কলকাতা, ১৭ এপ্রিল- জমি সংক্রান্ত শরিকি বিবাদের মীমাংসার আবেদন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাতে পারলেন না যুবক। মঞ্চের কাছে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ তাঁকে জোর করে সরিয়ে দেয়। শুধু সরিয়ে দেওয়াই নয়। পুলিশ তাঁকে রীতিমত মাটিতে শুইয়ে তবেই ক্ষান্ত হয়েছে। নিরাপত্তার বলয় এমনই৷ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্বাচনী জনসভায় এমনই ঘটনার সাক্ষী রইলেন উপস্থিত কয়েক হাজার মানুষ। এদিন সভা মঞ্চে মমতা বন্দোপাধ্যায় সবে দলীয় তথা গতবারের সাংসদ প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে বক্তব্য শুরু করেছেন। ঠিক সেই মুহূর্তেই উলটো দিকে শ্রোতাদের মধ্যে চলাচলের রাস্তা ধরে এক যুবক সাদা রঙের একটি খাম হাতে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। আর তখনই দায়িত্বে থাকা পুলিশ তাঁকে আটকে দেয়। যুবকের কাতর আবেদন হাতের খামটি শুধু দিদির হাতে দেবেন। ঘাস ফুলের চিহ্ন যুক্ত সেই খামটি সে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তুলেও ধরেন। কিন্তু পুলিশ তাতে আমল না দিয়ে ওই যুবককে ঠেলে নিয়ে গিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। যদিও মঞ্চের সামনে যুবকের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি লক্ষ্য করে সেখানে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেবে বলে ওই যুবকের হাতের খামটি সংগ্রহ করে নিয়ে যান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকরির আবেদন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হওয়া যুবকের নাম আব্দুল ফিরোজ। কুশমন্ডি থানার মালিগাও এলাকার চৌকিয়াপুকুর গ্রামে। একটা সময় সিপিএমের সমর্থক ছিলেন। পরবর্তীতে তৃণমূলের সমর্থক হন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। শিক্ষিত ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে শরিকদের বহুদিন ধরেই বিবাদ চলছে। অভিযোগ, থানা ও পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না তাঁরা। শরিকি বিবাদের কারণে জমিতে ফসলও ফলাতে পারছেন না। এমতাবস্থায় খুবই অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। এমনকি ন্যায্য মীমাংসা চেয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের তরফেও কোন সাহায্য তাঁরা পাননি। আব্দুল ফিরোজ জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সবেধন নীলমণি সামান্য কিছু জমি আছে। শরিকি বিবাদের জন্য তাতে আবাদ করতে পারছেন না। বুনিয়াদপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় জমি সংক্রান্ত বিবাদের মীমাংসার অবসান করতে গিয়েছিল। জমিটির যাবতীয় কাগজপত্র সহ লিখিত আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে প্রথমে ধাক্কা ও পরে মাটিতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন। যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন এভাবে কখনই দেখা করা যায় না। চাইলেই সব কিছু মেনে নেওয়া যায় না। এসবই বিজেপির চক্রান্ত বলে তিনি অভিযোগ করেন। বিজেপিই এইভাবে সভাতে লোক ঢুকিয়ে অশান্তি বাধানোর চক্রান্ত করে। তবে তিনি মঞ্চ থেকে নির্দেশ দিয়েছেন যে ওই যুবককে যেন গ্রেফতার না করা হয়। পরিশেষে তিনি পুলিশ অন্যান্যদের উদ্দেশ্যে বলেন ওই যুবক তাঁদেরই ঘরের ভাইয়ের মত। এদিকে বিজেপি সভাপতি শুভেন্দু সরকার জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপি কখনওই এই ধরনের কাজ করে না। আসলে দিদির ভাইয়েরা যে সাধারণ মানুষ থেকে কত দূরে সরে গিয়েছে এটা তারই প্রমাণ। আর এই ঘটনা সবার সামনে ঘটতেই তিনি বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছেন বলেও বিজেপি নেতা কটাক্ষ করেছেন। এমএ/ ০০:১১/ ১৭ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2UGwRyV
April 17, 2019 at 06:13AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন