লন্ডন, ০১ জুলাই- নববর্ষে বৈশাখী রঙে সাজে বাংলার প্রকৃতি, একই রঙে সাজে সারা দেশ ও জাতি। বৈশাখী রঙ রূপের এই ছটা শুধু বাংলা নামের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডেই নয়, ছড়িয়ে পড়ে দেশের সীমানা পেড়িয়ে প্রবাসেও। যেখানেই বাঙালি, সেখানেই রঙের ফোয়ারা। এই রঙিন ফোয়ারার ঝরণাজলে অবগাহন করতে কে না চায়? বাস্তবতার নির্মম কশাঘাতও দেশের নববর্ষের সেই রঙের রেণু গায়ে মাখা থেকে বঞ্চিত করতে পারে না প্রবাসীদেরও। নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই ব্রিটেনে টানা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চললেও আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এর মূল উৎসব হয় ব্রিটিশ সামার টাইমে, যা বাংলাদেশের মধ্য আষাঢ়। সারা বছর যে মিলন মেলাটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন পুরো ইউরোপের প্রবাসী বাঙালিার, সেই কাঙ্খিত মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে রবিবার। বছরের কাঙ্খিত এই দিনটি এবারও উপভোগ করেছেন ব্রিটেনসহ ইউরোপে বসবাসরত গৃহাকূল বাঙালিরা। মধ্য আষাঢ়ে তৃতীয় বাংলাখ্যাত টাওয়ার হ্যামলেটসের উইভার্স ফিল্ডে আয়োজিত বাঙালির প্রাণের এই উৎসব বৈশাখী মেলায় জড়ো হয়েছিলেন শিকড় পাগল বাঙালিরা। হাজারো মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ছিল এবারের মেলায়। মেলায় জড়ো হয়েছিলেন নতুন প্রজন্মের অনেক তরুণ-তরুণীও। বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে বাঙালিরা সবচেয়ে বড় এই মিলনমেলা ব্রিটিশ মূলধারায় স্বীকৃত অন্যতম বড় কার্নিভ্যাল।উপচেপড়া ভিড় ছিল মেলায়, ছিল বাংলাদেশ থেকে আগত ও স্থানীয় শিল্পীদের মঞ্চ মাতানো পরিবেশনা। মেলায় দর্শকদের মাতাতে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী লাভলী দেব, ইমরান ও বেলি আফরোজ। ছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ প্রজন্মের হার্টথ্রব শিল্পী, আরবান রাইজিং স্টার নিশসহ স্থানীয় শিল্পী আলাউর রহমান, হাসি রানি, আমির মোহাম্মদ ও সুজানা আনসার। মঞ্চ উপস্থাপনায় ছিলেন রনি মির্জা ও বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্কের নাদিয়া আলী। মেলায় উপস্থিত ছিলেন-স্থানীয় এমপি রোশনারা আলী, লন্ডনে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, ডেপুটি স্পিকার আহবাব হোসেইন, কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলামসহ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অধিকাংশ কাউন্সিলার, সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে মেলা শুরু হয় বেলা ১২টায়। টাওয়ার হ্যামলেটসের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়। বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে র্যালি গিয়ে মিশে ওয়েভার্স ফিল্ডে। এরপরই মেলার মূল মঞ্চ থেকে ধারাবাহিকভাবে পরিবেশন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লন্ডনের স্থানীয় কিছু সংগঠন মূল মঞ্চের বাইরে আলাদাভাবে করেছে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সংগঠনগুলোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় ছিল বাঙালি সংস্কৃতির অকৃত্তিম ছোঁয়া। ব্রিটিশ-বাংলা চেস এসোসিয়েশন বিশাল আকারের একটি দাবা সেট সামনে রেখে সাজিয়েছিলো তাদের স্টল। বসেছিলো খাবারসহ রকমারি পণ্যের দোকান। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপভোগ করে এক সময় অনিচ্ছা সত্বেও ভাঙতে হয় মিলন মেলা। পুরো নতুন বছরটিই যেন সুন্দরে অবগাহন করে করেই অতিবাহিত হয়, বৈশাখী রঙ্গের হাওয়ায় ভেসে ভেসেই যেন আরেকটি বছরের সীমানা দ্বারে পৌছা যায়, এমন প্রার্থনা করে করেই অবশেষে বাড়ির পথ ধরেন সবাই। আর এস/ ০১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/300OyYw
July 01, 2019 at 06:19AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন