দিসপুর, ৩০ মে- নির্বাচনী প্রচারে সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমকেই সামনে রেখে এগিয়েছে বিজেপি। অথচ বিজেপি-শাসিত আসামে, কারগিল যুদ্ধে দেশের হয়ে লড়াই করা এক প্রাক্তন লেফটেন্যান্টকেই বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে জেলে পাঠান হল। আরও অবাক ব্যাপার, অবসরের পরে প্রাক্তন সেনাকর্মী মহম্মদ সানাউল্লাহ অসম পুলিশের সীমান্ত শাখায় এএসআই হিসেবে কাজ করছিলেন। পুলিশের এই শাখার কাজই হল সন্দেহজনক নাগরিকদের খুঁজে বের করা। রাজ্যের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ও বর্তমান সেনাকর্মী এবং পুলিশকর্মীর নামে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের নোটিস এসেছিল। কারও নামে আসে ডি-ভোটারের নোটিস। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির কাছেও স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন অপমানিত সেনাকর্মীরা। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন সানাউল্লাহ ও তাঁর আত্মীয়, অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মহম্মদ আজমল হক। আজমলের মামলাটি খারিজ হলেও সানাউল্লাহর মামলা চলছিল। গতকাল সানাউল্লাহকে বকো ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ডাকা হয়। সেখানেই বিচারক তাঁকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করে রায় দেন। অবাক সানাউল্লাহকে গোয়ালপাড়া জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ তাঁর পরিবার ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আজমল জানান, সানাউল্লাহ ১৯৬৭ সালে জন্মান। সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছিলেন সানাউল্লাহ। ৩০ বছর সেনাবাহিনীতে থাকার পরে ২০১৭ সালে অবসর নেন তিনি। এরপর এএসআই হিসেবে সীমান্ত শাখায় যোগ দেন। তার সব তথ্য প্রমাণই জমা দেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনীতে ও পুলিশে যোগ দেওয়ার সময়ে তাঁর নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়। কিন্তু বিচারক জানান, শুনানির সময় সানাউল্লাহ বলেছেন, তিনি ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাই ভুল তথ্য দেওয়ার অপরাধেই তাঁকে বিদেশি হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হয়। আজমলের মতে, যেখানে সেনাবাহিনীর সব প্রমাণপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে মুখ ফসকে বলা ভুলকে প্রমাণ হিসেবে ধরা যায় না। আদালত জোর করে দেশের সেবা করা এক প্রাক্তন সেনাকর্মী ও রাজ্য পুলিশের এএসআইকে বিদেশি সাজাল। ৫২ বছর বয়সী সানা উল্লাহ বিদেশি ঘোষিত হওয়ার তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নামও এনআরসি থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা। এ দিকে, আদালত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করলেও ভোটার তালিকা ঢেলে সাজার গাফিলতিতে অনেকের নামের আগেই ডি থেকে গিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ডি-ভোটারদের নাম এনআরসিতে ঢুকবে না। এনআরসির বাইরে থাকবেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। তাই ভারতীয় প্রমাণ হয়েও ভোটার তালিকার ভুলে অনেকের নাম এনআরসির খসড়া থেকে বাদ পড়েছিল। সেই সব আবেদনকারীকে স্বস্তি দিয়ে আসামের এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা ঘোষণা করেন, ভোটার তালিকায় ডি লেখা থাকলেও আবেদনকারী যদি ভারতীয় হওয়ার স্বপক্ষে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনও আদালতের রায়ের প্রতিলিপি জমা দিতে পারেন তাহলে তাঁর নাম নাগরিকপঞ্জিতে গ্রহণযোগ্য হবে। এ নিয়ে সব জেলাশাসককেও চিঠি পাঠিয়েছেন হাজেলা। রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জানান, বর্তমানে রাজ্যে ডি ভোটারর সংখ্যা ১,২৫,৩৩৩ জন। ২,৪৪,১৪৪টি মামলা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে গিয়েছিল। তার মধ্যে ১,৩১,০৩৪টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। আর/০৮:১৪/৩০ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2HKWI0P
May 30, 2019 at 06:40AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top