কলকাতা, ২১ নভেম্বর - এর আগেও বেশ কয়েকবার দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলার প্রস্তাব পেয়েছিল ভারত। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলকেও দেয়া হয়েছিল এমন প্রস্তাব। কিন্তু কারও ডাকেই সাড়া দেয়নি ভারত-বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু মাসখানেক আগে সৌরভ গাঙ্গুলি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি হওয়ার পরই বদলে গেছে সবকিছু। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়া হয় ভারতের পক্ষ থেকে; খুব বেশি দিন অনুশীলনের সময় পাবে না জেনেও, তাতে রাজি হয়ে যায় বাংলাদেশ। যার ধারাবাহিকতায় আগামীকাল (শুক্রবার) কলকাতার ঐতিহাসি ইডেন গার্ডেনসে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত ও বাংলাদেশ। আর এ ম্যাচটিকে আরও জমকালো, স্মরণীয় করে রাখতে নানান আয়োজন করছে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এরই মধ্যে পুরো কলকাতাকে গোলাপি রঙে সাজিয়ে তুলেছে সিএবি। দিবারাত্রির টেস্টের গোলাপি বলের জন্যই করা হয়েছে এমন আয়োজন। শুধু তাই নয়, ম্যাচ চলাকালীন ইডেন গার্ডেনসের গ্যালারিগুলোতেও থাকবে গোলাপির ছোঁয়া। যেখানে গলা ফাঁটাবে অন্তত ৬০-৬৫ হাজার দর্শক। স্বাভাবিকভাবেই স্বাগতিক দেশ হিসেবে ইডেনের দিবারাত্রি টেস্টে আধিক্য থাকবে ভারতীয় দর্শকদের। তবে কম যাবে না বাংলাদেশের দর্শকরাও। ইডেনের গোলাপি রাজ্যে লাল-সবুজের ঢেউ তুলতে অন্তত ৬-৭ হাজার বাংলাদেশি দর্শক এখন পাড়ি জমিয়েছেন কলকাতায়। যাদের মধ্যে ৫ হাজার দর্শক পেয়ে গেছেন ইডেনে বসে সরাসরি খেলা দেখার টিকিট নামক সোনার হরিণ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন টেস্টের প্রথম চারদিনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। যা দেখে আয়োজকদের মনে এসেছে স্বস্তি। এখনও টিকিটের জন্য ইডেনের গেটের বাইরে দেখা যায় মানুষের ভিড়। যার ফায়দা নিয়ে ৩৫০ রুপির টিকিট ৫০০ রুপিতে ব্ল্যাকে বিক্রির চেষ্টাও করছেন অনেকে। তবে এদেরই ভিড়ে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর জন্য এরই মধ্যে ৫ হাজার বাংলাদেশি দর্শক নিশ্চিত করেছেন নিজেদের টিকিট। যাদের মধ্যে অন্যতম জিসান হাসিব, যিনি ৮০র দশকে খেলেছেন সিলেট বিভাগের হয়ে খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে। ইডেনে দিবারাত্রির টেস্টের টিকিট পেয়ে রোমাঞ্চিত তিনি। এর আগে কখনো বিদেশের মাটিতে বসে দেখেননি বাংলাদেশের ম্যাচ। তবে হাসিবের স্মৃতিতে এখনও অমলিন ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের কথা। সেটি যেমন ছিলো টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ, তেমনি ইডেনের ম্যাচটিও দিবারাত্রির টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। এ দুই প্রথমের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন হাসিব। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, আমি ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি মাঠে বসে দেখেছি। এবার কলকাতায় বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলবে। আমি মনে করি এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং সেই ইতিহাসের অংশ হতেই এসেছি। তবে আমি শুধু প্রথম দুই দিনের খেলা দেখবো। এরপর ঢাকায় ফিরে যাবো নিজের কর্মক্ষেত্রে। হাসিবের মতোই বাংলাদেশ থেকে ইতিহাসের অংশ হতে কলকাতায় পা রেখেছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম পরিচিত মুখ বুলু দাস। যার প্রাতিষ্ঠানিক পদবী হয়তো বড় কিছু নয়। তবে খেলোয়াড় এবং সংবাদকর্মীদের সেবা-যত্ন করার ক্ষেত্রে তার জুরি মেলা ভার। অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অবৈতনিক কর্মচারী হিসেবে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামসহ দেশের প্রায় সব মাঠেই খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সংবাদকর্মী বিশেষ করে আলোকচিত্রীদের চা খাওয়ানোর কাজটি করে আসছেন বুলু। তার নিজের ভাষ্যমতে, ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি তার চায়ের বিশেষ ভক্ত। সেই বুলু দাও এবার চলে গিয়েছেন কলকাতায়, জানিয়েছেন তিনিও হতে চান ইতিহাসের অংশ। বুলুর ভাষ্যে, আমি এখানে ইতিহাস দেখবো। আমি বাসে করে এসেছি। বেনাপোল বর্ডার দিয়ে আসতে ৯ ঘণ্টা লেগেছে। নিউমার্কেটের কাছে একটি হোটেলে থাকছি। সেখানেই আমার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। তবে বুলু দাস শুধুমাত্র খেলা দেখার উদ্দেশ্যেই যে গিয়েছেন, তা নয়। তিনি ভাবছেন দেখা করে আসবেন কলকাতার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গেও। কড়া নিরাপত্তার কারণে কাজটি বেশ কঠিন হলেও, বুলুর জন্য এটা সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। কেননা তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ঢাকায় লিওনেল মেসির সঙ্গে পর্যন্ত ছবি তুলেছে স্বগর্বে। এদিকে হাসিব-বুলুদের মতো আরও অনেক বাংলাদেশি দর্শকই কলকাতায় গিয়েছেন ইতিহাসের অংশ হতে। যাদের মধ্যে অন্যতম দেশের ক্রিকেটের নিবন্ধিত সমর্থকগোষ্ঠি বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)। বরাবরের মতো এবারেও কলকাতার গোলাপি রাজ্যে আরও অনেক বাংলাদেশি দর্শকদের সঙ্গে লাল-সবুজের ঢেউ তুলবেন বিসিএসএর সদস্যরা। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২১ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2O41N7r
November 21, 2019 at 06:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন