নয়া দিল্লী, ২৬ জুন- নির্বাচনের কারণেই ধর্ম বদলে হিন্দু ব্যক্তিকে বিয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জনসম্মুখে আনেননি তৃণমূলের টিকিটে এমপি হওয়া পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত জাহান রুহি। খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিনি এমনটা করেন বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এমনটা করার কারণ হিসেবে জানা গেছে, নুসরাতের নির্বাচনি এলাকায় মুসলিম ভোটার বেশি। আর তাদের ভোট টানতে ও নির্বাচনে জিততেই বিয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তিনি চেপে গিয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিল্লিতে পার্লামেন্টে শপথ নিতে তিনি মাথায় লম্বা আর মোটা করে সিঁদুর দিয়ে নিজের বিয়ে ও ধর্ম বদলের বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। রীতিমতো হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েই তিনি ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। এমনকি এদিন সংসদে বাংলায় শপথ নিয়ে তিনি বন্দে মাতরম স্লোগানও দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে, নুসরাত ধর্ম পাল্টে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ খবর জানতে পেরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাকে ভোটের আগে বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আনতে নিষেধ করেন। সূত্র আরও জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বসিরহাট আসনে নুসরাতকে টিকিট দিয়েছিলেন, সেটি রাজ্যের একটি মুসলিম-অধ্যুষিত আসন। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের পোস্টার গার্ল নুসরাত বিয়ে করে হিন্দু হয়ে যাচ্ছেন এ খবর ভোটের মৌসুমে বসিরহাটে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে ভোটপর্ব মিটে যেতেই গত ১৯ জুন তুরস্কের বোদরামে উড়ে গিয়ে মহা ধুমধামে রীতিমতো ডেস্টিনেশন ওয়েডিং সারেন তিনি। সেই বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আরেক অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীও। তিনিও যাদবপুর লোকসভা আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জিতে এমপি হয়েছেন। অবশ্য ভারতের সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী দুই ভিন্ন ধর্মের দুজন মানুষের নিজেদের ধর্ম বজায় রেখেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু নুসরাত সে পথে হাঁটেননি। যদিও বিধান সভায় তিনি নুসরাত জাহান রুহি নামেই নথিভুক্ত হয়েছেন কারণ এ নামেই তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এর আগে এ মাসের গোড়ার দিকে পার্লামেন্টে নতুন এমপি হিসেবে নিজেদের পরিচয়পত্র তুলতে আসেন নুসরাত ও মিমি। এসময় তারা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরে সংসদের বাইরে ছবি তোলেন। সে সব ছবি নিজেদের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন তারা। এ নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল বিস্তর, সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই তাদের ট্রল করেছিলেন। এদিকে নানা আলোচনার-সমালোচনার বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার সংসদ থেকে বের হওয়ার সময় নুসরাত ও মিমিকে ঘিরে ধরেন গণমাধ্যম কর্মীরা। এসময় নুসরাত চেঁচিয়ে হিন্দিতে বলে ওঠেন, স্যার, আপনারা কিন্তু এভাবে আমাদের ঠেলাঠেলি করতে পারেন না। কথাটা বোঝার চেষ্টা করুন প্লিজ। পরে পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কর্মীরা এসে তাদের উদ্ধার করে এবং তাদের হস্তক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত একটা সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রেখে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মিমি-নুসরাত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমদিনেই দুই নায়িকার প্রতি মিডিয়া যে আগ্রহ দেখিয়েছে তাতে বোঝা যায় আগামী পাঁচ বছরে গণমাধ্যম ও সংসদের আগ্রহ ও আকর্ষণের জায়গায় থাকবেন তারা। আর/০৮:১৪/২৬ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2IMfGol
June 26, 2019 at 05:50AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন