গৌরহরি দাস, কোচবিহারঃ কোচবিহারে অত্যাধুনিক আর্ট গ্যালারি, সংগীত ও নাট্যচর্চা কেন্দ্র তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বছরখানেকের মধ্যে শহরের ব্রাহ্মমন্দির এলাকায় গায়ত্রীদেবী সংগীত মহাবিদ্যালয়ের জমিতে তিনতলা নতুন ভবন তৈরি করে ওই তিনটি কেন্দ্র গড়ার কথা জানিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর এই ঘোষণায় জেলার নাট্য ও সংগীতপ্রেমী ও চিত্রশিল্পীরা উত্সাহিত হয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর দেড় বছর পার হয়ে গেলেও ওই কেন্দ্র তৈরিতে তাঁর দপ্তরকে নূন্যতম উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোচবিহার শহর তথা জেলার শিল্পী ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা হতাশ।
রাজ আমলের অবসানের পরপরই ব্রাহ্মমন্দির এলাকায় প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে কিছু সংগীতপ্রেমী মানুষ একটি সংগীত মহাবিদ্যালয় খোলেন। রাজকন্যা গায়ত্রীদেবীর নামে মহাবিদ্যালয়টির নাম রাখা হয়। প্রায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে তৈরি হওয়া ওই মহাবিদ্যালয়টি প্রথমদিকে ভালো সাড়া ফেলে। একসময় কোচবিহারের সংগীতচর্চায় বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল এই সংগীত মহাবিদ্যালয়টি। তবে কয়েক দশক পরে ভবনটি বেহাল হয়ে পড়তে শুরু করে। ক্রমশ সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমতে শুরু করে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারে কমে গেলে মহাবিদ্যালয় কমিটিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। প্রায় ২০ বছর ধরে মহাবিদ্যালয়টি একেবারে বন্ধ হযে রয়েছে। মহাবিদ্যালয় কমিটি প্রশাসনের হাতে ওই ভবন ও জমি তুলে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার ফলে ঝোপঝাড়, জঙ্গলে ভরে বর্তমানে মহাবিদ্যালয়টি ভতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কোচবিহারে অনেকদিন ধরেই অত্যাধুনিক মানের আর্ট গ্যালারি, সংগীত ও নাট্যচর্চা কেন্দ্র তৈরির দাবি উঠছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ওই মহাবিদ্যালয়ের জমিতে আর্ট গ্যালারি, সংগীত ও নাট্যচর্চা কেন্দ্র তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ওখানে তিনতলা ভবন তৈরি করা হবে। ভবনের প্রথমতলে সংগীত কেন্দ্র, দ্বিতীয়তলে আর্ট গ্যালারি ও তৃতীয়তলে নাট্যচর্চা কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে তাঁর দপ্তর। মন্ত্রী জানিয়েছিলেন জমিটি পাওয়ার জন্য জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। জেলাশাসক আশ্বাস দিয়েছেন। জমিটি হাতে পেলেই কেন্দ্রটি তৈরি করার কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু তারপর দেড় বছর পার হযে গেলেও ওই কেন্দ্র তৈরি হয়নি।
কোচবিহার আর্ট সোসাইটির সম্পাদক বিমল দেসরকার, চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত জানান, কোচবিহারে আর্ট গ্যালারি তৈরি হবে শুনে তাঁরা খুব উত্সাহিত ও আনন্দিত হয়েছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন এর ফলে তাঁদের দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর হবে। কিন্তু মন্ত্রীর ঘোষণার পর দেড় বছর কেটে গেলেও আর্ট গ্যালারি না হওয়ায় তাঁরা হতাশ হযে পড়েছেন। নাট্যব্যক্তিত্ব দীপায়ন পাঠক বলেন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর ঘোষণায় আমরা যাঁরা নাটকের সঙ্গে জড়িযে রয়েছি তাঁরা খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। আমরা চাই মন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি শীঘ্র তা পূরণ করুন। সংগীতশিল্পী সুচন্দ্রা ভট্টাচার্য বলেন, কোচবিহারে সংগীতচর্চা কেন্দ্র বলে কিছু নেই। তাই মন্ত্রী যখন তা তৈরির কথা বলেছিলেন, তখন আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত য়খন তা হয়নি, তখন মনে হচ্ছে সংস্কৃতি বিষয়টা উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।
The post রবির ঘোষণাই সার, তৈরি হয়নি আর্ট গ্যালারি appeared first on Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal.
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://bit.ly/2GnRpT7
April 19, 2019 at 01:35PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন