ইন্দোর, ১৫ নভেম্বর - খেলছেন ক্যারিয়ারের মাত্র অষ্টম টেস্ট, ব্যাট করছেন ১২তম ইনিংসে। এরই মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো পেরুলেন ১৫০ রানের মাইলফলক। আর এবারের দেড় শতাধিক রানের ইনিংসটিতে আবার একাই ছাড়িয়ে গেছেন বাংলাদেশের পুরো প্রথম ইনিংসকে। এগিয়ে যাচ্ছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির দিকে। ভারতীয় তারকা ওপেনার রোহিত শর্মা ব্যর্থ হলেও, আরেক উদীয়মান তারকা মায়াঙ্ক আগরওয়াল ঠিকই খেলছেন সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে। ইনিংসের ৩২ রানের মাথায় জীবন পেয়ে, সেটিকে কাজে লাগাচ্ছেন পুরো দমে। দ্বিতীয় দিনের চা পানের বিরতি পর্যন্ত অবস্থা দাঁড়িয়েছে, আগরওয়াল একাই টপকে গেছেন বাংলাদেশের রান। তিনি একাই এখন আছেন ৬ রানের লিডে। আর দলীয়ভাবে ভারতের অবস্থান ৩ উইকেটে ৩০৩ রান। লিড দাঁড়িয়েছে ১৫৩ রানের। আগরওয়াল অপরাজিত ১৫৬ রানে, ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা আজিঙ্কা রাহানে খেলছেন ৮২ রান নিয়ে। অথচ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাসের এক জোড়া উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু এরপর আর সেই চাপ ধরে রাখতে পারেননি অন্য বোলাররা। যার ফলে জুটি গড়ে ভারতকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল ও অজিঙ্কা রাহানে। প্রথম দিনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আজও ক্যাচ পড়েছে একটি। তবে ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর নৈপুণ্যে দিনের শুরুটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ফিফটি করা চেতেশ্বর পুজারা এবং পরে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন সিলেটের এ পেসার। এর মধ্যে কোহলিকে কোনো রানই করতে দেননি রাহী। তিন বল খেলে শূন্য রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ভারতীয় অধিনায়ক। দিনের প্রথম সাফল্যটা প্রথম ওভারেই পেয়ে যেতে পারতেন রাহী। ব্যক্তিগত অর্ধশতকের অপেক্ষায় থাকা পুজারা অফস্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি সজোরে কাট করলে, তা ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় থার্ড স্লিপের কাছে। কিন্তু বলের গতি এত বেশি ছিলো যে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি থার্ড স্লিপে দাঁড়ানো মেহেদি হাসান মিরাজ। তার রিয়্যাকশন টাইম খুব ধীর হওয়ায় এবং একইসঙ্গে বল থেকে চোখ সরিয়ে নেয়ার ফলে আঙুলে লেগে বলটি চলে যায় সীমানায়। পরের বলে একই অঞ্চল দিয়ে চার মেরে নিজের ফিফটি পূরণ করেন পুজারা। আর ক্যাচ ছুটে যাওয়া বলটি এত জোরেই আঘাত হানে মিরাজের আঙুলে যে, প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। বদলি ফিল্ডার হিসেবে নামানো হয় সাইফ হাসানকে। তার হাতেই আসে দিনের প্রথম সাফল্যটা। দ্বিতীয় দিনে নিজের প্রথম ওভারে অল্পের জন্য মিস হলেও, দ্বিতীয় ওভারে ঠিকই উইকেট তুলে নেন রাহী। ব্যাটসম্যান ছিলেন সেই পুজারাই। এবার তিনি সপাটে ড্রাইভ করতে যান। কিন্তু ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় ওয়াইডিশ ফোর্থ স্লিপে দাঁড়ানো সাইফ হাসানের হাতে। যিনি নেমেছিলেন ক্যাচ ছেড়ে ব্যথা পেয়ে মিরাজের বদলি হিসেবে। শুধু পুজারাকে ফিরিয়েই থেমে থাকেননি রাহী। নিজের পরের ওভারেই তুলে নিয়েছেন ভারতের সবচেয়ে বড় উইকেটটি। শুরুতে উইকেটের গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য রক্ষণাত্মক ভঙিতে খেলার দিকেই মন দেন কোহলি। দুই বল খেলেন সাবধানে। কিন্তু রক্ষা পাননি মুখোমুখি তৃতীয় বলে। রাহীর করা শার্প ইনসুইং ডেলিভারিটি ঠিকঠাক জাজ করতে পারেননি কোহলি। সময়মতো ব্যাট নামিয়ে ডিফেন্স করেন তিনি। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পেছনের পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। উইকেটরক্ষক লিটন দাসের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নিতে সময় নষ্ট করেননি অধিনায়ক মুমিনুল। রিপ্লেতে দেখা যায় বল আঘাত হানত মিডল-লেগ স্টাম্পে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির। কোহলির টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি দশম ডাক। এছাড়া ঘরের মাঠে মাত্র তৃতীয়বারের মতো শূন্য রানে ফিরলেন তিনি। আগের দিন ১ উইকেটে ৮৬ রান করা ভারত হুট করেই পরিণত হয় ৩ উইকেটে ১১৯ রানের দলে। তবে এরপর আর চাপ আসতে দেননি আগারওয়াল ও রাহানে। কোহলি ফেরার আগেই নিজের অর্ধশতক তুলে নেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত রাহানের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে যোগ করেন ৬৯ রান। ইনিংসের ৩৫তম রান নেয়ার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪০০০ রান পূরণ হয় রাহানের। এরপর তিনিও তুলে নেন অর্ধশতক, খেলতে থাকেন উইকেটের চারপাশে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে। আগরওয়াল সেঞ্চুরিতে পৌঁছার আগে অবশ্য একবার তাকে আউট করেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আম্পায়ার মারাইস এরাসমান তার বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের সিদ্ধান্ত জানান। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান আগরওয়াল। এরপর আরামে খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। এখনও পর্যন্ত চতুর্থ উইকেট জুটিতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা খেলে ১৮৪ রান যোগ করে ফেলেছেন আগরওয়াল ও রাহানে। শুধুমাত্র এই জুটিও বাংলাদেশের করা রানের চেয়ে এগিয়ে ৩৪ রানে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৫ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/32NJyqY
November 15, 2019 at 10:13AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top