ইন্দোর, ১৮ নভেম্বর - পুরো দলই খারাপ খেলেছে। বিশেষ করে ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি একটি টেস্ট দল খেলছে। যে দলটি ১৯ বছর ধরে টেস্ট ভুবনে আছে। যাদের সবাই না হলেও ব্যাটসম্যানদের অন্তত তিন চারজন বেশ অভিজ্ঞ, গড়পড়তা ৩০টির বেশি টেস্টও খেলে ফেলেছেন। কিন্তু তাদের কারো টেকনিক, অ্যাপ্রোচ আর অ্যাপ্লিকেশন দেখে তা মনে হয়নি। কম বেশি সবার টেকনিকে গলদ। দীর্ঘ পরিসরের খেলার সত্যিকার ব্যাটিংশৈলীটাই নেই। বেশিরভাগেরই ফুটওয়ার্কে সমস্যা। একটা গুডলেন্থ ডেলিভারিকে যে বাঁ পা (বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য ডান পা) সামনে নিয়ে বলের ঠিক পিছনে শরীর পা ও ব্যাট নিয়ে খেলা ছাড়া মাঝ ব্যাটে করতে পারা কঠিন-সে সত্য উপলব্ধিটাই কম। আর থাকলেও ব্যাকরণ মেনে শুদ্ধ গাণিতিক ব্যাটিংয়ের সামর্থ্যেই ঘাটতি। এর সাথে ধৈর্য্য ধরে উইকেটে থাকার ইচ্ছেও কম। সেই ঘাটতি আর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ভারতের সাথে ইন্দোরে প্রথম টেস্টে চরমভাবে ফুটে উঠেছে। যেখানে ভাল বলগুলোকে সমীহ দেখিয়ে ব্যাকরণ সম্মত ডিফেন্স করা, অফস্টাম্পের আশপাশের ডেলিভারিগুলোর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে তার শেষ গতিপ্রকৃতি অনুসরণ করে অতি সাবধানে ছেড়ে দেয়ার কাজটি করতে গিয়েই বারবার ভুল করেছেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। আর শর্ট অফলেন্হের ডেলিভারির বিপক্ষে সাহস ও প্রত্যয় নিয়ে হুক-পুল খেলা, না হয় দেখে বসে ছেড়ে দেয়ার কাজগুলো দক্ষতার সাথে করতে পারেননি। দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস আর সাদমান ইসলাম প্রথম টেস্টে উভয় ইনিংসে খুব বাজেভাবে আউট হয়েছেন। যা চোখে লেগেছে। শুধু ইমরুল-সাদমানই নন। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস আর মোহাম্মদ মিঠুনরা হেঁটেছেন ভুল পথে। মুশফিকুর রহীম ছাড়া প্রায় সবাই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বোলাররা সাফল্যের সাথে উৎড়ে না গেলেও ব্যাটসম্যানদের চেয়ে ভুল করেছেন কম। পেসার আবু জায়েদ রাহীতো বেশ ভাল বল করেছেন। ফিল্ডারদের সাহায্য- সহযোগিতা পেলে হয়তো ৫ উইকেট শিকারিও হতে পারতেন। তারপরও ৪ উইকেট জমা পড়েছে তার ঝুলিতে। অফস্টাম্প ও তার আশপাশে ভাল জায়গায় বল ফেলে বেশ সমীহ আদায় করেছেন এই পেসার। বাকিরা তার মত অত ভাল করতে না পারলেও একদম চরমভাবে ব্যর্থ হননি। তাই বোলিং নিয়ে সে অর্থে সমালোচনা কম। যত কথা ব্যাটিং নিয়েই। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে গোলাপি বলের টেস্টের আগে ব্যাটিং লাইন নিয়ে চিন্তা-উদ্বেগও তাই অনেক বেশি। ভক্ত ও সমর্থকদের কৌতুহলী জিজ্ঞাসা, ব্যাটিং লাইন আপে কি পরিবর্তন আসছে? উদ্বোধনী জুটি কি ঠিক থাকবে? পর পর দুই ইনিংসে বাজেভাবে আউট হওয়া ইমরুল কায়েস কি কলকাতা টেস্টেও দলে থাকবেন? শুধু ভক্ত ও সমর্থকদের কথা বলা কেন? জানা গেছে, টিম ম্যানেজমেন্টও ইমরুলের অ্যাপ্রোচ-অ্যাপ্লিকেশনে মোটেই সন্তুষ্ট নয়। বরং অসন্তুষ্ট। তারপরও এ বাঁহাতি ওপেনারকে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকরা দোটানায়। তারা একবার ভাবছেন, ইমরুলকে ড্রপ করে তরুণ সাইফ হাসানকে সুযোগ দিতে। পরক্ষনেই মনে হচ্ছে, ইমরুল অভিজ্ঞ ওপেনার। অতীতে ভাল খেলার রেকর্ডও আছে। তাই এবার ভারতের বিপক্ষে এক টেস্ট দেখেই তাকে বাদ দেয়ার আগে থমকে দাঁড়াচ্ছেন। ইমরুলকে বাদ দেয়া মানেই একদম আনকোরা নবীন সাইফকে গোলাপি বলে ভারতের ধারালো বোলিংয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়া। সেটা কি ঠিক হবে? একজন সম্ভাবনাময় তরুণ, যিনি এইচপি- ইমার্জিং ও এ দলের হয়ে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছেন। এবারের জাতীয় লিগেও যার ব্যাটে রানের ফলগুধারা। এমন এক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণকে এমন কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলে দেয়ার আগে ভাবছেন নির্বাচকরা। কলকাতা টেস্টে আদৌ কোন পরিবর্তন ঘটবে কি? ওপেনার ইমরুলকে বাদ দিয়ে সাইফকে খেলানোর কথা মাথায় আসছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, আসলে দলে পরিবর্তন আনা হবে কিনা, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। কোচ, ক্যাপ্টেন ও আমরা বসে ঠিক করবো। এ নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে। নানা পর্যালোচনার পর বলতে পারবো। আর ইমরুল না সাইফ? এ চিন্তা আমাদের মাথায়ও আছে। যদি রদবদল হয়, তবে ঐ একটিই পরিবর্তন ঘটবে। না হয় প্রথম টেস্টের একাদশই ঠিক থাকবে। উল্লেখ্য, বিপিএল প্লেয়ার্স ড্রাফটে অংশ নিতে ভারত থেকে ঢাকা এসেছেন প্রধান নির্বাচক। ফিরে যাবেন ২০ নভেম্বর। ২২ নভেম্বর থেকে ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু। প্রধান নির্বাচক মুখে একটি মাত্র পরিবর্তনের কথা বললেও দলে আরও একটি পরিবর্তনের কথা শোনা যাচ্ছে। ভেতরের খবর, শেষ মুহূর্তে পেসার ইবাদত হোসেনকে বাদ দিয়ে আল আমিন হোসেন কিংবা মোস্তাফিজর রহমানের কাউকে খেলানো হতে পারে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৮ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NXOlSH
November 18, 2019 at 10:16AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন