লন্ডন, ০৯ জুন- সাকিব আল হাসানকে আপনি ব্যাটিং অলরাউন্ডার বলবেন নাকি বোলিং অলরাউন্ডার তকমা দেবেন? সাকিবের ব্যাট ও বল সমানতালে হাসে। তার ১০ ওভার বল করাটা দলের জন্য যেমন অপরিহার্য, তেমনি তার ব্যাটিংটাও দলের জন্য খুবই প্রয়োজন। সেই উপলব্ধি থেকেই সাকিবকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেয়া হয়েছে। আগে ব্যাট করতেন চার কিংবা পাঁচ নম্বরে। এখন নামেন ওয়ানডাউনে। তিনে ব্যাট করে সাকিব যেমন খুশি, তেমনি বাংলাদেশও লাভবান। সেটির প্রমাণ মিলল গতরাতেও। কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ শতক করেন সাকিব। ম্যাচশেষে সাকিব বলেন, নিঃসন্দেহে দারুণ লাগছে, আজ ভালো ব্যাট করেছি। তবে দল জিতলে আরও ভালো লাগত। তিন নম্বরে সাকিব ব্যাট করুক টিম ম্যানেজেমেন্ট নাকি সেটি চায়নি। এমনটি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার বলেন, এই তিন নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে আমাকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। দলের সবাইকে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছি যে আমি এখন ব্যাট হাতে বেশি অবদান রাখতে চাই। একটু পেছনে ফিরে তাকাই। ২০১৪ সালে প্রথমবার তিন নম্বরে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ হন সাকিব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে রানের খাতা না খুলেই আউট হন তিনি। ওই ব্যর্থতার কারণে তিন বছর তিনে ব্যাট করা হয়নি সাকিবের। তিন বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফের তিন নম্বরে সুযোগ আসে সাকিবের। মাঝে চারটি ম্যাচ ৫ নম্বরে ব্যাটিং করলেও এই সময়ের বাকি ম্যাচগুলোতে তিন নম্বরেই ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের পর এই পজিশনে ব্যাটিং করে দারুণ সফল সাকিব। তিন নম্বর পজিশনটি নিজের করে নিতে টিম ম্যানেজমেন্টকে বোঝাতে হয়েছে সাকিবকে। সোফিয়া গার্ডেনসে বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি শেষে এ কথাই জানান সাকিব। বলেন, হ্যাঁ, সবার কাছে প্রমাণ দিতে হয়েছে যে এখানে আমি ব্যাটিং করার যোগ্য। যদি আমি এই পজিশনে রান না পাই, তা হলে সতীর্থরাই বলবে যে আমার পাঁচে ব্যাটিং করা উচিত। এ জন্য বলছি- এখানে ব্যাটিং করতে সবাইকে অনেক বোঝাতে হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, তিন নম্বরে ব্যাট করে সাকিবের ব্যাট বেশি হাসে। এই পজিশনে ১৮ ম্যাচ খেলে গড়ে ৫১.৯৬ রান সাকিবের। অন্যদিকে চার নম্বরে ৩১ ম্যাচে গড় রান ৪১.৬৯। সবচেয়ে বেশি বার ৫ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন সাকিব, সেখানে ১৩৩ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ৩৫.৩৩। ৬ নম্বর পজিশনে ১৫ ম্যাচ ব্যাটিং করে গড় রান ২২.৫০। সবচেয়ে কম ৭ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করেছেন সাকিব। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিন ম্যাচে ব্যাটিং করে গড়ে ২০ রান করেছিলেন তিনি। লম্বা ক্যারিয়ারে সাকিব তিন থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত ব্যাট করেছেন। সবচেয়ে সফল তিন নম্বরেই। এই পজিশনে ব্যাটিং করার চ্যালেঞ্জে জয়ী হয়ে সাকিব বলেছেন, এটা ভিন্ন অনুভূতি। নতুন চ্যালেঞ্জ বলা যায়। আমি এখনও এই পজিশনে ব্যাটিং শিখছি বলব। এখনও বড় কোনো কিছু করে ফেলিনি। এটি মাত্রই শুরু হলো। আমি দলের হয়ে যতটুকু পারছি অবদান রাখার চেষ্টা করছি, সেটি বোলিং-ব্যাটিং যাই হোক না কেন। এটি আমার জন্য দারুণ একটি সুযোগ। আমি এখন উপভোগ করছি তিনে ব্যাটিং করে। বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের ক্রিকেট ক্যারিয়ার অপূর্ণতা ছিল বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি। শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফে শতরানের ম্যাজিক ফিগার গড়ার মধ্য দিয়ে সেই অপূর্ণতা ঘোচালেন সাকিব। এদিন ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেন সাকিব। বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি। এর আগের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ ১১১ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১১৯ বলে ১২টি চার ও এক ছক্কায় ১২১ রান করেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি করার পর সাকিব বলেন, প্রথম বিশ্বকাপ শতক, ভালো লাগা স্বাভাবিক। দল জিতলে আরও ভালো লাগত। দলের পরিকল্পনা তো থাকেই। কিন্তু মারমুখো ব্যাটিং এলে অনেক সময় কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসে না। মাঠ খুব ছোট ছিল। আমাদের বোলারদের বল ব্যাটসম্যানরা সোজাই বেশি খেলেছে। সূত্র: যুগান্তর এনইউ / ০৯ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2XvLp1Q
June 09, 2019 at 09:13AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন