মুম্বাই, ২৬ নভেম্বর - বাবা ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা-প্রযোজক-পরিচালক এমন একটা পরিবারে যার জন্ম তার রক্তে যে অভিনয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাইতো নিজের সময়ে পেয়েছিলেন সেরা নায়িকার তকমা। তারপরেও কেন সারাজীবন একা থেকে ছিলেন নন্দা? কেন বেছে নেননি জীবনসঙ্গীনী? সেটাই জানাব আজ। ১৯৩৯ সালের ৮ জানুয়ারি নন্দার জন্ম। তার বাবা বিনায়ক দামোদর কর্নাটকী বা মাস্টার বিনায়ক ছিলেন মারাঠি বিনোদন দুনিয়ায় পরিচিত নাম। ১৯৪৭ সালে মাত্র ৪১ বছর বয়সে তিনি যখন মারা যান, নন্দার বয়স তখন মাত্র আট বছর।সংসারের হাল ধরতে সিনেমায় অভিনয় শুরু নন্দার। শিশুশিল্পী নন্দার প্রথম ছবি মন্দির মুক্তি পায় ১৯৪৮ সালে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ অবধি বেবি নন্দার বেশ কিছু ছবি মুক্তি পায়। অভিনয়ের জন্য নন্দার স্কুলজীবন মুখ থুবড়ে পড়ে। বাড়িতে নামী শিক্ষকরা আসতেন নন্দাকে পড়াতে। তিনি বেশিদিন স্কুলে যেতে না পারলেও তার উপার্জনে ছয় ভাইবোনের পড়াশোনা চলেছিল। পরিচালক ভি শান্তারাম ছিলেন নন্দার আত্মীয়। তিনি নন্দাকে সুযোগ দেন তুফান আউর দিয়া ছবিতে। ১৯৫৬ সালের ট্র্যাজিক এই ছবিতে ১৭ বছরের নন্দার অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।হাম দোনো, কানুন, আঁচল, কালা বাজার, কানুন, উসনে কাহা থা, নর্তকী, আজ আউর কাল, গুমনাম-এর মতো ছবি তাকে ইন্ডাস্ট্রিতে নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে। নবাগতদের পাঁশে দাঁড়াতেন নন্দা। একটা সময়, শশী কাপুরের সঙ্গে অভিনয় করতে রাজি হতেন না নায়িকারা। নন্দা এগিয়ে এসেছিলেন তার বিপরীতে নায়িকা হতে। প্রথম দুটি ছবি সফল না হলেও পরের ছবিগুলোতে তাদের অনস্ত্রিন রসায়ন বাজিমাত করে। শশী কাপুর-নন্দা জুটির সুপারহিট ছবি হল যাব যাব ফুল খিলে। পরবর্তী সময়ে রাজেশ খান্না, ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্রকেও ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি পেতে সাহায্য করেন নন্দা। মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি নায়া নাশা-র মতো ছবিও করেছেন তিনি। সমালোচকদের প্রশংসা পেলেও বক্সঅফিসে সে ছবি সফল হয়নি।সত্তরের দশকের শুরু থেকে নন্দার ক্যারিয়ারে ভাটার টান। তুলনায় বয়সে ছোট নবীন নিশ্চল, পরীক্ষিত সহানি, বিনোদ মেহরার মতো নায়কদের সঙ্গে তার জুটি পর্দায় সফল হয়নি। ১৯৮২ সালের পর থেকে নন্দা অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।ফিরে আসেন বেশ কয়েক বছরের ব্যবধানে। তখন পরপর তার তিনটি ছবি সফল হয়। আহিস্তা আহিস্তা, মজদুর এবং প্রেমরোগ। নিজের সেরা সময়ে নন্দা ছিলেন অন্যতম দামি তারকা। পারিশ্রমিকের দিক দিয়ে টেক্কা দিতেন নূতন, ওয়াহিদা রহমান, সাধনাকেও। ধুল কা ফুল, দুলহান, ভাবি, শোর, পরিণীতা, প্রেমরোগ-এর মতো ছবিতে তার পারিশ্রমিক ছিল তখনকার সময়ের অনুপাতে আকাশছোঁয়া।নন্দার গুণমুগ্ধের অভাব ছিল না। পরিজনরাও এনে দিয়েছেন পাত্রের সন্ধান। কিন্তু নন্দাকে বিয়ের জন্য রাজি করানো যায়নি। বান্ধবী ওয়াহিদার উৎসাহে জীবনের সায়াহ্নে সম্পর্ক তৈরি হয় পরিচালক মনমোহন দেশাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু সেই সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ার আগেই মুম্বাইয়ে নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মারা যান মনমোহন। তার কয়েক মাস আগেই মারা গিয়েছিলেন তার স্ত্রী জীবনপ্রভা। এরপর আর বিয়ে করেননি নন্দা। জড়িয়ে পড়েননি কোনও সম্পর্কেও। মুম্বাইয়ের ভারসোবায় নিজের ফ্ল্যাটে প্রয়াত হন ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ। অভিনয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ওয়াহিদা রহমান, সায়রা বানু, আশা পারেখ, হেলেন, সাধনা, নার্গিস, মালা সিংহের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল অমলিন। এন এইচ, ২৬ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2KS5riK
November 26, 2019 at 07:27AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন