ডাবলিন, ০৭ মে- ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে ২৬২ রানের লক্ষ্যে নেমে ওপেনিং জুটিতে দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ৪৫ ওভার শেষে ৮ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা। দলের এ ভালো অবস্থানে থাকার ভিত তৈরি করে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের অর্ধশত রানের জুটিতে বিনা উইকেটে ১০০ রান তুলে বাংলাদেশ দল। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শেষ দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ছন্দে ফেরা সৌম্য সরকার। জেসন হোল্ডারকে আপার কাট করে বাউন্ডারি হাঁকানোর এক বল পর আবার সৌম্য তুলে নেন বাউন্ডারি। তাতে ৪৭ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে সাতটি চার ও একটি ছক্কা। সৌম্যের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম ইকবালও। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি পাঁচটি শতরানের জুটি ছিল তামিম ও মুশফিকুর রহিমের। তামিম-সৌম্য জুটিতেও শতরান হলো পাঁচবার। অবশ্য ২৬ তম ওভারেচেজের বলে ব্রাভোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সেঞ্চুরির পথে থাকা সৌম্য। এর আগে দলের জন্য এক ছয় ও নয়টি চারে মূল্যবান ৭৩ রান এনে দিন তিনি। অপর ওপেনার তামিম ইকবালও আজ ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ১১৬ বলে ৭ চারে ৮০ রান করে তিনি গ্যব্রিয়েলের বলে জেসন হোল্ডারের তালুবন্দি হয়েছেন। এর আগে সাকিবের সঙ্গে তার জুটিতে এসেছে ৫২ রান। ততক্ষণে জয়ের পথে বাংলাদেশ। বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান ৫৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪১তম হাফ সেঞ্চুরি। এই বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ২৬২ রানের টার্গেটে ৩০ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে যায় টিম টাইগার। যাতে তৃতীয় উইকেট জুটিতে এসেছে ৬৮ রান। সাকিব ৬১ বলে ৬১ এবং মুশফিক ২৫ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ জয়ের চেয়েও এই ম্যাচে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল টাইগারদের দায়িত্বশীল ব্যাটিং। বিশ্বকাপে এমনটাই দেখতে চাইবে সমর্থকেরা। ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান নেন উইন্ডিজ দলপতি জ্যাসন হোল্ডার। ব্যাটিংয়ে নেমে উইন্ডিজকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার শেই হোপ ও সুনীল অ্যামব্রিস। দুজনে যোগ করেছেন ৮৯ রান। ৫০ বলে ৩৮ রান করা সুনীল অ্যামব্রিসকে মাহমুদুল্লাহর দুর্দান্ত ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর পরের ওভারেই ড্যারেন ব্রাভোকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন সাকিব। তিনি ৪ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হয়েছেন। তৃতীয় উইকেটে ১১৫ রান যোগ করেছেন রস্টন চেজ ও শেই হোপ। জুটি গড়ার পথে মাত্র ১২৬ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। এই পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই উইন্ডিজের হাতে ছিল। ৪০ ওভারে ২ উইকেটে ১৯৭ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ১০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে ৬৪ রান। পিটার চেজকে ব্যক্তিগত ৫১ রানে মুস্তাফিজের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন মাশরাফি। এর ফলে শত রানের জুটি ভাঙে হোপ-চেজের। এরপর টাইগার দলপতির বলে এক্সট্রা কভারে মিঠুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সেঞ্চুরিয়ান শেই হোপ। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১৩২ বলে ১০৯ রানের ইনিংস। এই ইনিংস গড়ার পথে তিনি ভেঙে দিয়েছেন ভিভ রিচার্ডসের একটি রেকর্ড। কিংবদন্তি রিচার্ডসকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে দ্রুততম ২০০০ রানের রেকর্ডটি এখন হোপের। ২০০০ রান করতে রিচার্ডসের লেগেছিল ৪৮ ইনিংস, হোপের লাগল সেখানে ৪৭টি ইনিংস। হোপের ফেরার পর ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারকে নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়েছেন মাশিরাফি। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৪ রান। অভিষিক্ত শেন ডওরিচকে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি সাইফুদ্দিন। ৬ রান করা ডওরিচকে তিনি ডিপ স্কয়ার লেগে সৌম্যর ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন। ১১ রান করা জোনাথন কার্টারকে সাকিব দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজের বলে। ১ রান করা কেমার রোচকে বোল্ড করে আউট করেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। শেষ দিকে রান তুলতে থাকা অ্যাশলি নার্স ১৯ রান করে মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে। শেনন গ্যাব্রিয়েল ০, ও শেলডন কটরেল ৪ রান করে অপরাজিত থেকে উইন্ডিজকে ২৬১ রানে পৌঁছে দিয়েছেন। বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: জেসন হোল্ডার (অধিনায়ক), শেন ডোরিচ, শাই হোপ, ড্যারেন ব্রাভো, রোস্টন চেজ, জনাথন কার্টার, সুনীল অ্যামব্রিস, অ্যাশলে নার্স, কেমার রোচ, শেলডন কটরেল, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। আর এস/ ০৭ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2VaP6rD
May 08, 2019 at 05:33AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top