ইন্দোর, ১৫ নভেম্বর - টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয়ে গেলে, সবার আগে মনের মধ্যে উঁকি দেয় ইনিংস ব্যবধানে হেরে যাওয়ার আশঙ্কা ও ভয়। আর পর বল হাতে নেমে যদি প্রতিপক্ষকে অল্পে না বাধা যায়, তাহলে সেই ভয় হয় আরও গভীর। ভারতের বিপক্ষে ইন্দোর টেস্টেও একটু একটু করে সেদিকেই যাচ্ছে বাংলাদেশ। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সেঞ্চুরি ও আজিঙ্কা রাহানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বড় লিডের পথে এগুচ্ছে ভারত। তাদের ছুড়ে দেয়া লিড পার করে তবেই দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে ব্যাটিংয়ে নামাতে হবে বাংলাদেশের। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭১ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৫০ রান। লিড দাঁড়িয়েছে ঠিক ১০০ রানের। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করে ১২৯ রানে অপরাজিত আগারওয়াল। রাহানে খেলছেন ৫৭ রান নিয়ে। অথচ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাসের এক জোড়া উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু এরপর আর সেই চাপ ধরে রাখতে পারেননি অন্য বোলাররা। যার ফলে জুটি গড়ে ভারতকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও অজিঙ্কা রাহানে। প্রথম দিনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আজও ক্যাচ পড়েছে একটি। তবে ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর নৈপুণ্যে দিনের শুরুটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ফিফটি করা চেতেশ্বর পুজারা এবং পরে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন সিলেটের এ পেসার। এর মধ্যে কোহলিকে কোনো রানই করতে দেননি রাহী। তিন বল খেলে শূন্য রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ভারতীয় অধিনায়ক। দিনের প্রথম সাফল্যটা প্রথম ওভারেই পেয়ে যেতে পারতেন রাহী। ব্যক্তিগত অর্ধশতকের অপেক্ষায় থাকা পুজারা অফস্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি সজোরে কাট করলে, তা ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় থার্ড স্লিপের কাছে। কিন্তু বলের গতি এত বেশি ছিলো যে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি থার্ড স্লিপে দাঁড়ানো মেহেদি হাসান মিরাজ। তার রিয়্যাকশন টাইম খুব ধীর হওয়ায় এবং একইসঙ্গে বল থেকে চোখ সরিয়ে নেয়ার ফলে আঙুলে লেগে বলটি চলে যায় সীমানায়। পরের বলে একই অঞ্চল দিয়ে চার মেরে নিজের ফিফটি পূরণ করেন পুজারা। আর ক্যাচ ছুটে যাওয়া বলটি এত জোরেই আঘাত হানে মিরাজের আঙুলে যে, প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। বদলি ফিল্ডার হিসেবে নামানো হয় সাইফ হাসানকে। তার হাতেই আসে দিনের প্রথম সাফল্যটা। দ্বিতীয় দিনে নিজের প্রথম ওভারে অল্পের জন্য মিস হলেও, দ্বিতীয় ওভারে ঠিকই উইকেট তুলে নেন রাহী। ব্যাটসম্যান ছিলেন সেই পুজারাই। এবার তিনি সপাটে ড্রাইভ করতে যান। কিন্তু ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় ওয়াইডিশ ফোর্থ স্লিপে দাঁড়ানো সাইফ হাসানের হাতে। যিনি নেমেছিলেন ক্যাচ ছেড়ে ব্যথা পেয়ে মিরাজের বদলি হিসেবে। শুধু পুজারাকে ফিরিয়েই থেমে থাকেননি রাহী। নিজের পরের ওভারেই তুলে নিয়েছেন ভারতের সবচেয়ে বড় উইকেটটি। শুরুতে উইকেটের গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য রক্ষণাত্মক ভঙিতে খেলার দিকেই মন দেন কোহলি। দুই বল খেলেন সাবধানে। কিন্তু রক্ষা পাননি মুখোমুখি তৃতীয় বলে। রাহীর করা শার্প ইনসুইং ডেলিভারিটি ঠিকঠাক জাজ করতে পারেননি কোহলি। সময়মতো ব্যাট নামিয়ে ডিফেন্স করেন তিনি। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পেছনের পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। উইকেটরক্ষক লিটন দাসের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নিতে সময় নষ্ট করেননি অধিনায়ক মুমিনুল। রিপ্লেতে দেখা যায় বল আঘাত হানত মিডল-লেগ স্টাম্পে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির। কোহলির টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি দশম ডাক। এছাড়া ঘরের মাঠে মাত্র তৃতীয়বারের মতো শূন্য রানে ফিরলেন তিনি। আগের দিন ১ উইকেটে ৮৬ রান করা ভারত হুট করেই পরিণত হয় ৩ উইকেটে ১১৯ রানের দলে। তবে এরপর আর চাপ আসতে দেননি আগারওয়াল ও রাহানে। কোহলি ফেরার আগেই নিজের অর্ধশতক তুলে নেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত রাহানের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে যোগ করেন ৬৯ রান। ইনিংসের ৩৫তম রান নেয়ার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪০০০ রান পূরণ হয় রাহানের। এখনও পর্যন্ত রাহানে-আগারওয়াল জুটিতে এসেছে ১৩১ রান। এ দুজনের জুটি যতো লম্বা হবে ততোই বাড়বে বাংলাদেশের ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের ভয়। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৫ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2QkMKb2
November 15, 2019 at 09:39AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন