লন্ডন, ১১ জুলাই- সেমিফাইনালের লাইনআপ চূড়ান্ত হওয়ার পরই সবার মনের কথাটা বলে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের চেয়ে ভালো কিছু আর হতে পারে না। যথার্থই বলেছেন ফিঞ্চ। তবে ক্রিকেটের সবচেয়ে বনেদি দ্বৈরথটা ফাইনালে হলে নিঃসন্দেহে আরও ভালো হতো। লিগপর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অস্ট্রেলিয়া হেরে না বসলে সেই সম্ভাবনা ছিল যথেষ্ট। কিন্তু যা হয়নি তা নিয়ে আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যাত্রা শুরু যে দুটি দলের হাত ধরে, তাদের সাক্ষাৎ যেখানেই হোক উত্তেজনা, রোমাঞ্চের রসদে টান পড়ে না কখনও। ক্রিকেট বিধাতা এবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে শেষ চারে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ায় একদিক থেকে বরং ভালোই হয়েছে। এ যে ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল! বার্মিংহামের এজবাস্টনে আজ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দেখা হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের। ২২ গজে জমজমাট লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে গ্যালারির অগ্নিগর্ভ আবহ মিলিয়ে জিভে জল আনার মতোই এক ম্যাচ বটে। অ্যাশেজের রঙিন সংস্করণে ফেভারিট খোঁজাটা বোকামি। তবে ক্রিকেটবোদ্ধারা ম্যাচটিকে ইংল্যান্ডের জন্য অগ্নিপরীক্ষা মনে করছেন। কারণ ইতিহাস। রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে কখনও হারেনি। অন্যদিকে তিনবারের রানার্সআপ ইংল্যান্ড ২৭ বছর পর খেলছে সেমিফাইনালে। ১৯৯২ আসরের পর বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে আর হারাতে পারেনি তারা। এবারও লিগপর্বের দেখায় অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৬৪ রানে। মুদ্রার উল্টো পিঠের ছবিটি আবার অন্যরকম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ১২টি ওয়ানডের ১০টিই জিতেছে ইংল্যান্ড। আজ যেখানে খেলা সেই এজবাস্টনে ১৯৯৩ সালের পর কোনো ওয়ানডে জেতেনি অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে এই মাঠে শেষ ১০ ম্যাচই জিতেছে ইংল্যান্ড। লিগপর্বের শেষ দুই ম্যাচে নকআউটের চাপ সামলে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে মানসিক বাধার দেয়ালও গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইয়ন মরগ্যানের দল। তাই শুধু কাগুজে পরিসংখ্যান দিয়ে উপসংহারে পৌঁছানোর সুযোগ নেই। দিন শেষে দুই পুরনো শত্রুর শ্রেষ্ঠত্বের মীমাংসা হবে মাঠেই। সেখানে শক্তির বিচারে কেউ কারও চেয়ে কম নয়। অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চের মতো ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয়ও আছেন আগুনে ফর্মে। তবে জো রুট, ইয়ন মরগ্যান, জস বাটলার ও বেন স্টোকসকে নিয়ে সাজানো ইংল্যান্ডের মিডলঅর্ডার দৃশ্যত বেশি ভয়ংকর। এখানে একটু পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। চোটের থাবায় উসমান খাজা ছিটকে যাওয়ায় অপরীক্ষিত পিটার হ্যান্ডসকাম্বকে আজ খেলাতে বাধ্য হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও নিজেদের সেরা ছন্দে নেই। বোলিংয়ে আবার এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের আর্চার, উডদের চেয়ে ঢের ভয়ংকর মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। নয় ম্যাচে এরই মধ্যে ২৬ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। আজ এক উইকেট পেলেই পূর্বসূরি গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারে নতুন রেকর্ড গড়বেন স্টার্ক। তবে রেকর্ড নয়, অস্ট্রেলিয়ার গতি তারকার ধ্যান-জ্ঞান এখন শিরোপা। বল টেম্পারিং-কাণ্ডে টালমাটাল হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া দল বিশ্বকাপে যেভাবে স্বরূপে ফিরেছে তাতে শিরোপা স্বপ্ন তারা দেখতেই পারে। আর ইংল্যান্ড ফাইনালের মঞ্চে পা রাখার জন্য প্রস্তুত হয়েছে চার বছর ধরে। ওয়ানডে খেলার ধরনটাই পাল্টে দিয়েছে তারা। দীর্ঘ প্রস্তুতি কতটা বদলাতে পেরেছে ইংল্যান্ডকে, আজ তার আসল পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি। তবে বার্মিংহামে আজ বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তাতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এছাড়া রিজার্ভ ডে তো আছেই। সূত্র: যুগান্তর এমএ/ ০৯:১১/ ১১ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2XEUYQl
July 11, 2019 at 05:33AM
11 Jul 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top