ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর- কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় ঢাকার ক্লাবপাড়া। তবে খেলা নয়, ক্যাসিনোর সুবাদে। খেলাধুলার জন্য ক্লাবগুলোর জন্ম হলেও তা যেন ভুলেই গিয়েছেন কিছু ক্লাবকর্তা। বিভিন্ন ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠেছে ক্যাসিনো বসিয়ে কোটি কোটি টাকা আয়ের অভিযোগ। আলোচনার শুরুটা ইয়ংমেনস ফকিরাপুল ক্লাব করে দিয়েছে। অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে ক্লাব সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হয়েছেন। অথচ দুই বছর আগে অর্থসংকটের কথা বলে প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল থেকে নাম কাটিয়ে নিয়েছিল ক্লাবটি। ইয়ংমেনস ফকিরাপুল দেশের ক্লাব ফুটবলে পরিচিত নাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খেলোয়াড় তৈরির কারখানা হিসেবে পরিচিত ক্লাবটি। এই ক্লাবের জল-হাওয়ায় বড় হয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক মোহাম্মদ পনির, ডিফেন্ডার হাসান আল মামুন, নুরুল হক মানিক, বর্তমান মহিলা দলের কোচ গোলাম রব্বানি ছোটনসহ অনেকেই। বড় বড় ক্লাবের কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ খ্যাতি ছিল তাদের। সেই ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে বেশ আগে। মাঝে তো দখলই হয়ে গিয়েছে ক্লাব। এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলেও নেই তাদের নাম। ২০০৭ সালে দেশের ফুটবল খাতাকলমে পেশাদার যুগে নাম লেখানোর পরে একবারও শীর্ষ লিগে খেলা হয়নি তাদের। অথচ দ্বিতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২০১৭ সালে প্রিমিয়ার লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল তারা। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ নেই বলে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল তারা। তাদের পেছনে দ্বিতীয় হয়ে প্রিমিয়ারে ওঠা সাইফ স্পোর্টিং এখন বাংলাদেশের ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি। ২০১৭-১৮ মৌসুমে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ইচ্ছে ছিল ১৩ দল নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ চালু করার। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হওয়া ইয়ংমেনস শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় বাফুফে। পেশাদার লিগ কমিটির সভাপতি ও বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেছিলেন, তারা (ইয়ংমেনস ফকিরাপুল) আমাদের কাছে চিঠি দিয়েছে। অর্থনৈতিক এবং ক্লাবের অন্যান্য সমস্যা থাকায় তারা এ বছর দল গঠন করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য প্রায় সব দলেরই প্রচেষ্টা থাকে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়েও প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ হাতছানি করা বিরল। অর্থের অভাবকে সামনে এনে সে কাজ করেছিল ইয়ংমেনস। সে কথা আজও স্বীকার করলেন দলটির ফুটবল-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা, আমাদের দলটা দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। প্রিমিয়ার লিগে খেলার ইচ্ছাও ছিল। কিন্তু অর্থের জন্য আমরা প্রিমিয়ার লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিই। ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা সাব্বির হোসেন। র্যাবের অভিযানের পর ক্লাবপাড়ায় তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে সাধারণ সম্পাদকের। ক্লাবের বর্তমান দুরবস্থা দেখে খুবই হতাশ ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর হোসেন। ক্লাবের বর্তমান এই পরিস্থিতিতে ক্রীড়াঙ্গনেরই ক্ষতি দেখছেন মঞ্জুর হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘদিন আমি ইয়ংমেনস ফকিরাপুল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। ক্লাবটা আমার কাছে সন্তানের চেয়েও বড় কিছু। ক্যাসিনোর খবরটা পাওয়ার পর মনে হচ্ছে, আমার ছেলে বা আমার পরিবারের কেউ দুর্ঘটনায় পড়েছে। দেশের ক্রীড়াঙ্গন এখন হুমকির মুখে। শুধু ইয়ংমেনস নয়, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, মোহামেডান স্পোর্টিং, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, ভিক্টোরিয়া ক্লাবেও অবৈধ ক্যাসিনো চলত বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো আর/০৮:১৪/২২ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/34Z5SAh
September 22, 2019 at 06:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন