লন্ডন, ৮ জুন- আমাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচটা ভালো আছে। যদিও গত ম্যাচে সাকিব ছাড়া কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। এর পরও বলব, যেভাবে খেলছে, তারা যেন সেভাবেই খেলে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লম্বা ইনিংস খেলাটা খুব জরুরি। তামিমের রানে ফেরাটাও অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তার লম্বা ইনিংস খেলা দলের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। সৌম্য শুরুটা ভালো করলেও ৩০ বা ৪০ রানে আউট হয়ে যাওয়ায় খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না। তার ইনিংসটাও আরও লম্বা হলে দলের জন্য ভালো হয়। প্রথম ১০ ওভারের পরে রান করা অনেক সহজ। সৌম্য ১০ ওভারের পরও টিকে থাকলে যেন লম্বা ইনিংস খেলার চেষ্টা করে। আশা করি, তামিম কালকের (আজ) ম্যাচেই রানে ফিরে বড় একটা ইনিংস উপহার দেবে। সাকিব-মুশফিক খুব ভালো ছন্দে আছে। বাকিরাও স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছে। শুধু ইনিংসগুলো লম্বা করতে হবে। কেউ একজন সেট হয়ে গেলে সে যেন দায়িত্ব নিয়ে খেলা শেষ করে আসার চেষ্টা করে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লেট অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আর একটু দায়িত্বশীল হলে ভালো করত। যদিও নিউজিল্যান্ড খুবই ভালো বল করেছে। তারা পুরো পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল এবং সফলও হয়েছে। তাদের বোলিংয়ে পরিকল্পনার একটা ছাপ ছিল, কাকে কোন জায়গায় বল করবে, কে কোন জায়গায় দুর্বল আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করেই মাঠে নেমেছিল তারা। এর মধ্যেই আমাদের বের হতে হবে। আমার মনে হয়, স্কোর বোর্ডে আর কিছু রান থাকলে ম্যাচটা অন্যরকম হলেও হতে পারত। ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের বোলিং একই রকম, পেস বোলারের আধিক্য। ইংলিশদের স্পিনও ভালো আছে, একটা লেগ স্পিনার ও একটা অফ স্পিনার আছে। সেদিক থেকে বলব, ইংল্যান্ডের বোলিং অ্যাটাক ভালো। আমার মনে হয়, তাদের ব্যাটিংটা বেশি ভালো। এদিক থেকে বিচার করলে আমাদের বোলিংটা এখনও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। স্পিনাররা খুবই ভালো বল করছে, পেস বোলিংটা এখনও অনেকটাই দুর্বল। মুস্তাফিজের বলে যা একটু থ্রেট (হুমকি) আছে, সাইফুদ্দিন বা মাশরাফি থ্রেট বোলিং করতে পারছে না। এরা যদি শুরুতে ভালো বল করতে না পারে তাহলে দলের জন্য হিতে বিপরীত হবে। প্রথম দিকে উইকেট নেওয়া পেস বোলারদের জন্য খুবই জরুরি। কার্ডিফে বাংলাদেশের খেলার অভিজ্ঞতা খুব বেশি না, এ পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছে। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। মজার ব্যাপার হলো, দুটি ম্যাচই বাংলাদেশ জিতেছে। ওই মাঠে সাফল্যের হার শতভাগ। যদিও বিশ্বকাপে কাল (আজ) ম্যাচ খেলবে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যারা হোমে খেলার সুবিধা পাবে। তবে বাংলাদেশ দলের জন্য একটা ইতিবাচক দিক আছে, গত দুই বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে তারা। চাইলে খেলোয়াড়রা এখান থেকে ইতিবাচক জিনিসগুলো নিতে পারে। এক কার্ডিফে শতভাগ জয়ের রেকর্ড আর টানা দুই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর অভিজ্ঞতা। যদিও ক্রিকেট নির্দিষ্ট দিনের খেলা, কাল (আজ) যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। তবুও আমি বলব, বাংলাদেশ দল জেতার জন্য অলআউট ক্রিকেট খেললে ইতিবাচক ফল পেতে পারে। যতটুকু জানি, কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে প্রথমে ব্যাটিং করা কঠিন। শুরুতে বোলাররা কিছু সুবিধা পায়। শ্রীলংকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে সেটা আমরা দেখেছি। তাই বাংলাদেশ টস জিতলে পরে ব্যাটিং নিলে ভালো করবে। কারণ আমরা ব্যাটিংয়ে শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে টসে জয়-পরাজয় একটা বিষয়। আমার বিশ্বাস, টস জিতলে মাশরাফি ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেবে। ইংল্যান্ডকে ৩০০ রানের মধ্যে আটকে দিতে পারলে চেজ করা সম্ভব হবে। এর পরও বলব, ইংল্যান্ড স্বাগতিক, নিজেদের মাটিতে খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে জিতেছে আর পাকিস্তানের কাছে হেরেছে। বাংলাদেশও দুটি ম্যাচ খেলে প্রথমটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছে। দ্বিতীয় ম্যাচটি হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে। তবে দুটি ম্যাচই ভালো খেলেছে তারা। এদিক থেকে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে ভালো একটা মিল দেখতে পাচ্ছি। তাই বলব, জিততে হলে কাল (আজ) ভালো খেলা খুব বেশি জরুরি। ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে আর একটু দায়িত্বশীল ব্যাটিং আশা করি। ব্যক্তিগত ইনিংসগুলো বড় করতে পারলে যে কোনো দলের জন্য চ্যালেঞ্জিং স্কোর দেওয়া সম্ভব হবে। বোলিংয়ে যতটুকু সামর্থ্য আছে তার পুরোটাই যেন কাজে লাগাতে পারে। স্পিনে মোসাদ্দেক প্রত্যাশার চেয়েও ভালো বোলিং করছে। তার কাছ থেকে এতটা আশাও করেনি কেউ। আসলে তাকে দলে নেওয়া হয়েছে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে, যে ব্যাটিং করে, বোলিংটাও পারে। গত দুই ম্যাচেই দেখা গেছে সে বোলিংটাই বেশি ভালো করছে। মিরাজ খুবই ভালো বোলিং করছে। সাকিব তো বরাবরই ভালো। কার্ডিফের মাঠ ছোট হলে পেস বোলাদের ভালো বল করাটা বেশি জরুরি। লেখক: জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সূত্র: সমকাল এনইউ / ০৮ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2KxkYFg
June 08, 2019 at 04:33AM
08 Jun 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top