২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নায়ক ছিলেন রুবেল হোসেন। তার ৫৩ রানে ৪ উইকেট বোলিং ফিগারে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ পা রাখে কোয়ার্টার ফাইনালে। এর আগে সুপার এইটে উঠলেও, কোয়ার্টার ফাইনাল ফরম্যাটে প্রথমবার বাংলাদেশ বিশ্বকাপের এই পর্যায়ে পৌছাঁয়। কিন্তু এই বিশ্বকাপে খেলার কথাই ছিল না রুবেল হোসেনের। ২০১৪ সালে নারী নির্যাতন মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। তবে এই বিষয়ে কোনও তথ্য-প্রমাণ পায়নি পুলিশ। চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় রুবেল হোসেনকে আসামি করে ওই মামলা করেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয় রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক হালিমা খাতুন ২০১৫ সালের ৬ই এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন। হালিমা খাতুন বলেন, বাদী মিস হ্যাপি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের যে অভিযোগ করেছেন, সে বিষয়ে কোনও তথ্য বা প্রমাণ তারা পাননি। ফলে বাদী ভুল তথ্য দিয়েছিলেন বলেই তাদের তদন্তে উঠে এসেছে। এ মামলায় চারদিন কারাগারেও ছিলেন রুবেল। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নেন তিনি। প্রথমে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রুবেল হোসেনের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমরুল কায়েস অভিযোগপত্র দাখিল হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। রুবেলের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ। সেসময় তিনি বলেছিলেন, বাদী ঘটনার বর্ণনায় যে সময় ও তারিখ উল্লেখ করেছিলেন তা অসত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং সামনে বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত জামিন দিয়েছে। এর আগে হাইকোর্ট রুবেল হোসেনকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছিল। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন রুবেল। তবে আদালত সে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠালে রুবেলের বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এই অনিশ্চয়তা দূর করে আদালত। ২০১৫ সালের ১৪ই জানুয়ারি বাংলাদেশী ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিদেশে যেতে কোনো বাধা নেই বলে আদেশ দেয় আদালত। আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। রুবেল হোসেনের আইনজীবীর করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত সে আদেশ দিয়েছিল। আসন্ন বিশ্বকাপ এবং তার বিরুদ্ধে একজন অভিনেত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলার প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছিলো। এই আদেশের ফলে ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার জন্যে রুবেল হোসেনের অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড যাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কা দূর হয়। এই বিতর্কের পর রুবেল হোসেনের ক্যারিয়ার বদলে যায়। চোট বা আঘাত বাদ দিলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন রুবেল হোসেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার দুটি বোল্ড বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূণ মুহূর্ত মনে করা হয়। সে বছর রুবেল হোসেন ১৪ ম্যাচে নেন ১৮ উইকেট। ২০১৮ সালেও ১৫ ম্যাচ বল করে নেন ২৩ উইকেট। রুবেল হোসেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে সুপরিচিত ডেথ ওভার বোলার হিসেবে। ইনিংসের মাঝপথেও ব্রেক-থ্রু এনে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন তিনি প্রায়ই। ক্যারিয়ারের শততম ওয়ানডে ম্যাচ খেলার আর তিন ম্যাচ দূরত্বে আছেন রুবেল হোসেন। ৯৭ ম্যাচে বোলিং করে রুবেল হোসেন ১২৩টি উইকেট নিয়েছেন। বাংলাদেশের সেরা পাঁচ বোলারের তালিকায় আছেন তিনি চার নম্বরে। তবে এদের মধ্যে ইকোনমি রেট সবচেয়ে বেশি রুবেলের। ওভারপ্রতি ৫.৬৩ রান দিয়ে আসছেন রুবেল। রুবেল হোসেন ২০০৯ সাল থেকে খেলছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে। একটি পেস বোলার অন্বেষণ কর্মসূচিতে প্রথম স্থান অধিকার করে পরিচিতি পান রুবেল হোসেন। এরপর ২০০৭ সালে খুলনা বিভাগের হয়ে তার অভিষেক হয়. সেই দলে ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোত্তর্জা। সে সময় তার গতির কারণে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। ২০০৮ সালে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের দলে ডাক পান রুবেল হোসেন। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন রুবেল হোসেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা এমএ/ ০৫:০০/ ২১ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Hu5IHm
May 21, 2019 at 01:02PM
21 May 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top