দুর্গাপুর, ২৬ এপ্রিল- নির্বাচনের আগে এ রাজ্যে বিজেপি এবং আরএসএস কোটি কোটি টাকা ছড়াচ্ছে। বৃহস্পতিবার সিউড়ি চাঁদমারি ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় এই গুরুতর অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বুধবার এই বীরভূমের ইলামবাজারের জনসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এবং কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিউড়ির সভায় প্রধানমন্ত্রী সেইসব অভিযোগ ও কটাক্ষের কড়া জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূম ও বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলের দুই প্রার্থী যথাক্রমে শতাব্দী রায় ও অসিত মালের সমর্থনে এদিন সিউড়িতে প্রচারসভা করেন মমতা। দুই প্রার্থীসহ হাজির ছিলেন জেলার দুই মন্ত্রী আশিস ব্যানার্জি ও চন্দ্রনাথ সিনহা, দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল প্রমুখ। এদিন দুর্গাপুরে তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতার সমর্থনেও জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সভায় ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, মেয়র দিলীপ অগস্তি। সভার পর ভিড়িঙ্গি মোড় থেকে পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিমি রাস্তা পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি এবং আরএসএসের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেন, আগে বিজেপির এই কর্মীরা হাফপ্যান্ট পরে প্যারেড করত। ওদের সকলকে আপনারা ভাল করে নজর রাখুন। আমি তৃণমূলের সকলকে এবং সাধারণ মানুষকে বলব, কোথায় কোথায় বসে ওরা টাকা বিলোচ্ছে নজর রাখুন। সব টাকা আপনাদের, জনগণের টাকা। নির্বাচনের আগে টাকার বাক্স নিয়ে আসছে সব। কালো, সাদা, নীল, লাল বাক্সে ভর্তি ভর্তি টাকা। এ টাকা নোটবন্দির টাকা। এ টাকা জনগণের টাকা। এ টাকা জনগণকে হত্যা করার টাকা। এ টাকা আপনাদের নিজেদের টাকা। জনগণের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এ টাকা দিয়ে কী করবেন? যদি কেউ এক বাটি মুড়ি খেতে দেয় তো খেয়ে নেবেন, তারপর বাটিটা উল্টে দেবেন। ওদের ভোট দেবেন না। টাকা দিয়ে যেন কেউ ভোট কিনতে না পারে, এটা সবাই নজর রাখবেন। আরএসএসের যারা এখানে প্রচার করছে, তারা কোটি কোটি টাকা ছড়াচ্ছে। আমরাও নজর রাখছি। বাইরে থেকে এসে বাংলায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে। বাংলার মানুষ এটা হতে দেবে না। আবার ওরা বলছে, এখানে নাকি এনআরসি করবে। তার মানে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। থাকবে শুধু মোদিবাবু একাই। প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, এখানে একটা মানুষকে তাড়ানোর জন্য হাত দিয়ে দেখুন, তারপর আমি কী জিনিস তোমরা বুঝতে পারবে কড়ায়গন্ডায়। কেউ যদি ভয়ে চুপ করে বসে থাকে, আমি যতদিন বেঁচে থাকব আমার গলা কেটে দিলেও আমি নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে ক্ষমা করব না। এটা আমার জেদ, আমার লড়াই ও শপথ। মোদিকে এক হাত নিয়ে মমতা বলেন, আগে উনি বলতেন, আমি চাওয়ালা। চায়ের কেটলি নিয়ে ঘুরে বেড়াত। যদিও এখন তার কেটলি নেই, আছে একটা জেটলি। চাওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হয়ে পাঁচ বছরে শুধু বিদেশ ঘুরে বেরিয়েছে। একটা কাজ করেনি। মানুষের সর্বনাশ করে ছেড়েছে। এবারের নির্বাচনে ওরা গোহারা হারবে।অন্য রাজ্যে ওদের বক্তৃতা এখন আর কেউ শুনছে না, তাই ওরা এখন ঘন ঘন বাংলায় আসছে। মোদি ও শাহকে কটাক্ষ করে বলেন, আমি শুনলাম, গতকাল বোলপুরে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাকি আমাকে গুন্ডাটুন্ডা অনেক কিছুই বলে গেছেন। আবার ওদের এক সাইনবোর্ড নেতা বলেছে, বীরভূম নাকি রবীন্দ্রনাথের জন্মভূমি। ওরা কোনও হোমওয়ার্ক করে না। এদিন দুর্গাপুরের ফার্টিলাইজার ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানকার ডিপিএলকে অনেক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এবার এই কারখানার খোলনলচে বদলে আধুনিকীকরণ করা হবে। তবে কারও চাকরি যাবে না। আধুনিকীকরণ না করলে ডিপিএল বাঁচবে না। কথা হয়েছিল এখানকার হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজারের জায়গাগুলি যদি হিডকো নেয়। নেবে কী করে? এটা তো কেন্দ্রীয় সরকারের জায়গা। ইসকো আধুনিকীকরণের সময়ে আমরা জমি দিয়েছি। এখানে যে ৪০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে, তার সম্পূর্ণ জমি আমরা দিয়েছি। অন্ডালে সবুজ এয়ারপোর্টে হয়েছে ভারতের মধ্যে। এন এ/২৬ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2vvNOxn
April 26, 2019 at 03:47PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন