সেবক, ১০ মার্চঃ খবরের জেরে কয়েকদিন বন্ধ থাকার পরে ফের সেবকের তিস্তা নদী থেকে পাথর তোলা শুরু হয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নদীর চরে শতাধিক লরিতে বোল্ডার ভরতি করে ডুযার্স এবং বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে।
দিনের পর দিন এই বেআইনি কার্যকলাপ চললেও প্রশাসন পুরোপুরি নির্বিকার। সবচেয়ে বড়ো কথা, সেবক পুলিশ ফাঁড়ির পিছনেই তিস্তা নদীর চর। সেখান থেকেই প্রতিদিন এভাবে পাথর তোলা হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক নিবীল ঈশ্বরারি বলেন, সেবকে তো নদী থেকে পাথর তোলার কোনো রয়্যালটি নেই। অভিযোগ পেয়ে এর আগে আমরা একবার এই কারবার বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু আবার শুরু হয়েছে? আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। জেলা আধিকারিক এই মন্তব্য করলেও অভিযোগ উঠেছে, একাধিক সরকারি দপ্তরের প্রচ্ছন্ন মদতেই দিনের পর দিন সেবকে এই কারবার চলছে। সময়মতো সব জায়গায় মাসোহারা পৌঁছে যায়। যার ফলে সবকিছু দেখেও কেউই কিছু দেখেন না।
বিনা অনুমতিতে সেবকের তিস্তা নদী থেকে প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি নামিয়ে বোল্ডার তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন চিত্র সেবকের স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে প্রতিদিন সেখানে ঘুরতে যাওয়া লোকজন সবাই দেখতে পান। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে পাহাড়ি তিস্তা থেকে বোল্ডার তুলে নেওয়ার কোনো অনুমতিই নেই। এই সংক্রান্ত খবর গত ১৫ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এ প্রকাশিত হয়। খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রশাসনকে কিছুটা নড়েচড়ে বসতে দেখা গিয়েছিল। যার জেরে কয়েকদিন তিস্তা নদীতে কোনো লরি নামিয়ে বোল্ডার তুলতে দেখা যাযনি। কিন্তু শনিবার গিয়ে দেখা গেল, সেবকের রেলসেতুর নীচ থেকে শুরু করে গোটা বাজারের পিছনের চর এমনকি পুলিশ ফাঁড়ির পিছনের অংশেও তিস্তার চরে লরি নামিয়ে বোল্ডার গাড়িতে বোঝাই করা হচ্ছে।
নদীর এপারের পাশাপাশি ওপারেও রীতিমতো গাড়িতে বোল্ডার বোঝাই করা হচ্ছে। অথচ সেখানেই আবার রাজ্য সরকার নদীর ভাঙন আটকাতে কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করছে। প্রশ্ন উঠেছে, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে দিনের আলোয় তিস্তা থেকে পাথর তোলা হলেও প্রশাসনের কারও নজরে পড়ছে না কেন? পুলিশই বা কীভাবে চুপচাপ বসে রয়েছে? সূত্রের খবর, ডুয়ার্সের ঘিস নদীর রয়্যালটি দেখিয়ে তিস্তা থেকে বোল্ডার তোলা হচ্ছে। যে মাফিয়ারা এখান থেকে প্রতিদিন বোল্ডার তুলছে, তাদের সঙ্গে পুলিশ সহ প্রশাসনের অনেক দপ্তরেরই যোগাযোগ রয়েছে। নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে তারা এই কারবার করে।
কার্সিযাংয়ের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পিনাকী দত্ত বলেন, আমরা মাঝে বেশ কিছু গাড়িকে ধরে মামলা করেছি। আসলে নির্বাচনের জন্য সেবক থেকে ফোর্স তুলে অন্য ফাঁড়িতে পাঠাতে হয়েছে। ফাঁড়িতে বর্তমানে কম ফোর্স থাকায় সবদিক সামাল দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবুও আমরা বিষয়টি দেখছি।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2UskRgw
March 10, 2019 at 04:19PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন