কলকাতা, ১৩ মে- প্রশাসনের শত সচেতনতা প্রচারের পরেও ভোট দিলেন না রামচন্দ্রপুর গ্রামের কোনও মানুষ। ৭৩৫ জন ভোটারদের মধ্যে কেউই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন না। রাস্তার দাবিতে অনড় গ্রামের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থেকে শুরু করে যুবক-যুবতী, কেউই ভোট দিলেন না। রবিবার সন্ধ্যায় রামচন্দ্রপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে পোলিং অফিসাররা ছাড়া আর কেউ নেই। নেই কোনও রাজনৈতিক দলের একজনও এজেন্ট। গ্রামের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েকশো মহিলা। রীতিমতো ক্ষুব্ধ মহিলারা জানিয়ে দিলেন, জন্তুর মতো আমরা গ্রামে পড়ে রয়েছি। কেন ভোট দেব? গ্রামের কেউ আমরা ভোট দিইনি। সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ ভোট কর্মীরা ইভিএম সিল করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ফিরে এসেছেন। উল্লেখ্য, পাকা রাস্তার দাবিতে গ্রামের বাসিন্দারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। গত দুদিন ধরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা কয়েক দফায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। শনিবার রাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজার তালা ভাঙা হয়েছিল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাদা কাগজে লিখিতভাবে রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, সেই কাগজে সরকারি কোনও সিলমোহর ছিল না। তাই গ্রামবাসীরা প্রশাসনের উপর আস্থা না রেখে তারা ভোট বয়কটের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে কেউই ভোট দেননি। জানা গিয়েছে, রামচন্দ্রপুর গ্রামের রাস্তাটি অত্যন্ত বেহাল। সামান্য বৃষ্টি হলেই খানা-খন্দে ভরা রাস্তাটিতে একহাঁটু জল জমে যায়। অসুস্থ, অন্তঃসত্ত্বাদের হাসপাতাল পৌঁছতে দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়। অ্যাম্বুল্যান্স বা কোনও ধরনের গাড়ি এই গ্রামে আসতে চায় না শুধুমাত্র রাস্তা খারাপ থাকার জন্য। রামচন্দ্রপুর থেকে কুটুশডাঙা রাস্তার কাজ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছে রামচন্দ্রপুর গ্রামের রাস্তা হয়েছে, এমন অভিযোগও করেছে গ্রামবাসীরা। এমনকি সাইনবোর্ডে লেখাও রয়েছে তা। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাস্তার দাবিতে বারবার প্রশাসনিক মহলে জানালেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগেই গ্রামবাসীরা প্রশাসনিক মহলে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, গ্রামে রাস্তা না হলে তারা ভোট বয়কট করবেন। গ্রামে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচারমূলক ব্যানার, ফেস্টুন বা দেওয়াল লিখন পর্যন্ত নেই। গ্রামবাসীরা দাবি, প্রশাসনের কর্তারা যদি গ্রাম এসে লিখিত ভাবে রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিতেন, তাহলে তাঁরা ভোট বয়কট তুলে নিতেন। এদিন গ্রামের বাসিন্দা মল্লিকা মাহাতো, বাসনা মাহাতোরা বলেন, শনিবার রাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাদা কাগজে লিখিত ভাবে রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়৷ কিন্তু সেখানে কোনও সরকারি সিলমোহর ছিল না। ওই কাগজের তো কোনও মূল্যই নেই। তাই আমরা ভোট দিইনি। ভোট তো এত বছর ধরে দিলাম। কোন উন্নয়ন তো হয়নি। এত বছরে একটা রাস্তা তৈরি হল না। কেন ভোট দেব? এবিষয়ে ঝাড়গ্রামের বিডিও অভিজ্ঞা চক্রবর্তী বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের বোঝাতে কোনও ত্রুটি রাখিনি। দুঃখের বিষয় তাঁরা নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন না। আর এস/ ১৩ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2WH3h9t
May 13, 2019 at 07:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন