ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর - নাম ঘোষণার পর থেকেই আলোচনায় ছিলো শাপলা মিডিয়ার সিনেমা প্রেম চোর। হঠাৎ করেই প্রযোজক সেলিম খানের ছেলে শান্ত খানকে নায়ক করে এই ছবির ঘোষণা আসে। সেখানে তার নায়িকা হিসেবে কলকাতা থেকে নেয়া হয় অভিনেত্রী নেহা আমান দ্বীপকে। টাকার জোরে ছেলেকে নায়ক বানাতে চাইছেন সেলিম খান এমন সমালোচনায় চাউর হয় চলচ্চিত্রপাড়া। সবার নজর কাড়তে বিদেশি নায়িকার বিপরীতে শান্তকে অভিষিক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েও দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। সেটি গেল ৬ ডিসেম্বর মুক্তিও পেয়েছে দেশের ৫০টির মতো প্রেক্ষাগৃহে। তবে এ ছবির সেল রিপোর্ট লজ্জাজনক। প্রথমদিন থেকেই দর্শক বিমুখ এই সিনেমা। খোঁজ নিতে গিয়ে কোনো হল থেকেই আশা জাগানিয়া কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বলা চলে বছরের শেষদিকে এসে বক্স অফিসে লজ্জাই দিলো প্রেম চোর। বেশ ভালো বাজেটে নির্মিত ছবিটি পরিচালনা করেছেন শাপলা মিডিয়ার ঘরের পরিচালক উত্তম আকাশ। ঢাকার বাইরে প্রেম চোর সিনেমাটি চলছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী মনিহার সিনেমা হলে। হলটির মালিক মিঠু বলেন, সিনেমার গল্প, নতুন নায়ক, বিদেশি নায়িকা এইসব নিয়ে প্রচারণা করা যেত। একটা নতুন জুটি যখন আসে সেটাকে ভালোভাবে প্রেজেন্ট করতে হয়। এ ছবির নির্মাণও ভালো না। এটি চালাতে গিয়ে হতাশ হলাম। একটি শোতে সর্বোচ্চ ১২০ জন দর্শক ছিল। ভাবেন তাহলে কি অবস্থা! আমাদের প্রতিদিন ৪টি শো চলে। সবগুলো শো-ই লসের। ময়মনসিংহ সেনা অডিটোরিয়াম সিনেমা হলেও চলছে প্রেম চোর। সিনেমা হলের ম্যানেজার নাজমুল হক বলেন, প্রথম শো থেকেই চলছে না ছবিটি। দর্শক না থাকায় দ্বিতীয় দিন থেকে আমরা সিনেমাটি চালাচ্ছি না। ছবিটি নিয়ে হতাশার কথা জানা গেল ঢাকার মধুমিতা ও আনন্দ সিনেমা হলেও। প্রথম শো থেকেই ফাঁকা যাচ্ছে। হল কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন হতাশা সাধারণত হয় না। প্রথম দুই একটা দিন প্রায় সব ছবিতেই দর্শক আসেন। কিন্তু এই ছবিটি দেখছেন না। ছবিটির প্রচারণা বলতে তেমন কিছুই হয়নি। ছবি নেই বলে নেহায়েত এটি চালাতে হচ্ছে। ঢাকার জোনাকি, চিত্রামহল, বিজিবি এসব হলেও দর্শকহীন প্রেম চোর। টঙ্গির চম্পাকলি সিনেমা হলটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ সিনেমার জন্য। কমবেশি দর্শক এই হলে আসেন সিনেমা দেখতে। কিন্তু প্রেম চোর এর শো গুলো প্রায় ফাঁকা যাচ্ছে। যারাও বা আসছেন তারা ছবি দেখে বিরক্তি প্রকাশ করছেন এর গল্প, নির্মাণ ও অভিনয়ের দুর্বলতার জন্য। এদিকে সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দাবি, প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো যাচ্ছে প্রেম চোর। ছবির নায়ক শান্ত খানও কিছু গণমাধ্যমে ছবির দর্শক সাড়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে ছবিটি চলচ্চিত্রপাড়ায় হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে প্রযোজক বা সিনেমায় প্রতিষ্ঠিত বাবার অনেক সন্তানই সিনেমায় এসেছেন। তারা কেউ সাফল্য পেয়েছেন, কেউ পাননি। তবে সেলিম খানের পুত্র শান্ত খানের মতো এমন লজ্জাজনক হতাশার অভিষেক জুটেনি কারো ভাগ্যে। আরও পরিকল্পিতভাবে গুছিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হলে এবং এর সঠিক প্রচারণা হলে চিত্রটা এমন হতাশার নাও হতে পারতো বলে দাবি করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, এমনিতেই সিনেমার সংখ্যা কমছে। দর্শক আসছে না হলে। সেখানে প্রেম চোর- এর মতো মানহীন ও ব্যর্থ সিনেমা মুক্তি পেলে সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য হুমকির হয়ে দাঁড়ায়। দর্শকের কাছে দেশের সিনেমা নিয়ে মন্দ বার্তা যায়। অনেকে আবার দাবি করছেন ক্যাসিনো অভিযান শুরু হলে ধরা পড়ার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান। তিনি প্রকাশ্যে থাকলে হয়তো ছেলের প্রথম সিনেমার মুক্তি নিয়ে অনেক আয়োজনই থাকতো। এন এইচ, ১১ ডিসেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2E3s2VM
December 11, 2019 at 10:40AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন