ঢাকা, ০৪ মে- ইতিহাস তৈরিতে কয়েক মুহূর্তে দূরে ছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ঘরের মাঠে প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে বাকি শুরু একটি ম্যাচ। প্রতিযোগিতার সবচেয়ে আকর্ষনীয় ফাইনালে ম্যাচের জন্য বৈরি আবহওয়া উপেক্ষা করে গ্যালারিতে হাজির হাজার চারের ফুটবলপাগল সমর্থক। উদ্দেশ্য মেয়েদের সঙ্গে ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার। কিন্তু সব আয়োজনে পানি ঢেলে দেয় বাফুফে। ম্যাচ শুরুর নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা আগে গুঞ্জন ওঠে বাতিল হচ্ছে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের ফাইনাল। কিছুক্ষণ পর সত্যি হয় সেটাই। প্রশ্নবিদ্ধ ভাবে সমাপ্তি ঘটলো সফল এবং সুন্দর একটি আয়োজনের। কিন্তু শুধুমাত্র মানবতার কারণে উতরে গেল বাফুফের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তটি। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল ও মানবতাকে একবিন্দুতে মিলিয়েছে বাফুফে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে মাঠ খেলার উপযোগী থাকলেও ফাইনাল শুরুর আধঘণ্টা আগে কেন বাতিলের সিদ্ধান্ত? পরিস্থিতি এমনটা হবে, সেটা দুই দিন আগেই জানিয়ে ছিলো আবহওয়া অফিস। সে গুলো আমলে নিয়ে চাইলেই কি সূচি সময় পরির্বতন করা যেতো না? এমন প্রশ্নের জবাবে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে লোকাল টুর্নামেন্টের মতো ম্যাচ বাতিল করে অন্য দিন নেওয়া যায় না। সব দলেরই একটা সূচি থাকে। তাই ইচ্ছা করলেই ম্যাচ বাতিল করা যায় না। যদিও সূচির দোহাই থাকবে তাহলে এর আগে দুবার কিভাবে সূচি পরির্বতন করা হয়। টুর্নামেন্ট শুরুর সময় ফাইনালের তারিখ নির্ধাতি ছিলো ৩ মে। কিন্তু সেটি পরিবর্তন ৪ মে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলো বাফুফে। পরে যদিও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আবার ৩ মে ফাইনালের দিন নির্ধারণ হয়। এখন প্রশ্ন হলো এতবার তারিখ পরির্বতন হলো তখন কি ফিফা ও এএফসির নিয়মের ব্যাঘাত ঘটেনি? বাফুফে বলছে এএফসির নিয়মানুযায়ী ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি-ম্যাচ কমিশনার। কিন্তু ইতিহাস বলছে এর আগে অনেক বৃষ্টির মধ্যেও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে। গত বছর এএফসি কাপে আবাহনী লিমিটেড ও মোহনবাগানের মধ্যকার ম্যাচে বৃষ্টির বাধা সাময়িকভাবে বন্ধ ছিলো। কিন্তু পরে একই দিনে সেই ম্যাচটি ভালো ভাবে শেষ হয়। ফিফার আইনে রয়েছে বল মাঠের পানিতে ভাসলেই খেলা বাতিল হবে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিলো না। চাইলেই খেলা পরিচালনা করা যেতো। এরপরও কেন ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত, সে প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন বাফুফের অন্যতম শীর্ষ কর্তা আব্দুস সালাম মুশের্দী। এ সময় মানবতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন টুর্নামেন্টের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান কে স্পোর্টসের প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিম। তিনি বলেন, মাঠের পরিস্থিতির সঙ্গে টুর্নামেন্টের সমাপ্তির সম্পর্ক নেই। টুর্নামেন্টের এমন সমাপ্তি অবশ্যই কাম্য না। দেশের ১৯টি জেলা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে পড়ে। সবাই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রার্থনারত। এমন অবস্থায় রাজধানীতে ফুটবল ম্যাচ খেলাটা শোভনীয় নয়। তাহলে দর্শকদের কথা চিন্তা করে কেন আগে বাতিল করা হলো না? এমনিতে দর্শক খরায় ভুগেছে দেশের ফুটবল। তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের ম্যাচ এবং মেয়েদের পারফরম্যান্স, নতুন করে অনেক দর্শককে নিয়ে এসেছে মাঠে। বৈরি আবহওয়া, প্রতিকূল পরিস্থিতি ও ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফাইনাল দেখতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হাজির হন প্রায় হাজার চারেক দর্শক। কিন্তু ফাইনালটি বাতিল হওয়ায় হতাশা নিয়ে স্টেডিয়াম ছেড়ে যান তাঁরা। সূত্র বলছে ফাইনাল খেলার আগ্রহ ছিলো দুদলের। জমজমাট এক ফাইনালের প্রত্যাশা ছিল চারদিকে। কিন্তু এই ফাইনালে পড়েছে ফণীর পরোক্ষ থাবা। ঢাকায় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব তেমন টের পাওয়া না গেলেও উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ ছিলো ভীষণ আতঙ্কে। অনেকে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নেন আশ্রয়কেন্দ্রে। এমন বিপন্নতার মধ্যে বঙ্গমাতার ফাইনাল হলে মানবতাকেই উপহাস করা হতো। তাই বাফুফের সিদ্ধান্তগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলেও এখানে জয় হয়েছে মানবতার। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার আর এস/ ০৪ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Wt2xVG
May 05, 2019 at 12:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন