লন্ডন, ১২ জুলাই- দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে করুণভাবে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে যায় অস্ট্রেলিয়ার। অথচ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ পাঁচ শিরোপা জিতেছে অজিরা। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হেরেও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ অবশ্য হতাশ হচ্ছেন না। তিনি এই হার থেকে ইতিবাচকতা খুঁজে নিচ্ছেন। বল টেম্পারিং ঘটনায় স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার এক বছরের মতো নিষিদ্ধ ছিলেন। সেই অজিরাই নানা উত্থান পতনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিক বিশ্বকাপের আগে দিয়ে। তাই হতাশাবাদীদের দলে থাকছেন না এই অজি অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ মনে করেন, বিশ্বকাপের এই ক্যাম্পেইনে ইতিবাচক খুঁজে নেওয়ার মতো অনেক কিছু আছে। ইংল্যান্ডে সর্বশেষ যেমনটি ছিলাম তার থেকে অনেক দূরে এগিয়েছি। শেষ ৬ মাসে যদি দেখেন তাহলে আমাদের দলটা অনেক কিছুই দেখিয়েছে। তবে এটা সত্যি কষ্টতো হয়-ই। ইংল্যান্ডের পেসারদের কৃতিত্ব দিয়ে ফিঞ্চ বলেন, ওরা শুরুটা যেভাবে করেছে তাতে আমাদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো কষ্টকর ছিল। ওরা স্টাম্প লক্ষ্য করে দুর্দান্ত বল করেছে। লেন্থও ছিল অসাধারণ। তারা এক কথায় দারুণ ছিল আজ (বৃহস্পতিবার), আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে। তবে এটা সত্যি যেভাবে আমরা চেয়েছিলাম, সেভাবে হয়নি। পুরোপুরি পরাস্ত হয়েছি। ওরা বল হাতে যেভাবে মোমেন্টাম গড়ে নিয়েছে, সেটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী ১৪ জুলাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে ফাইনাল খেলবে ইংল্যান্ড। ২৭ বছর পর ফাইনালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এরই সঙ্গে ২৭ বছর পর চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে তারা। সর্বশেষ ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ফাইনালে খেলেছিল ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২২ রানে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তাদের। বার্মিংহামের এজবাস্টনে আয়োজিত আজকের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এরপর ইংল্যান্ডের বোলারদের তোপের মুখে এক ওভার বাকি থাকতেই মাত্র ২২৩ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। ফিঞ্চ বাহিনীর বিপক্ষে বেশ বিধ্বংসী ছিলেন ক্রিস ওকস, জফরা আর্চার এবং আদিল রশিদ। ওকস ৮ ওভারে ২০ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেছেন। ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে সমান সংখ্যক উইকেট তুলে নিয়েছেন লেগ স্পিনার রশিদ। দারুণ বোলিং করেছেন ক্যারিবিয়ান বংশোদ্ভূত আর্চারও। ১০ ওভারে মাত্র ৩২ রান গুনেছেন তিনি এবং নিয়েছেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ইংল্যান্ডের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে স্টিভেন স্মিথ ছাড়া আর কেউই সুবিধা করতে পারেননি। স্মিথ ১১৯ বলে ৮৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস উপহার দিয়েছেন। যেখানে ৬টি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে ক্যারির ব্যাট থেকে। এছাড়াও ২৯ রান করেছেন মিচেল স্টার্ক। বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় স্বল্প পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। অজিদের ছুঁড়ে দেয়া ২২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ১২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন দুই ইংল্যান্ড ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো। মিচেল স্টার্কের বলে ৩৪ রান করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে বেয়ারস্টো ফিরলে এই জুটি ভাঙ্গে। এরপর ১৪৭ রানের মাথায় দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা রয়কে (৮৫) উইকেট রক্ষক ক্যারির হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান প্যাট কামিন্স। জো রুট এবং অধিনায়ক ইয়ন মরগানের ব্যাটে পরবর্তীতে অবশ্য বিপদে পড়তে হয়নি ইংল্যান্ডকে। এই দুই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থেকে ১০৭ বল হাতে রেখে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। দুই জনই ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রান নিয়ে। আগামী ১৪ জুলাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে ফাইনাল খেলবে ইংল্যান্ড। সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ২২৩/১০ (৪৯ ওভার) (স্মিথ- ৮৫, ক্যারি-৪৬; ওকস-৩/৪২, রশিদ-৩/৫৪) ইংল্যান্ড: ২২৬/২ (৩২.১ ওভার) (রয়- ৮৫, বেয়ারস্টো-৩৪; কামিন্স- ১/৩৪, স্টার্ক- ১/৬৪) এনইউ / ১২ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2LRfWEb
July 12, 2019 at 09:04AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন