ঢাকা, ৮ জুলাই - সাবেক স্বামী বৈমানিক পারভেজ সানজারির ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন কণ্ঠশিল্পী মিলা। পুলিশের জালে ধরা পড়া এসিড নিক্ষেপকারী পিটার হালদার রিমাণ্ডে স্বীকার করেছেন, মিলার নির্দেশেই তিনি পারভেজের নিন্মাংশে এসিড ছুঁড়ে মারেন, যাতে পারভেজের গোপনাঙ্গসহ শরীরের ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়। এছাড়া এর আগেও একাধিকবার পারভেজের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন পিটার। সেসবও নাকি করা হয়েছিল মিলার নির্দেশেই। পিটার হালদার মিলার দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তিনি মিলার মিউজিক রোবট ব্যান্ডদলে জিনিসপত্র বহনের কাজ করতেন। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মিলার বিশ্বস্ততা অর্জন করেন এবং দেহরক্ষীর দায়িত্ব পান। পিটারকে কাজে এনেছিলেন তার এক মামাতো ভাই। যিনি মিলার ব্যান্ডদলে কি-বোর্ড বাজাতেন। পারভেজকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় গত বুধবার রাজধানীর একটি এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন পিটার। পুলিশকে দেয়া জবানবন্দিতে পিটার জানান, গত মে মাসে মিলা তাকে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, পারভেজ সানজারি তার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। তাকে শাস্তি দিতে পারবে কি না। পিটার সে সময় মিলাকে আশ্বস্ত করেন এবং কিছু একটা করবেন বলে জানান। এরপর গত ২৬ ও ২৭ মে পরপর দুদিন এসিডের বোতল নিয়ে তিনি পারভেজের উত্তরার বাসার সামনে রাত ১০টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকেন কিন্তু একদিনও পারভেজের দেখা পাননি। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। পিটার তার কাজে সফল হন গত ২ জুন। এদিন এসিডের বোতল নিয়ে পিটার আবার পারভেজের বাসার সামনে গিয়ে আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকেন। পারভেজ মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে কিছুদূর গেলে পেছন থেকে তাকে ভাইয়া বলে ডাকেন। পিটারকে চিনতে পেরে পারভেজ দাঁড়ালে সামনে গিয়েই তার গোপনাঙ্গ লক্ষ্য করে এসিড ছুঁড়ে মারেন পিটার। এরপর দৌড়ে রেলস্টেশনের দিকে পালিয়ে যান। পুলিশের সংগ্রহ করা সিসিটিভির ফুটেজেও ২ জুন পিটারকে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা চারদিক ছড়িয়ে পড়লে গা ঢাকা দেন পিটার। পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে তিনি বলেন, মিলার পরামর্শেই তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে যান। কিছুদিন পর ঢাকায় এসে যোগাযোগ করলে মিলা ক্যান্টনমেন্টে তার এক বন্ধুর বাসায় পিটারকে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। পিটার পুলিশের কাছে এও বলেছেন, ধরা পড়লে তিনি যেন এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় মিলার নাম না জড়ান। পিটারকে এটা বলতে শিখিয়ে দেন যে, তিনি নিজের ইচ্ছায়ই পারভেজকে এসিড মেরেছেন। ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পিটারের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আরও তথ্য যাচাইয়ের পর তাকে ও কণ্ঠশিল্পী মিলাকে আসামি করে চার্জশিট তৈরি করা হবে। অন্যদিকে পারভেজ অভিযোগ করেন, ডিভোর্সের পর মিলা তাকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখান। কেন তাকে ডিভোর্স দেয়া হলো মোবাইল ফোনে অসংখ্য এসএমএসের মাধ্যমে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধপরায়ণ হয়েই এসডি নিক্ষেপের মতো ন্যাঙ্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। দীর্ঘ ১০ বছর প্রেম করার পর ২০১৭ সালের ১২ মে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মিলা ও পারভেজ সানজারির। কিন্তু বিয়ের অল্প কিছুদিন পরই তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। পারভেজের বিরুদ্ধে মিলা একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। তার পরিবারের বিরুদ্ধে তোলেন নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ। দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছালে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মিলাকে তালাকের নোটিশ পাঠান পারভেজ। আইন অনুযায়ী, ওই বছরের ২২ মে সেই তালাক কার্যকর হয়। এর বিপরীতে ২০১৭ সালের অক্টোবরে পারভেজের বিরুদ্ধে উত্তরা-পশ্চিম থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করেন মিলা। এই মামলায় গত ৬ অক্টোবর পারভেজ গ্রেপ্তার হন, পরে জামিনও পান। এছাড়া বিবাহবিচ্ছেদের বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতেও পারভেজের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন মিলা। কিন্তু দীর্ঘদিন এসব মামলায় হাজিরা দিতে যান না গায়িকা। যার কারণে একাধিকবার তার নামে সমন পাঠানো হয়েছে। নতুন করে আবার ফাঁসতে চলেছেন সাবেক স্বামীর ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায়। সূত্র : আমাদের সময় এন এইচ, ৮ জুলাই.



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2xwnFPV
July 08, 2019 at 08:17AM
08 Jul 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top