লন্ডন, ১৫ জুন- দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই টনটনের সমারসেট কাউন্টি ক্লাব মাঠে শুরু হয়ে গেল তামিম, মুশফিকদের নেট সেশন। অধিনায়ক মাশরাফি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের সামনে দাড়িয়ে নেটের ব্যাটিং দেখলেন কিছুক্ষণ। তারপর বল হাতে এগিয়ে গেলেন সেন্টার উইকেটের দিকে। যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলে গেলেন, হ্যাঁ ভাই, বল করতে যাই। সেন্টার উইকেটের নেটে বোলিং করবো। কথাটি বলার সময় চোখমুখ বলে দিচ্ছিল, মাশরাফি নেটে বল করতে মুখিয়ে আছেন। নিজেকে ঝালাই করার এতটুকু সুযোগও হাতছাড়া করতে নারাজ টাইগার ক্যাপ্টেন। শরীরী অভিব্যক্তি ও চোখমুখ বলে দিচ্ছিল, নিজেকে মেলে ধরতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ নড়াইল এক্সপ্রেস। এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সময়টা ভাল কাটেনি বোলার মাশরাফির। আগের তিন ম্যাচে তার উইকেট মোটে একটি। সেটাই শেষ কথা নয়। আরও আছে। মাশরাফি আগের তিন ম্যাচে ১০ ওভারের কোটা পূর্ণ করেছেন মাত্র একবার, ইংল্যান্ডের সঙ্গে। প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬ ও ৫ ওভার বোলিং করা মাশরাফি ক্যারিয়ারে চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে এসে প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিন নম্বর ম্যাচে, ইংলিশ ওপেনার বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে। সংক্ষেপে এই হলো বাংলাদেশ অধিনায়কের এবারের বিশ্বকাপের বোলিং পরিসংখ্যান। কেউ কেউ তার এমন বোলিং পারফরমেন্সের সমালোচনা করছেন। কারো চোখে তিনি প্রায় খলনায়ক বনে গেছেন। মাশরাফি যে টিম বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক, পেস বোলার হিসেবেও গত চার পাঁচ বছরে এক নম্বর, সেটা বোধকরি বেমালুম ভুলেই গেছে। কিন্তু পরিসংখ্যান পরিষ্কার বলে দিচ্ছে, সেই ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট মাশরাফিরই। তাকে টপকে যাবার মত পেসার আসলে তৈরী হয়নি। মোস্তাফিজ, রুবেল বা সাইফউদ্দীন- কেউ তা পারেনওনি। এখন এবারের বিশ্বকাপে মাশরাফি কোন কারণে হয়ত প্রথম তিন ম্যাচে স্বরুপে আবির্ভূত হতে পারেননি। তা নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনামুখর হলেও বাংলাদেশ দলের কেউ অমন ভাবতে নারাজ। যিনি মাশরাফিসহ বাংলাদেশের পেসারদের সারাবছর পরিচর্যা করেন, তাদের ভালমন্দ দেখেন, কার কী অবস্থা- সেটা যার নখদর্পনে, সেই কোর্টনি ওয়ালশ কিন্তু মাশরাফির পাশে দাঁড়িয়ে। আজ (শুক্রবার) টনটনের সমারসেটের ইনডোরে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাথে আলাপে মাশরাফি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওয়ালশ বুঝিয়ে দিলেন, মাশরাফি আসলে শতভাগ সুস্থ্য নন। একটু চোট (হ্যামস্ট্রিং) আছে। তা নিয়ে খেলতে গিয়েই হয়ত স্বাভাবিক ছন্দ পেতে সমস্যা হচ্ছে। তবে মাশরাফি হচ্ছে সহজাত ফাইটার। সে লড়াই করেই আবার ফিরে আসবে। আবারও বল হাতে ভাল করে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিবে। ওয়ালশের ভাষ্যে, মাশরাফি একজন বড় যোদ্ধা। তার একটু চোট আছে। অধিনায়ক হিসেবে সে সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে ভালবাসে। সে নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময় অনেক ভালভাল স্পেলও উপহার দিয়েছে। আসলে আমাদের আগে তাকে ভাল করে লক্ষ্য রাখতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে কদিন বিরতি মিলেছে। আমার মনে হয় এই কদিনের বিশ্রামে মাশরাফির চোট খানিক উপশম হবে। সে আবার ছন্দ ফিরে পাবে। মাশরাফি ফুরিয়ে গেছেন, তার বলের ধার কমে গেছে- এমন সমালোচনার বিরোধীতা করে ওয়ালশ বলেন, সে সবসময়ই দলকে সামনে এগিয়ে নিতে চায়। সে এগুনোর মিশনে নেতৃত্ব দিতেও সংকল্পবদ্ধ। কাজেই এত জলদি তার বিষয়ে কোন তীর্যক মন্তব্য না করাই উত্তম। আমার মনে হয় সেটা খুব জলদি হয়ে যাবে। দল চমৎকার শুরুর পর দুটি ম্যাচ হেরেছে। তাতেই সব নিঃশ্বেষ হয়ে যায়নি। সমর্থক ও ভক্তদের উদ্দেশ্যে ওয়ালশের বার্তা, অবশ্যই সমর্থকরা চান জয়, জয় আর জয়। সেটা ঠিক নয়। আমরা দুটি ম্যাচ হেরেছি। আমরা যদি একাধিক ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে এই দলের শক্তিসামর্থ্য এবং গভীরতা সম্পর্কে ধারণা জন্মাবে সবার। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/১৫ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2wWxlTs
June 15, 2019 at 05:34AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top