শুরু হতে সময় বাকী এক সপ্তাহ। তার আগে বিশ্বকাপের উত্তাপটা বাড়িয়ে দিলেন অংশ নিতে যাওয়া দশ দলের ১০ অধিনায়ক। আইসিসির মিট দ্য ক্যাপ্টেনস অনুষ্ঠানে তাদের কণ্ঠে ফুটে উঠল ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনা, পরিকল্পনা আর লক্ষ্যের কথা! বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনা, পরিকল্পনা, লক্ষ্য এবং স্বপ্ন- এসব ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে মিট দ্য ক্যাপ্টেনস নামক অনুষ্ঠানটি। সঞ্চালক কিংবা উপস্থিত দর্শকরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। সেসবের উত্তর দিয়ে নিজেদের ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন অধিনায়কেরা। ২০ বছর পর ইংল্যান্ডে ফিরছে বিশ্বকাপ। ফাইনালটা হবে ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে। কেমন হবে ফাইনালে খেলতে পারলে? এক স্কুল শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের জবাবে রসিকতা দিয়েই শুরু করেছেন স্বগতিক অধিনায়ক ইয়ন মরগান। উফ্! দারুণ হবে বিষয়টা। আমার তো মনে হয় এখানে উপস্থিত প্রত্যেক অধিনায়কই চাইবে তাদের বাঁ-পায়ের বিনিময়ে হলেও লর্ডসের ফাইনালে খেলতে। এখানে এমন কেউই নেই যে হোম অব ক্রিকেটে ফাইনাল খেলতে চাইবে না! ছোটবেলা থেকেই আমরা এমন এক ফাইনালের স্বপ্ন দেখেছি। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে নয় ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এই উন্নতির ধারা বিশ্বকাপে কতটা ধরে রাখা যাবে? মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দিকে এমন প্রশ্ন ছুটে যেতেই সপাটে ব্যাট চালিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। দারুণ একঝাঁক ক্রিকেটার নিয়েই আমাদের দলটা গড়া। জুনিয়র-সিনিয়রদের দারুণ বোঝাপড়া আছে। নতুন যারা আসছে, তারাও ভালো করছে। আয়ারল্যান্ডে সবশেষ যে সিরিজটা তারা খেলেছে, সেখানেও ভালো করেছে। আমার মনে হয় ২ জুন ফ্যাফের দলের সঙ্গে (সাউথ আফ্রিকা) বিপক্ষে ভালো একটা সূচনা করবো। মাশরাফীর পাশেই ছিলেন ফ্যাফ ডু প্লেসিস। মুচকি হেসে সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিয়েছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক, আমার মোটেও তা মনে হয় না! দুই বছর আগে ইংল্যান্ডের মাটি থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিজেদের দেশে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেই আসরের পর দলটির পারফরম্যান্স কিছুটা পড়তির দিকে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ৪-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে সরফরাজ আহমেদের দল। বিশ্বকাপে কোন প্রভাব পড়বে না তো? পাকিস্তান অধিনায়ক আশ্বস্ত করেছেন তার দেশবাসীকে। সময়মতই ঘুরে দাঁড়াবে তার দল। ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজে দুদল মিলিয়ে প্রতিটি ম্যাচেই রান ছাড়িয়েছে ছয়শো-সাড়ে ছয়শো। মূল আসরে এক ইনিংসে ৫০০ রান সম্ভব কিনা এমন প্রশ্ন ছুটে গেছে বিরাট কোহলির দিকে। ভারত অধিনায়কের জবাব, ছেলেরা চাইলে হতেই পারে। তাহলে আমাদের ৫০ ওভারের প্রতিটি বলেই পেটাতে হবে। আমার মনে হয় ৩৫০-৩৮০ রান তাড়া করার চেয়ে ২৫০-২৮০ রান তাড়াই কঠিন হবে। কারণ সবাই বেশি করতে চাইবে। অল্প রান তাড়ায় মানসিকতার কিছু পরিবর্তন আসবেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব অধিনায়কই স্বীকার করেছেন, এবারের বিশ্বকাপে রানবন্যা হবেই। রান থামাতে তাই বোলারদের উপরে দায়িত্বটা ছেড়ে দিলেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে উঠে এলো ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গও। চিরবৈরী রাজনীতির লড়াই মাঠে চলে আসবে না তো? কোহলির জবাব, মাঠে ঢুকলে উত্তেজনা থাকবেই। দর্শক-সমর্থকরা অনেককিছু বলবে। তবে একবার খেলার মাঝে ঢুকে গেলে এসব নিয়ে ভাবার সময়ই থাকবে না। দিনশেষে এটা মাঠেরই খেলা। পরে পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজও সমর্থন করেছেন কোহলিকে। বিশ্ব আসরে খেললেও কেন পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না ভারত? কোহলিকে এমন প্রশ্ন করতেই হাল্কা মেজাজ হারিয়েছেন ভারত অধিনায়ক, এটা ক্রিকেটারদের বিষয় নয়। বোর্ডই ভালো জানে। সংবাদ সম্মেলনে আমি এর উত্তর দিতে পারবো না। আমার মন্তব্যও এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়! দশ দলের সবাই খেলবে একে অপরেরে বিপক্ষে। নেই কোনো গ্রুপ। প্রত্যেক দলের নয়টি করে ম্যাচ থাকায় কঠিন এক বিশ্বকাপ আশা করছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। এক বছর নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন দুই অজি ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। আছেন বিশ্বকাপ দলেও। এই দুজনকে নিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে এসে উগ্র সমর্থকদের হামলার মুখে পড়বে না তো অস্ট্রেলিয়া? অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ বললেন, এ নিয়ে তারা মোটেও ভাবছেন না। ওরা কয়েকদিন আগে দলে ফিরেছে। দুজনে অসাধারণ ক্রিকেটার। দলের বাকিরা দুজনকে স্বাদরে গ্রহণও করেছে। দুজনের মনোবলও বেশ চাঙ্গা। দর্শকরা মাঠে থাকবে, অনেক কিছু বলবে। সবকিছু মেনে নিয়েই মাঠে খেলতে হবে। জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ডকে পেছনে ফেলে বাছাইপর্ব খেলে বিশ্বকাপে এসেছে আফগানিস্তান। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশের জন্য এ এক ভীষণ প্রাপ্তি বলে মনে করেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। আফগানিস্তানে খেলা বলতে এখন ক্রিকেটকেই বোঝায়। জনগণের আশা, ভালোবাসা নিয়ে আমরা খেলবো। আফগানিস্তান এখন বেশ শান্তিপূর্ণ। ক্রিকেট তারই একটা অংশ। এরকম একটা দলকে নেতৃত্ব দিতে পেরে আমি বেশ গর্বিত। সবশেষে বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেদের ভাবনাকে তুলে ধরেছেন প্রতি অধিনায়ক। ২০০৩ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলা মাশরাফীর মতে, বিশ্বকাপ আমার কাছে নতুন কিছু নয়। এখন সবকিছু নির্ভর করছে আমরা মানসিকভাবে কতটা এগিয়ে সেদিকে। যখন আমরা একটা দল হয়ে খেলবো। আশা করি সবকিছু ভালোভাবেই এগোবে। যেকোনো দলকে হারানোর আত্মবিশ্বাস আমরা রাখি। এমএ/ ০০:১০/ ২৪ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2VNMSid
May 23, 2019 at 08:15PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন