লন্ডন, ২০ জুন- বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রিকি পন্টিং বলেছিলেন, এবারের আসরের অন্যতম এক্স ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। মূলত বোলার সাকিবকে নিয়ে মুগ্ধতা ঝরেছিল সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের কণ্ঠে। কিন্তু পন্টিংয়ের মতো আরও অনেককেই চমকে দিয়ে বিশ্বকাপ মাতাচ্ছেন ব্যাটসম্যান সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের দুই সত্তাকেই এখন সমান ভয় পন্টিংয়ের! বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচের দায়িত্বে আছেন এই ব্যাটিং কিংবদন্তি। বাকি সব কাজ ফেলে আপাতত সাকিবকে সামলানোর টোটকা খুঁজতে হচ্ছে তাকে। সাকিবকে নিয়ে গোটা অস্ট্রেলিয়া শিবিরেই যেন আতঙ্কের চোরাস্রোত বইছে। বাংলাদেশ এখন কতটা সমীহ জাগানিয়া দল, এটাই তার বড় প্রমাণ। এবার নিজেদের সত্যিকারের বড় দল প্রমাণের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয়ের পর সেমির স্বপ্ন সবুজ রাখতে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সফলতম দলকে মাটিতে নামানোর চ্যালেঞ্জ। নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে বাংলাদেশের সামনে আজ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে বাকি চার ম্যাচেই জয়ের যে লক্ষ্য, তার শুরুটা ট্রেন্ট ব্রিজেই করতে চান মাশরাফিরা। দুই জয় ও দুই হারের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া এক ম্যাচ মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে আছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া। বাকি চার ম্যাচের দুটিতে জিতলেই চলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য সমীকরণ এত সহজ নয়। শেষ চার ম্যাচের তিনটিতে জিতলেও নিশ্চিত নয় সেমিফাইনাল। নিজেদের ভাগ্য নিজদের হাতে রাখতে জিততে হবে সব ম্যাচ। কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এগিয়ে চলার পথে শিখর থেকে শিখর ছুঁয়ে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। উইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। এমন রেকর্ডরাঙা দুটি জয়ের পর আরেক শিখরে পা রাখার স্বপ্ন দেখাই যায়। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয়। ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই বাংলাদেশের রেকর্ড সবচেয়ে বিবর্ণ। ফল হওয়া ১৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ১৮ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় মোটে একটি। ২০০৫ সালে কার্ডিফে মহাকাব্যিক সেই জয়ের আগে ও পরে অস্ট্রেলিয়াকে আর নাগালেই পাওয়া যায়নি। ২০১৫ বিশ্বকাপ ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুদলের শেষ দুটি ম্যাচই বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। আজও নটিংহামে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। তবে তাতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ার শঙ্কা নেই। বাংলাদেশও বৃষ্টির অনুকূলে এক পয়েন্ট প্রত্যাশী নয়। মাশরাফিদের চাই পুরো দুই পয়েন্ট। পরিসংখ্যান ও ঐতিহ্যে অস্ট্রেলিয়া হয়তো অনেক এগিয়ে, কিন্তু বিশ্বাসের জোরে এতটুকু পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর তাড়নার কোনো কমতি নেই দলে। উইন্ডিজের বিপক্ষে জয়টা প্রত্যাশিত হলেও ৩২১ রানের পাহাড় টপকানোর চ্যালেঞ্জে যেভাবে জিতেছে দল, সেটিই আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বাসের মন্ত্রে অস্ট্রেলিয়া জয়ের চ্যালেঞ্জটাও আর অসাধ্য মনে করছেন না দলের কেউ। যে দলের একজন টুর্নামেন্টের উজ্জ্বলতম মুখ তাদের আর ভয় কিসের। অস্ট্রেলিয়ার তুণে হয়তো ফিঞ্চ, ওয়ার্নার, স্মিথ, স্টার্ক ও কামিন্সের মতো অনেক অস্ত্র আছে, কিন্তু একজন সাকিব আল হাসান নেই তাদের। দুই ফিফটি ও দুই সেঞ্চুরিতে চার ম্যাচে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৩৮৪ রানের পাশাপাশি বোলিংয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন সারথি এখন যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই মূর্তিমান আতঙ্ক। সাকিবকে সঙ্গ দেয়ার জন্য আছেন তামিম, মুশফিক, লিটন, সৌম্য, মোস্তাফিজ, সাইফউদ্দিনরা। অধিনায়ক মাশরাফির অভিজ্ঞতাও গড়ে দিতে পারে ব্যবধান। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য সাকিবকে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল ১০ উইকেট নেয়া সাকিবের। তার স্পিন সামলাতে এ দলের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফরে থাকা বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগারকে নটিংহামে উড়িয়ে এনেছে অস্ট্রেলিয়া। নেটে অ্যাগারকে খেলে সাকিব-পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্মিথ, ওয়ার্নাররা। আর স্টার্করা প্রস্তুত হচ্ছেন ব্যাটসম্যান সাকিবকে সামলানোর। সেই প্রস্তুতি মাঠে মারা গেলেই মঙ্গল! সূত্র: যুগান্তর আর/০৮:১৪/২০ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2IOdgUI
June 20, 2019 at 05:23AM
20 Jun 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top