রোম, ১৭ সেপ্টেম্বর- রোমের রাস্তায় দুই হাজার ইউরোসহ একটি মানিব্যাগ কুড়িয়ে পান বাংলাদেশি তরুণ মুসান রাসেল। সেটি তার প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পর তাকে পুরস্কৃত করার প্রস্তাবও সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন মুসান। এরপর তাকে নিয়ে আলোচনা ও তার প্রশংসা করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ইটালির একাধিক গণমাধ্যমে। খবর বিবিসির। সাত বছর আগে বাংলাদেশ থেকে রোমে আসেন মুসান রাসেল। রোমের রাস্তায় তিনি একটি লেদারসামগ্রীর স্টল চালান। ইটালির লা রিপাবলিকা পত্রিকায় মুসানের সাক্ষাৎকার ও ছবি ছাপা হয়েছে। সেখানে তিনি পুরো ঘটনা বর্ণনা করে জানান, গত শুক্রবার তিনি রাস্তায় একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। সেটি হাতে নিয়ে দেখতে পান ভেতরে অনেকগুলো নোট, ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য মূল্যবান কাগজপত্র আছে। এরপর আর কিছু না ভেবেই মানিব্যাগটি নিয়ে তিনি চলে যান নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনে। মানিব্যাগটি পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর পুলিশ মানিব্যাগের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার কাছে সেটি ফিরিয়ে দেন। মানিব্যাগের মালিক মুসান রাসেলের সততায় অভিভূত হয়ে তাকে পুরস্কৃত করতেরতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি এ প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন। লা রিপাবলিকা পত্রিকা মুসানের কাছে জানতে চেয়েছিল, প্রথম যখন তিনি মানিব্যাগটি খুঁজে পান, তখন তিনি কি ভেবেছিলেন? উত্তরে মুসান বলেন, মানিব্যাগের ভেতরে ছিল কয়েকটি ক্রেডিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং আরও কিছু কাগজপত্র। টাকা তো ছিলই। কত টাকা বলতে পারবো না, কারণ আমি গুণে দেখিনি। এসব দেখে ভাবলাম, যিনি এগুলো হারিয়েছেন, তিনি নিশ্চয়ই খুব সমস্যায় পড়েছেন। এরপর মানিব্যাগটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গেলাম। ইটালিয়ান ভাষাটা ভালো বলতে পারেন না মুসান। এরপরও তিনি তার বক্তব্য পুলিশকে বোঝাতে সক্ষম হন। মানিব্যাগের মধ্যে একতাড়া নোট দেখে অবাক হয় পুলিশ। তখনই তিনি প্রথম জানতে পারেন যে ভেতরে দুই হাজার ইউরো আছে। মানিব্যাগটি জমা দেওয়ার জন্য পুলিশ তাকে ধন্যবাদ জানায়। জবাবে মুসান বললেন, এটা আমার কর্তব্য। এই মানিব্যাগ আমি ঘটনাচক্রে খুঁজে পেয়েছি। আর এটা তো আমার নয়। মুসান জানান, প্রথম জীবনে তাকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। দিন-রাত খাটতে হয়েছে। দুবছর ধরে তিনি লেদার স্টলটি চালান। মানিব্যাগটি যার, তার সঙ্গে যখন দেখা হলো, তখন কী ঘটলো- জানতে চাইলে মুসান বলেন, মানিব্যাগটি পুলিশের কাছে দিয়ে কাজে ফিরে আসি। কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ ফোন করে জানায়, ওয়ালেটের মালিক একজন ব্যবসায়ী। তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। প্রথমে আমি যেতে চাইনি। কারণ সবাই আমার দিকে মনোযোগ দিক- এটা চাচ্ছিলাম না। তবে শেষপর্যন্ত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ওই ভদ্রলোক আমার দেখা পেয়ে আসলেই খুব খুশি হয়েছিলেন। আমাকে ধন্যবাদ জানাতে পেরে খুশি ছিলেন। আমি অবশ্য তাকে বলেছি, এর কোন দরকার ছিল না, আমি এমন ব্যতিক্রমী কিছু করিনি। কিন্তু তিনি আমাকে একটা পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। আমি যে পুরস্কার চাই, সেটাই দিতে চেয়েছিলেন। কেন তিনি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন- জানতে চাইলে মুসান বলেন, কারণ এটা কোনো সন্মানের ব্যাপার হতো না। আমি বরং তাকে আমার স্টলে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বলেছি, আমি খুশি হবো, যদি তুমি আমার দোকানের কাস্টমার হও। আমি যে মানিব্যাগটি খুঁজে পেয়েছি, সেটা ঘটনাচক্রে। এটার জন্য আমাকে পুরস্কার দেওয়ার কিছু নেই। আর/০৮:১৪/১৭ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Ar8qZQ
September 17, 2019 at 06:58AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন