খতিযে দেখবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৩৫ জন বিচারপতি উপস্থিত থাকবেন। জেলা প্রশাসন তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য মন্ত্রীসভার বেশ কযেজন সদস্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2Hmfs77
March 06, 2019 at 01:28PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন