ঢাকা, ২৪ মার্চ- প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ আর নেই। শনিবার ভোর রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শাহনাজ রহমত উল্লাহ প্রায় সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগীতাঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর কণ্ঠে এদেশের মানুষ শুনে এসেছেন কালজয়ী গান একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়, এক নদী রক্ত পেরিয়ে, আমার দেশের মাটির গন্ধে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে আমায় বল, সাগরের তীর থেকে, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, খোলা জানালা, পারি না ভুলে যেতে, ফুলের কানে ভ্রমর এসে ইত্যাদি। শাহনাজ রাহমত উল্লাহর জন্ম ১৯৫২ সালের ২রা জানুয়ারি ঢাকায়। তার বাবা এম ফজলুল হক, মা আসিয়া হক। মায়ের হাতেই ছোটবেলায় তার গানের হাতেখড়ি। পরিবারের সবার কাছে তিনি ছিলেন আদরের শাহীন। ছোটবেলাতেই তিনি শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে নতুন সুর চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গান গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। শাহনাজ রহমত উল্লাহ সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন। প্রখ্যাত গজলশিল্পী মেহেদী হাসানের কাছে তিনি গজল শিখেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি আবুল বাশার রহমত উল্লাহর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক মেয়ে নাহিদ রহমত উল্লাহ এবং এক ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। শাহনাজ রহমত উল্লাহ প্রথম উচ্চাঙ্গসংগীতে তালিম নেন ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে। এরপর তিনি ওস্তাদ মনির হোসেন, গজল সম্রাট মেহেদী হাসান, শহীদ আলতাফ মাহমুদের কাছেও গানে তালিম নেন। বিয়ের পরে তিনটি চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেছিলেন এ শিল্পী। খান আতাউর রহমানের সুরে আবার তোরা মানুষ হ, আলাউদ্দীন আলীর সুরে সাক্ষী ও আনোয়ার পারভেজের সুরে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। এসবের মধ্যে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রে গাওয়া সাগরের সৈকতে কে যেন দূর থেকে গানটির জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। শাহনাজ রহমত উল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন এদেশের প্রখ্যাত একজন সুরকার এবং সংগীত পরিচালক। আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন এদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। এর মধ্যে আনোয়ার পারভেজের সুর করা দুটি, খান আতাউর রহমানের একটি ও আবদুল লতিফের সুরে একটি গান রয়েছে।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2WiJNHN
March 24, 2019 at 08:09AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন