মিমি চক্রবর্তী (অভিনেত্রী)
একদিকে রুপোলি জগৎকে ঘিরেই আমার যত্ত কারবার। কত গল্প, কত চরিত্র। সেসবে শামিল হওয়ার সুবাদে দিব্যি বুঝি আমাদের জীবন কত বিচিত্র, কত জটিল। অন্যদিকে, ছোটোবেলা থেকে বড়োবেলায় পা রাখতে রাখতে আমার বেশ কতগুলি ভোট দেওয়া। কী কারণে কাকে ভোট দিচ্ছি সে বিষয়ে মোটামুটি একটা ধারণা থাকলেও এক একটা ভোটের পিছনে মানুষের কতটা দুঃখ-কষ্ট যে জড়িয়ে থাকে সে বিষয়ে এতদিন সেভাবে কোনো ধারণাই ছিল না। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট আমার এই অভিজ্ঞতার ভাঁড়ারটাও পূরণ করল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সবার নেত্রী। বহুদিন ধরেই ওঁর সঙ্গে আমার আলাপ। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালোবাসেনও। কিন্তু সেই ভালোবাসা যে এতটা উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে তার বিন্দুমাত্র আঁচটুকুও পাইনি। উনি মানুষের জন্য কাজ করেন। একই উদ্দেশ্যে তিনি যখন আমাকেও শামিল হতে বললেন তখন আর না বলি কী করে! এই সুবাদেই আমি এবারে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে গেলাম।
আর এরপর থেকেই ভোটকে ঘিরে আমার জীবন পুরোপুরি বদলে যেতে শুরু করেছে। দলের হয়ে কাজে নেমে একতার মানে বুঝেছি। আমার লোকসভা কেন্দ্রের যেখানেই যাচ্ছি দলীয় নেতাকর্মীরা আমার জন্য রীতিমতো জান উজাড় করে দিচ্ছেন। আমার নির্বাচনি কেন্দ্রে এখন বেশ গরম। একরকম বলতে গেলে লু বইছে। কিন্তু ওই যে বললাম, মানুষের কাজে নেমে এজন্য কোনো কষ্টকেই আর কষ্ট বলে মনে হচ্ছে না। হুডখোলা জিপে যাদবপুর, টালিগঞ্জের পাশাপাশি আমার লোকসভা আসনের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রই রীতিমতো চষে বেড়াচ্ছি। এই সময় কখনও বৃষ্টিতে ভিজেছি। কখনও কালবৈশাখীর মুখে পড়েছি। কিন্তু সত্যি বলছি ভয় পাইনি।
ডাকাবুকো বলে ছোটোবেলা থেকেই আমার বেশ একটা দুর্নাম আছে। এই সুবাদেই ভোটের প্রচার চালানোর সময় আমার ভয়ডর লাগছে না বলে কেউ কেউ মনে করতে পারেন। আসলে তা নয়। সত্যি কথা বলতে এই যে, মানুষ আমাদের পাশে আছে সেটা টের পেয়ে আমার সমস্ত ভয়ডর এক্কেবারে গায়েব। মানুষ ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে। জনসভাগুলিতে ভিড় উপচে পড়ছে। আমার শহর জলপাইগুড়ির মানুষ আমার সাহস অনেকটাই বাড়িয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রীদের পাশাপাশি খোদ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আমার হয়ে প্রচারে শামিল হয়েছেন। বাবা ছোটোবেলায় আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরতেন। আজকাল প্রচারেও আমাকে আগলে রেখে ঘোরেন। এই অনুভতিটা যে কী, তা বলে বোঝানো অসম্ভব!
ভোটে দাঁড়াব আর সমালোচনা হবে না তাই আবার হয় নাকি? আমার ক্ষেত্রে রাজনীতিতে আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের হয়ে কথা বলতে অভিজ্ঞতার যে বিশেষ প্রযোজন হয় না। জলপাইগুড়িতে আমাদের প্রার্থী বিজয়চন্দ্র বর্মনের হয়ে আমি রোড শো করেছি। প্রচারে আমাকে দল যেখানেই যেতে বলবে সেখানেই যাব। আমাদের সরকার যত উন্নযন করেছে তাতে মানুষ আমাদেরই ভোট দেবে। যাদবপুর থেকে আমিই সংসদে যাব। তারপর আমাদের সবার প্রিয় মুখ্যমন্ত্রীর মতো আমিও সবার ভালোর জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেব।
The post সমস্যার সারসত্য বুঝতে শিখেছি ভোটে দাঁড়ানোর সুবাদেই appeared first on Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal.
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://bit.ly/2VLKN7n
April 16, 2019 at 02:49PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন