কলকাতা, ২৯ মে- রাজ্যে জমি শক্ত করতে বাঙালিয়ানা ও বাঙালি, এই দুই বিষয়কে মানুষের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদের অন্দরে বসে একথা জানিয়েছেন। দলের অভ্যন্তরে এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যে বাঙালি জনসংখ্যা ৬০ শতাংশের বেশি। বাংলা ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা ৮৬ শতাংশ। বাঙালিয়ানার বিষয়টিকে তুলে ধরে হিন্দু ও মুসলিমের মধ্যে বিভেদ ঘোচানোর জন্যও তৃণমূল কাজ করবে বলে জানা গিয়েছে। বাঙালিয়ানার পাশাপাশি হিন্দু ভোট নিজেদের দখলে রাখতেও তৃণমূল যে পদক্ষেপ করবে, সেই বার্তাও সুদীপবাবুর কথায় মিলেছে। এদিন তিনি বলেন, রাজ্যের দুর্গাপুজোকে আর্ন্তজাতিক উৎসব হিসাবে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্র সরকার যাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করে, তার দাবি আমি সংসদে তুলব। দীর্ঘদিনের সাংসদ সুদীপবাবুর সপ্তদশ লোকসভার অধিবেশন শুরুর আগেই দুর্গাপুজো নিয়ে এহেন দাবি তুলে ধরার কথা সামনে আনায় বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাজ্যে বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করেছে, হিন্দু ভোটে থাবা বসিয়েছে৷তা অনুধাবন করে তৃণমূলও কি আগামিদিনে নরম হিন্দুত্বের রাস্তা অবলম্বন করতে চলেছে? এমন প্রশ্ন সুদীপবাবুর বক্তব্য থেকে উঠে আসা অস্বাভাবিক নয়। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করলেও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা সামলে নেবেন বলেও দাবি করেছেন সুদীপবাবু। এদিন তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজমুখে বলেছেন বেশি করে দলের দিকে মন দেবেন। জনসংযোগ যাত্রা শুরু করবেন। প্রথমদিন থেকে মমতার সঙ্গে রয়েছি। তিনি একবার জনসংযোগ যাত্রা শুরু করলেই সবকিছু পালটে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। রাজ্যে বিজেপি যে এতটা ভাল ফল করবে, তা তাঁরা আন্দাজ করতে পারেননি বলেও মেনে নিয়েছেন সুদীপবাবু। একই সঙ্গে তাঁদের ফল খারাপ হয়েছে বলেও মানতে চাননি পোড় খাওয়া এই নেতা। তিনি বলেন, এত আচমকা সবকিছু ঘটেছে যে, এমন ফল হতে পারে কেউই আন্দাজ করতে পারেনি। সারা দেশ পারেনি। পশ্চিমবাংলাও পারেনি। অবশ্য ৮৪ সালের পর কংগ্রেস ৪০৪ সাংসদ নিয়ে ফেরত এসেছিল। এই সংসদ তারও সাক্ষী। আমরা ৩৪ থেকে ২২ হয়েছি বলে মনে হচ্ছে সংখ্যাটা কম। কিন্তু এই ঝড়ের মধ্যেও ২২টি আসন নিয়ে সংসদে বসে থাকা কম ব্যাপার নয়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানপর্ব শুরু হলেও রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে বলেই বিশ্বাস সুদীপবাবুর। তাঁর মত, আসলে এসব করে আমাদের বিব্রত করার একটা চেষ্টা হচ্ছে। বেশি কিছু করতে পারবে না। কারণ, বাংলায় টাকা দিয়ে বিধায়ক, সাংসদ কেনাবেচার সংস্কৃতি নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে, এই যুক্তিও মানতে রাজি হননি সুদীপ। এ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, যা ঘটে তার থেকে অনেক বেশি প্রচার হয়। রাজ্যে বিজেপির ভাল ফলের পিছনে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করাকেও কারণ হিসাবে মনে করছে তৃণমূল শিবির। শুধুমাত্র বাংলার জন্যই ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিতে বিজেপি পঞ্চাশ কোটি টাকা খরচ করেছে বলেও দাবি করেছেন আরেক তৃণমূল নেতা৷ আর এস/ ২৯ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2EGc7NL
May 29, 2019 at 05:08PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top