ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর - হঠাৎ করেই জাতীয় ক্রিকেট দলের সুযোগ পেয়ে গেলেন আমিনুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচে তাঁর মাঠে নামাটা বড় একটা চমকই। অভিষেকটা দুর্দান্তই হয়েছে এই লেগ স্পিনারের। ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট, ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে দারুণ পারফরম্যান্সই। আমিনুলের অভিষেকটা আরও চমক জাগাচ্ছে কারণ, লেগ স্পিনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হলেও তিনি আসলে একজন ব্যাটসম্যান। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে তিনি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছেন। আমিনুল একা নন, অতীতে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক অভিষেকই বড় চমক হয়ে এসেছিল। মাঠে নেমেই যারা পরিণত হয়েছিলেন গণমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রে। মাহমুদুর রহমান (বিকাশ রঞ্জন দাশ) বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের দল ঘোষণার পর নানা ধরনের বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু একটি নাম নিয়ে বিতর্ক না থাকলেও ছিল আকাশছোঁয়া কৌতূহল। কে এই বিকাশ রঞ্জন দাশ? বাঁ হাতি এই পেসারকে হঠাৎ করেই জাতীয় দলে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামার আগে বিকাশের ঝুলিতে ছিল মাত্র একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। তিনি অভিষেক টেস্টে খেলেছিলেন, এবং একটি উইকেটও নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর আর কখনোই জাতীয় দলে সুযোগ মেলেনি তাঁর। কিছুদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে খেলা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যাংকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, ধর্মান্তরিত হয়ে নাম নিয়েছেন মাহমুদুর রহমান। মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের আন্তর্জাতিক অভিষেক ছিল চমক-জাগানিয়া। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা ছাড়াই তিনি সুযোগ পেয়ে যান টেস্টে, সেটি ২০০১ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এর আগে অবশ্য খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলে। তাঁর উত্থানের পেছনে বড় অবদান ক্যারিবীয় গ্রেট অ্যান্ডি রবার্টসের। ২০০১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়া কাপে খেলার সময় মাশরাফির বোলিং অনেকেরই চোখে পড়েছিল। পরবর্তীতে রবার্টস বাংলাদেশে একটি কোচিং ক্যাম্পে মাশরাফির বোলিং দেখে মুগ্ধ হন। তাঁর পরামর্শেই মাশরাফিকে এ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেখান থেকে জাতীয় দলের ঢুকে পড়তে খুব বেশি দিন লাগেনি তাঁর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টই ছিল তাঁর প্রথম প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। তালহা জুবায়ের ২০০২ সালের ২১ জুলাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার খেলতে নেমেই বেশ হইচই ফেলে দেন তালহা জুবায়ের। ১৬ বছরের এক নবীন আনকোরা ফাস্ট বোলারের হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক খালেদ মাসুদ। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতেও খুব একটা সময় নেন নি তালহা। প্রথম স্পেলেই এনে দিয়েছিলেন কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু! কলম্বোর পি সারা ওভালের নিষ্প্রাণ উইকেটেও সেদিন গতির ঝড় তুলেছিলেন তালহা! অথচ অভিষেকের আগে তিনি খেলেছিলেন মাত্র একটি প্রথম শ্রেণি ও তিনটি লিস্ট এ ম্যাচ। পরবর্তীতে চোটের কাছে হার মেনে ক্যারিয়ার খুব লম্বা করতে পারেননি সম্ভাবনাময় এই পেসার। নাজমুল হোসেন মাশরাফির মতোই বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নেমেই প্রথম প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট এ ম্যাচ খেলেছিলেন পেসার নাজমুল হোসেনের। ২০০৪ সালে বার্মিংহামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক ডানহাতি পেসার নাজমুলের। এর আগে অবশ্য তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছিলেন। চোটের কারণে ক্যারিয়ার লম্বা করতে পারেননি। অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২ টেস্ট আর ৩৮ ওয়ানডে খেলেই শেষ হয়েছে তাঁর ক্যারিয়ার। জুবায়ের হোসেন নেটে বল করেই কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহের মন জয় করে নিয়েছিলেন লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট নেন ৫ উইকেট। ক্যারিয়ারে ৬টি টেস্ট খেলে ১৬ উইকেট নিয়েছেন। তবে নানা কারণে তাঁর ওপর আর আস্থা রাখতে পারেনি বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। ঘরোয়া ক্রিকেটেও খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ মেলেনি তাঁর। অঙ্কুরেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের এক সম্ভাবনাময় লেগ স্পিনারের ক্যারিয়ার। সূত্র : প্রথম আলো এন এইচ, ২০ সেপ্টেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/30bS2fj
September 20, 2019 at 12:27PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top