এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমটা দারুণ কাটছে দর্শকদের। টিভি সিরিজভক্তদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মুক্তি পেয়েছে গেম অব থ্রোনস-এর শেষ অধ্যায়। ১০ বছর ধরে ২২টা সিনেমা জুড়ে গড়ে তোলা মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেমও মুক্তি পেয়েছে এপ্রিলের শেষে, ভেঙে ফেলেছে বক্স অফিসের সব রেকর্ড। কিন্তু লাইটস-ক্যামেরা-অ্যাকশনের এই মেকি জগতের চেয়ে হাজার গুণ বেশি রোমাঞ্চ আর নাটকীয়তা উপহার দিয়েছে ইউরোপের দুটো ক্লাব প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল। বার্সেলোনার বিপক্ষে লিভারপুলের মহানাটকীয় জয়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই আয়াক্স রূপকথা থামিয়ে দেওয়া টটেনহাম হটস্পারের বীরত্বগাথা। চ্যাম্পিয়নস লিগে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এ দুই দলের ফাইনালে ওঠাটাই বোধ হয় অনুপ্রাণিত করল ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে উঠে আসা দুই ইংলিশ দলকে। ঠিকই আর্সেনাল ও চেলসি উঠে যায় ফাইনালে। এমিরেটসে প্রথম লেগটা ৩-১ গোলে জিতে স্বস্তিতেই ছিল আর্সেনাল। অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগে যেভাবে দ্বিতীয় লেগে একের পর এক দল সব হিসাব-নিকাশ ওলটপালট করে দিচ্ছে, তাতে খুব একটা স্বস্তির সুযোগ কই! তার ওপর ম্যাচের ১১ মিনিটেই ভ্যালেন্সিয়ার গামেইরো যখন প্রথম গোলটা করে ফেলেন, তখন তো উল্টো গানাররা বিপদে। কারণ খেলার বাকি সময়ে ভ্যালেন্সিয়া যদি নিজেদের জাল অক্ষত রেখে আরেকটা গোল করতে পারে, তাহলে প্রতিপক্ষের মাঠে গোল করার সুবাদে তারাই চলে যাবে ফাইনালে! আর্সেনালের জন্য এই সমীকরণের সমাধানগোল করতে হবে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে। সেই কাঙ্ক্ষিত গোলের সন্ধান দিলেন পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং। বুটের ডগার টোকায় ম্যাচের ১৭ মিনিটে বল জালে পাঠিয়ে আর্সেনালকে মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল এনে দেন গ্যাবনের এ স্ট্রাইকার। বিরতির পর আলেকসাঁদ লাকাজেত গোল করে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন আর্সেনালকে। ৬৯ মিনিটে এবং ৮৮ মিনিটে আরো দুটো গোল করে ব্যবধান বাড়িয়েছেন অবামেয়াং, পূরণ করেছেন নিজের হ্যাটট্রিক। দ্বিতীয় লেগটা ৪-২ গোলে জিতে, দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৩ গোলে ভ্যালেন্সিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠল আর্সেনাল। মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় সপ্তমবারের মতো ফাইনালে উঠল উত্তর লন্ডনের দলটি। তবে গত ছয়বারের ভেতর মাত্র দুইবার তাদের সৌভাগ্য হয়েছে শিরোপা জেতার। স্টামফোর্ড ব্রিজে চেলসি সমর্থকদের স্নায়ুর চাপে ভুগতে হয়েছে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত! প্রথম লেগে ফ্রাংকফুর্টের মাঠে ছিল ১-১ সমতা। ফিরতি লেগেও ৯০ মিনিট শেষে সেই একই ফল। ম্যাচের ২৮ মিনিটে চেলসির রুবেন লোফটাস-চিকের দেওয়া গোলটা ৪৯ মিনিটে শোধ করে দিয়েছিলেন ফ্রাংকফুর্টের জোভিচ। ২-২ সমতায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। বাড়তি ৩০ মিনিটের শেষ সময়েও একবার বল জালে পাঠিয়েছিল চেলসি; কিন্তু রেফারি সেটা বাতিল করে দেন। কারণ ফ্রাংকফুর্ট গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপকে রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে তাঁর হাত থেকে বল খসিয়ে তাতে হেড করে যে জালে পাঠিয়েছিলেন চেজারে আসপিলিকুয়েতা! ১২০ মিনিটেও ফল নিষ্পত্তি না হওয়ায় অগত্যা টাইব্রেকার। চেলসির আসপিলিকুয়েতা গোল করতে ব্যর্থ হন স্পট কিকে। অন্যদিকে ফ্রাংকফুর্টের শেষ দুটো স্পট কিক আটকে দেন গোলরক্ষক কেপা আরিজবালাগা। শেষ শটটা নিতে আসেন এডেন হ্যাজার্ড, ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে এই বেলজিয়ান নিশ্চিত করেন চেলসির জয়। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জিতে ছয় বছর পর বড় কোনো ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ফাইনালে পা রাখল ব্লুরা। সব শেষ তারা ফাইনালে উঠেছিল ২০১৩ সালের ইউরোপা লিগে, শিরোপা জিতেছিল বেনফিকাকে হারিয়ে। চেলসির জয়ে ইউরোপের শীর্ষ দুটো ক্লাব প্রতিযোগিতা, চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইউরোপা লিগে প্রথমবারের মতো ৪ ফাইনালিস্ট এলো একই লিগ থেকে। সূত্র: এএফপি এমএ/ ১০:০০/ ১১ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2YoYgmB
May 11, 2019 at 04:11PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন