কলকাতা, ০৩ এপ্রিল- একই দিনে প্রথমে শিলিগুড়ি, তারপর কলকাতার ব্রিগেড। পরপর দুটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর দিনহাটার জনসভায় পাল্টা বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর দুই নেতা একই দিনে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের বিকাশে স্পিড ব্রেকার হয়ে বাধার সৃষ্টি করছেন শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে মমতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন মোদি। পাশাপাশি বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান অভিযান নিয়েও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এরপর ব্রিগেডের সভাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলেন নরেন্দ্র মোদি। অভিযোগের জবাব দিতে মমতা বেছে নেন কোচবিহারের দিনহাটার জনসভাকে। দুপুরেই উত্তরবঙ্গের পথে রওনা হওয়ার সময় তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, সমস্ত অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য তিনি বেছে নেবেন দিনহাটাকেই। সেইমতো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোদিই ছিলেন তার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। নরেন্দ্র মোদিকে এক্সপায়ার্ড প্রাইম মিনিস্টার বলে কটাক্ষ করেন তিনি। যা বললেন মমতা বিজেপিকে বদলান। ভারতবর্ষকে রক্ষা করুন। দিল্লিতে চাই জনগণের সরকার। রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪২টিতেই জিতবে তৃণমূল। লোকসভা ভোটে ৪১ শতাংশ আসনে মহিলা প্রার্থী দিয়েছি আমরা। টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে না। আপনারা কেউ টাকা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দেবেন না। নোটবন্দির নামে জনগণের টাকা লুঠ করা হয়েছে। বাংলায় ৪২ আসনে একটা তো পেয়ে দেখাও! টাচ মি ইফ ইউ ক্যান। ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান প্রচারে ভারতীয় সেনা নিয়ে কোনও কথা বলা যাবে না, জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কী করছেন উনি? দেশটাকে জবরদস্তি করে দখল করে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমি বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত আছি। বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেব না। অসমে ২৩ লাখ মুসলিম বাঙালিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। হিন্দুদেরও বাদ দেওয়া হচ্ছে। জোড়াফুলে ভোট দিন, দিল্লিকে বদলে দিন। জোড়াফুলে ভোট দিন, মোদিকে সরিয়ে দিন। বাংলার সঙ্গে পাঙ্গা নিয়ে কোনও লাভ নেই। আগে দিল্লি সামলা। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলা। তোমার রাজত্বে ১২০০০ কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বিজেপি লুটেরাদের টিকিট দেয়। অস্ত্রব্য়বসায়ীদের টিকিট দেয়। আমরা মিথ্যা বলি না, কুৎসা করি না, দাঙ্গা করি না। কৃষকদের টাকা, শস্যবীমার টাকা, খাজনা মকুবের টাকা, সব আমরা দিই। পরিবারের লোকের কাছে জমি হস্তান্তর করতে গেলে মিউটেশন ফি তুলে দিয়েছি। রাজবংশী লোকেদের দিল্লি নিয়ে গিয়ে কত কিছু করে দেবে বলেছিল। কিছুই করেনি। আমরা রাজবংশী অ্যাকাডেমি তৈরি করে দিয়েছি। কামতাপুরিদের জন্য কাজ করেছি। চিটফান্ডের বিরুদ্ধে আমরাই তদন্ত শুরু করি। অসনের ডেপুটি সিএম সারদাকাণ্ডে কত টাকা নিয়েছেন? এক জনের জন্য রাস্তা বন্ধ, আকাশ বন্ধ। মানুষকে ভয় পায় বলেই এত বেশি নিরাপত্তা। কোনও সম্পর্ক নেই মানুষদের সঙ্গে। ক্ষমতা থাকলে টিভি বিতর্কে আসুন। অথবা প্রকাশ্যে আসুন। আমি আপনার সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কে নামবো। উনি না জানেন জন্ম, না জানেন মৃত্যু। আমাদের জগাই-মাধাই বলেছেন উনি। উনি হলেন গদাই। আমি এখন মোদীবাবুকে এক্সপায়ারি বাবু বলে ডাকবো। উনি আর প্রধানমন্ত্রী নন। উনি বলেছেন আমরা উন্নয়ন করিনি। গরিবদের জন্কৈয কাজ করিনি। কৈফিয়ত দিন। আমি তর্কের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। উনি গায়ের জোরে মিথ্যা বলছেন। উনি এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার। তফশিলি জাতি এবং উপজাতি হিসেবে শংসাপত্র পেতে গেলে যে নিয়ম আছে, তা পাল্টানোর দরকার। আমরা সাড়ে সাত বছরে ৯ লক্ষ তফশিলি শংসাপত্র দিয়েছি। এর আগে ৭০ বছরে দেওয়া হয়েছিল মাত্র আড়াই লক্ষ শংসাপত্র। আমি অনেকবার দিনহাটায় এসেছি। ছিটমহলের সমস্যার সমাধান করেছি। জমি নিয়ে জট কাটিয়েছি। ১১০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে ছিটমহলের উন্নয়নের জন্য। দিনহাটার মঞ্চে বক্তব্য রাখতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্র: আনন্দবাজার আর এস/ ০৩ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Vszhh9
April 04, 2019 at 06:12AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন