ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর- শুরুর ধাক্কা, অস্থিরতা, স্থবিরতা, আড়ষ্টতা আর অনুজ্জ্বলতা কাটিয়ে সাকিবের দল ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটিয়েই তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আসরের ফাইনালে। আর কাঙ্খিত ফাইনালের পথে শনিবার আফগানিস্তানকেও প্রায় সহজে হারিয়েছে টাইগারররা। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) শেরে বাংলায় ফাইনালে রশিদ খানের আফগান বাহিনীর মুখোমুখি হবেন সাকিব, মুশফিক, রিয়াদরা। কিন্তু তারপরও কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। অনেকের মুখেই ঘুরেফিরে প্রশ্ন, আচ্ছা নির্বাচকরা এত অস্থির কেন? কেউ একটু খারাপ খেললেই ব্যস, তাকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে নিয়ে নিচ্ছেন? একটুও তর সইছে না তাদের। কাউকে এক টানা দু-তিনটি সিরিজে অন্তত ৫-৭ টি ম্যাচ খেলানো যায় না? তাহলেই তো বোঝা যাবে, তার মান, মেধা আর শক্তি-সামর্থ্য কী? এক-দুই ম্যাচ খেলার পর বাদ দিলে প্রশ্ন থেকেই যায়। তখন প্রশ্ন ওঠে, যাকে বাদ দেয়া হলো, তাকে আর কটি ম্যাচ সুযোগ দিয়ে দেখলেই তো সত্যিকার কারো মান যাচাই করা যেত। এভাবে এক দুই ম্যাচ খেলার পর একজনকে নেয়া আর আরেকজনকে বাদ দেয়া মানে এত রদবদল হলে কি চলে? তাহলে যে দলের ভারসাম্য ও স্থিতি নষ্ট হয়। সংশ্লিষ্টরা কি তা মাথায় আনছেন না? বাংলাদেশ খারাপ খেললেই একাদশে পরিবর্তন আসে। একজনের বদলে আরেকজনকে দলে ভেড়ানো হয়। সে খারাপ খেললে তাকে পাল্টে আবার আরেকজনকে নেয়া হচ্ছে। এতে নতুনের ছাড়াছড়ি হচ্ছে। কিন্তু দলে ভারসাম্য আসছে না কিছুতেই। নির্বাচকরা কেন এমন করছেন? তবে কি তারা চান না দলে স্থিতি আসুক ক্রিকেটাররা একটু বেশি সময় জাতীয় দলে থাকুক এবং খেলে ধাতস্থ হোক? এভাবে ঘন ঘন ক্রিকেটার রদবদলে দলের উন্নতি না অবনতি কোনটা হচ্ছে? জাগো নিউজের পক্ষ থেকে এ প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়েছিল প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক কিছুতেই ঐ অভিযোগ মানতে রাজি নন। জবাব দিতে গিয়ে নান্নু উল্টো প্রশ্ন করে বসলেন, সবার আগে দেখতে হবে আমরা কাকে কখন কিভাবে বাদ দিচ্ছি? প্রথম কথা হলো আমরা কোন প্রতিষ্ঠিত পারফরমারকে বাদ দেইনি, দেই না, দিচ্ছিও না। দলে যাদের অবস্থান এখনও নিশ্চিত নয়, যারা পারফরম করে নিজেদের অপরিহার্যতার প্রমাণ রাখতে পারেনি, তাদেরই কেবল বাদ দেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে আমরা তাদের বিকল্প পারফরমার খুঁজে ফিরছি। তাদের বদলে এইচপি থেকে কিছু তরুণদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। সেটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের কাজই হলো ১১ পজিসনে সম্ভাব্য সেরা ও ইনফর্ম ক্রিকেটার খুঁজে বের করে দলে রাখা। এখন কোনো পজিসনে যদি কেউ নিজের অবস্থান পাকা করতে না পারে, কারো পারফরমেন্স যদি আপটু দ্যা মার্ক না হয়, তখন নতুন বিকল্পের সন্ধানে অন্য কাউকে সুযোগ দিতেই হচ্ছে। আমি ভেবে পাই না এর মধ্যে দোষের কী আছে? প্রধান নির্বাচকের প্রশ্ন, আচ্ছা, দেখেন তো আমরা কি মুশফিকুর রহিমের মত প্রতিষ্ঠিত পারফরমারকে বাদ বা বিশ্রাম দিয়েছি? একটু ভাল মত করে লক্ষ্য করুন, তামিম নেই আমরা লিটন দাস, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক, সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজসহ বেশ কজনকে নিয়মিতই খেলাচ্ছি। তাদের বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমরা তাদের বাইরে নিয়ে কোন নতুন বিকল্পও খুঁজছি না। আমরা তাকেই বাদ দিচ্ছি, যার দলে অবস্থান নিশ্চিত নয়। যে বা যারা এখনও ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে জায়গা পাকাপোক্ত করতে পারেনি। নান্নুর শেষ কথা, যাদের অবস্থান পাকা ও মজবুত- এমন কাউকে আমরা বাদ দেইনি। দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমরা সেই সব হাতে গোনা কয়েকটি পজিসনে কিছু ক্রিকেটারের বিকল্প খুঁজে বেড়াচ্ছি, যাদের পারফরমেন্সে ধারাবাহিকতা কম। কাজেই ঘন ঘন রদবদলে ধোয়া তোলার অভিযোগটা আমার মনে হয় ভিত্তিহীন। কিছু পারফরমারের ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচকের যুক্তি খেটেও যায়। যেমন সৌম্য সরকার। এই বাঁহাতিকে প্রথম দুই ম্যাচ খেলানোর পর বাদ দেয়া হলো। তার আগে আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্টে রান পাননি, দুই ইনিংসে ফিরে গেছেন ১৭ ও ১৫ রান করে। আর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই খেলায় করেছেন মোটে ৪ (৪ ও ০) রান। কাজেই চরম ব্যর্থ সৌম্য সরকারের জায়গায় নেয়া হলো আরেক বাঁহাতি নাজমুলি হোসেন শানস্তকে। সেই নাজমুল হোসেন শান্তও কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। দুই খেলায় তার সংগ্রহ মোটে (১১+৫) ১৬। মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বির রহমানের অকার্যকরিতা বা ফর্মহীনতায় দেড় বছর পর নেয়া হয়েছে তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। এ ২০ বছরের সাহসী ও উচ্ছল যুবা প্রথম দিন (১৩ সেপ্টেম্বর) শেরে বাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫২ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে প্রতিশ্রুতির ছাপ রাখলেও পরের তিন ম্যাচে (১৬+৭+২) একদমই রান পাননি। একই অবস্থা সাব্বির রহমান রুম্মনেরও। তার ব্যাট হাসছে না একদমই। আক্রমণাত্মক উইলোবাজির চিহ্নমাত্র নেই। নিজেকে কোথায় হারিয়ে ফেলা সাব্বির বাহারি স্ট্রোক প্লে আর বিগ হিট বহুদূরে, উইকেটে দাঁড়াতেই পারছেন না। স্বল্প সময় ও সংগ্রহে ফিরে যাচ্ছেন সাজঘরে। এবারের তিন জাতি আসরে তিন ম্যাচ খেলা সাব্বিরের সংগ্রহ সাকুল্যে (১৫+২৪+১) ৪০ রান। কাজেই বলেই দেয়া যায় সৌম্য, শান্ত, সাব্বির এমনকি লিটন দাসের (লিটন দাস ১৯+০+৩৮+৪=৬১) ওপরও সন্তুষ্ট নন নির্বাচকরা। সৌম্যকে জাতীয় দল থেকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এ দলে। শান্তও হয়ত আবার ফিরে যেতে হবে এইচপি, ইমার্জিং না হয় এ দলে। এখন সাব্বির রহমান আর লিটন দাসকেও কি ঐ পথে হাঁটতে হয় কি-না সেটাই দেখার। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/২২ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2LHT8X3
September 22, 2019 at 09:38AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশ
07 Oct 20200টিঢাকা, ০৭ অক্টোবর- শ্রীলংকা সফর না হওয়ায় ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দেশের মূল ক্...আরও পড়ুন »
বার্তামেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট!
07 Oct 20200টিবার্সেলোনার বোর্ড নির্বাচন আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওই সময়ই ঠিক হওয়ার কথা জোসেপ মারিও বার্তা...আরও পড়ুন »
বেতন কাটা নিয়ে বার্সার আলোচনা শুরু
07 Oct 20200টিকরোনার কারণে গত মার্চ থেকে কমাস ফুটবল বন্ধ ছিল। এ সময় বড় ক্লাবসহ বিশ্বের অধিকাংশ ক্লাবই ফুটবলারদের ব...আরও পড়ুন »
অস্ট্রেলিয়া-ভারত গোলাপি বলের টেস্ট চূড়ান্ত
07 Oct 20200টিক্যানবেরা, ০৭ অক্টোবর- এ বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চার টেস্টের সিরিজ দিবারাত্রির ম্যাচ দিয়...আরও পড়ুন »
নারীর প্রতি মনোভাব বদলের ডাক মাশরাফীর
07 Oct 20200টিঢাকা, ৭ অক্টোবর- উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতার হার। সিলেটে এমসি কলেজসহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.