ঢাকা, ১৬ জুন- বাবা শাশ্বত, চির আপন। বাবা মানে নির্ভরতার আকাশ আর নিঃসীম নিরাপত্তার চাদর। ভাষা ভেদে হয়তো শব্দ বদলায়, স্থান ভেদে বদলায় উচ্চারণও। কিন্তু বদলায় না রক্তের টান। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। অবশ্য বাবার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার প্রতি বছর বিশ্ব বাবা দিবস পালিত হয়ে আসছে। আজ বিশ্ব বাবা দিবস। বাবা দিবসে স্মৃতিচারণ করেছেন প্রয়াত মহানায়ক বুলবুল আহমেদের যোগ্য কন্যা ঐন্দ্রিলা আহমেদ। বাবার জন্যই আমি আজ অভিনয়ে। তার ব্যক্তিত্ব আমাকে আকৃষ্ট করে। বাবাকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে খুব গভীরভাবে তিনি আমাকে স্পর্শ করেছেন। আমার বাবা বেঁচে থাকার সময় বলেছিলেন- আমি মরে গেলে আমার মেয়ে আমাকে ধরে রাখবে। বুলবুল আহমেদের মেয়ে হিসেবে আমি গর্বিত। আবেগে আপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন ঐন্দ্রিলা আহমেদ। বাবার কথা আমার সবসময় মনে পড়ে। এখনও মনে হয় যে, বাবা আমার সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি যে নেই, এখনও তা বিশ্বাস করতে পারি না। আমার সমস্ত চেতনাজুড়েই তার অস্তিত্ব। বাবাকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তবে কিছু কিছু স্মৃতি বিশেষ হয়ে থাকে জীবনে। ছেলে বেলায় আমি যখন বাবার অফিসে যেতাম, বাবা তার চেয়ারটা ছেড়ে দিয়ে আমাকে সেখানে বসিয়ে দিতেন। আমি সেখানে বসে টেবিলের নিচের কলিংবেল বারবার টিপতাম। অফিস সহকারী এলে তাকে বলতাম চকোলেট, কোক নিয়ে আসুন। অফিসের প্যাডে লিখতাম, ফোন এলেও আমি ধরে কথা বলতাম। বাবা সবসময় আমাকে আম্মি বলে ডাকতেন। অফিসে গেলেই আম্মি কী খাবে, কী লাগবে জিজ্ঞেস করতেন। সেখানে মিটিং চলতো আমি তার মধ্যেই আমার মতো ঘুরে বেড়াতাম। বাবা কিছুই বলতেন না। বাবার সঙ্গে কাটানো এমন অনেক মুহূর্ত আমার জীবনে বিশেষ স্মৃতি হয়ে আছে। নিজের বাবাকে নিয়ে বেশকিছু কাজ করেছেন ঐন্দ্রিলা। একজন মহানায়কের কথা নামে বই লিখেছেন। তৈরি করেছেন প্রামাণ্যচিত্র। ২০১৫ সালে ব্লু-বেরি হোটেলে মহানায়কের দিনগুলি নামে একটি গানের অনুষ্ঠান করেছেন। এগুলোকেই নিজের প্রাপ্তি মনে করছেন ঐন্দ্রিলা। কেবল নিজের মনের মধ্যেই নয়, এই মহানায়ককে সারাদেশের মানুষের মনেই গেঁথে রাখতে চান তিনি। বাঁচিয়ে রাখতে চান যুগের পর যুগ। ঐন্দ্রিলা আরও বলেন, মহানায়ক বুলবুল আহমেদের মেয়ে হতে পারাটা অন্য যে কোনো পরিচয়ের চেয়ে বেশি তৃপ্তির ও গর্বের। বাবার কথা বলতে গেলেই ক্ষোভে-বেদনায় মনটা খারাপ হয়ে যায়। বাবা ছিলেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি। মহানায়ক হিসেবেও পরিচিত তিনি। অথচ বাবার জন্ম ও মৃতু্যবার্ষিকী কেটে যায় অনেকটা নীরবেই। কিছু গণমাধ্যম ছাড়া আর কোথাও তাকে নিয়ে কোন আয়োজন চোখে পড়েনি। যেন বুলবুল আহমেদ বলে কেউ ছিলেনই না এ দেশের অভিনয়ের আঙ্গিনায়। যদিও এসব নিয়ে বলার ইচ্ছে করে না। চারদিকে গুণীর কদর কমছে। তবে গুণীদের প্রতি এমন নীরবতা হতাশার। আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা আমাদের শ্রেষ্ঠ মানুষের উপস্থাপনা করছি না। তারা অনুপ্রেরণার জন্য আদর্শ মানুষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। একজন মহানায়ক কালে কালে জন্মায় না। এর মূল্যায়ন করা উচিত। আর/০৮:১৪/১৬ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2KkYFU2
June 16, 2019 at 10:42AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন