টরন্টো সংস্কৃতি সংস্থা (টিএসএস)-র এই বার্ষিক পারফর্মিং আর্ট উৎসব প্রতি বছর মে মাসের এই দিনে ২ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। যে দুই দিন অটোয়াতে টিউলিপ ফোটা শুরু হয়, সেই দুই দিন টিএসএস-এ নতুন প্রজন্ম, দেশ থেকে আগত শিল্পী, টরন্টোর শিল্পীদের নানা রকম আয়োজনে হরেক রঙের টিউলিপ ফোটে । আরও অনেক নানাবিধ আয়োজনের মাঝেও TSS এর দুই দিনব্যাপি আয়োজনের কোন ব্যত্যয় ঘটে না। টিকেট প্রতি বছর অনেক আগেই বিক্রি হয়ে যায়। ১১ মাস ধরে নানা রকমের জল্পনা-কল্পনা করে এই অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়। সারা বছর অনেক চেনা মুখ এতে সময় দেন। এই বছর শান্তনু চৌধুরীর যোগ্য নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হলো TSS ২০১৯ অনুষ্ঠান । অনেক চেনা মুখ তপন দা, ধ্রুব ঘোষ , দেবাশিস গাঙ্গুলি , মণিকা গাঙ্গুলি, কমলিকা, অনিন্দিতা, আশিস দা, রাজকুমার-দা, সৃজিত, সুনির্মল , অনুপদা, সৌরভদা, সন্দীপ, কৌশিক , পীযূষ দা, সুদীপ, আরো কত নাম; যারা দিনরাত এক করে এই দুই দিনের অনুষ্ঠান কণ্টকমুক্ত করে এই আয়োজনে সফল করেন। আর সাথে থাকে এই প্রজন্মের ভলান্টিয়ার এর দল। দুই দিনব্যাপি আয়োজনে উপস্থাপকদের এক বিরাট ভুমিকা থাকে। আমারও সৌভাগ্য হয়েছিল এবার TSS এর প্রথম দিনে গৌতম হালদার যিনি নিজ বীরত্বে নানা নাটকে শরীরবাচনের নানা ভঙ্গি ও রীতি উদ্ভাবক ও পরিবেশক; তাঁকে মঞ্চে উপস্থাপনা করবার ।এবার তাঁর দ্বিতীয় দফা TSS এ আগমন ছিল। ২০১১ সালে গৌতম হালদার প্রথমবারের মত এসেছিলেন। TSS এর দ্বিতীয় দিনে উপস্থাপনায় ছিলাম পারমিতা ও তার দলের নাচের পরিবেশনা তুলে ধরবার জন্য । পারমিতা ও তার দলে টরন্টোর সুকন্যা দলের সকল প্রিয় মুখগুলো ছিল; আর সাথে ছিল আরও বেশ কিছু নাচের শিক্ষার্থীরা। অসাধারণ একটি পরিবেশনা ছিল এই দলের; যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। TSS এর দ্বিতীয় দিনে প্রধান ও শেষ আকর্ষণ টরন্টোর TSS এর মঞ্চে রূপঙ্কর বাগচীর পরিবেশনা। আমি আর দেবাশিস গাঙ্গুলি দায়িত্ব পেয়েছিলাম এই famous শিল্পীকে মঞ্চে তুলবার জন্য। রূপঙ্কর দ্বিতীয়বারের মত টরন্টোতে TSS এর মঞ্চে গান পরিবেশন করেন। এই তুমি কেমন তুমি, চোখের তারায় আয়না ধর-এই গানটির জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়া শিল্পীর সাথে একই মঞ্চ শেয়ার করা আরেক অনুভূতি। অভিজ্ঞতার বলয় বিন্দু থেকে কিছুটা গোলাকার আকার ধারণ করে । যে কোন শিল্পীকে মঞ্চে তুলবার আগে হাত পা কেঁপে কেঁপে উঠে বার বার। মনে হয় পারবো তো? আর উপস্থাপনা শেষে বার বার প্রতিবার মনে হয় উহু ...এবারেও হলো না! আমার হলো না। কিন্তু ২ দিন ব্যাপি এটা নানান রকম অনুষ্ঠানমালা, খাবারের স্টল, শাড়ি গহনা সব মিলিয়ে এক প্রাণের মেলার আয়োজন এটা। আর দর্শকরাই এই মেলার প্রাণ। তাই তো আয়োজন শেষে সকলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বাড়ী ফেরেন আর বলেন আসছে বছর- আবার দেখা হবে, এ দেখাই শেষ দেখা নয়তো। সুধীজন , আবারো আগামী বছর TSS আরো নতুন কিছু, নতুন আয়োজনে আসবে আপনাদের মনোরঞ্জনের জন্য। তবে, মনে রাখবেন শুধু মনরঞ্জনই নয় টিএসএসের লক্ষ্য, এখানে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে সুকুমারবৃত্তির চর্চায় উৎসাহ প্রদান। প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে বাঙালিত্বের মূল চেতনার স্ফুরণ। সংস্কৃতির ঐতিহ্যের অধিকার জাগিয়ে সবার ভেতরে তা ধারণ, লালন। এবং এপার ও ওপার বাংলা ভাষার লোকদের সংস্কৃতির মেলবন্ধনের অকৃত্রিম প্রচেষ্টা এই দুইদিনব্যাপি সামগ্রিক আয়োজনের মূল লক্ষ্য। কবিগুরু র কবিতা থেকে ধার করে বলি - আশার আলোকে জ্বলুক প্রাণের তারা, আগামী কালের প্রদোষ-আঁধারে ফেলুক কিরণধারা । TSS এভাবেই কিরণধারা হয়ে ঝরে পড়ুক হৃদয়ে সবার।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2QmjKOe
May 25, 2019 at 10:14PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন