কলকাতা, ২৩ সেপ্টেম্বর- আসাম রাজ্যের পর পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিক তালিকা (এনআরসি) করার হুমকি দিচ্ছেন ক্ষতাসীন দল বিজেপি নেতারা। এ অবস্থায় এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যে আরো দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এই আতঙ্কে ওই রাজ্যে মোটি আটজন প্রাণ হারালেন। স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যম জানায়, এনআরসি আতঙ্কে রবিবার ভোররাতে গাছের ডাল ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাজ্যের বসিরহাটের বাসিন্দা কামাল হোসেন মণ্ডল (৩২)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটভাটার শ্রমিক কামাল স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে বসিরহাটের সোলাদানায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে এনআরসি-র কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রোববার ভোররাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাছের একটি আম গাছের ডালে গলায় দড়ি দেন তিনি। খবর পেয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। মৃত কামালের বড় ভাই আবুল হোসেন মণ্ডল বলেন, আমাদের বাবার নাম এক এক জায়গায় এক এক রকম করা রয়েছে। গত কয়েক দিন দৌড়াদৌড়ি করে সে সব কাগজ ঠিক করার চেষ্টা করছিল ভাই। সমস্ত নথি খুঁজে না পাওয়ায় ভাই প্রায়ই বলত, আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও পথ নেই। শেষে তিনি আত্মহত্যার পথই বেছে নেন। এর আগে শনিবার রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শাসন থানার চকআমিনপুরের বাসিন্দা আয়েপ আলি (৫৫)। বাড়ির লোকেরা বলছে, ১৯৭১ সালের আগের কাগজপত্র না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ফলে এই আতঙ্ক থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এর আগে একই ঘটনায় মঙ্গলবার ও শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণার, জলপাইগুড়িসহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় এক নারীসহ চারজন মারা গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে দুইজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এবং বাকিরা আত্মঘাতী হয়ে মারা যান বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে। গত কয়েকদিনে সব মিলিয়ে এ রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মোট আটজন প্রাণ হারালেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতারা পশ্চিবঙ্গে এনআরসি হবেই বলে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে চলেছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জোর দিয়ে বলেন, আসাম স্টাইলে পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে। এতে প্রায় দুকোটি মানুষ বাদ যাবে। এর মাত্র একদিন আগে কলকাতা সফরের সময় ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবেইবলে হুমকি দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতা ও মন্ত্রীদের এসব হুমকি ধামকির কারণে এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। যার ফলে শুক্রবার মারা গেলেন ওই বৃদ্ধা। প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট আসামের বহুল আলোচিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়। নতুন এই তালিকায় ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছেন। আর বাদ পড়েছেন ১৯ লাখের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এ নিয়ে আতঙ্কিত তালিকার বাইরে থাকা মানুষেরা। আর/০৮:১৪/২৩ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2V88Spm
September 23, 2019 at 06:40AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন